আসিথা ফার্নান্দোর আকাশে ওঠা বল যখন হাত ফসকালেন তানজীম হাসান সাকিব; তখন মেহেদী হাসান মিরাজদের মাথায় হাত! ক্যাচের সঙ্গে ম্যাচ ফসকে যায়নিতো। এমন শঙ্কা অবশ্য এক বলের বেশি রাখতে দেননি তানজীম নিজেই। দারুণ এক ডেলিভারিতে স্ট্যাম্প উপড়ে ফেললেন দুশমন্থ চামিরার!
মিরাজ তখন দুই হাত শূন্যে ছেড়ে বুনো উল্লাসে মত্ত। কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অজেয় শ্রীলঙ্কার পতন। ১৬ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে সিরিজে সমতা। লঙ্কা দুর্গে লঙ্কানদের বিপক্ষে এটি প্রথম জয়। তাই নয় নেতা মিরাজের অধীনেও বাংলাদেশের প্রথম জয় এটি।
শনিবার বিকেল ৩টায় কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ২৪৮ রানে থামে বাংলাদেশ। তাড়া করতে নেমে ২৩২ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।
অথচ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা তানভীর ইসলামের ঘূর্ণি জাদুতে ফাইফারের কীর্তি ছোঁ মেরে নিতে বসেছিলেন জানিথ লিয়ানাগে। তানজীম থেকে শুরু করে হাসান মাহমুদ কিংবা মোস্তাফিজুর রহমান; কাউকেই বাদ দিচ্ছিলেন না। মোস্তাফিজকে ছক্কার পর তারই এক লাফিয়ে ওঠা স্লোয়ার ডেলিভারিতে ক্যাচ তুলে দেন। মোস্তাফিজ নিজেই ধরেন ক্যাচ।
৭৮ রানে লিয়ানাগের পতনের সঙ্গে মূলত ম্যাচের ভাগ্যও লেখা হয়ে যায়। চামিরার সঙ্গে নবম উইকেটে ৫৩ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়ে ম্যাচটাই বের করে নিচ্ছিলেন। পরের জুটি ভাংতে আর বেগ পেতে হয়নি।
আসল কাজটা সেরে দেন তানভীর। ১০ ওভারে মাত্র ৩৯ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। তার হাতে ওঠে ম্যাচে সেরার পুরস্কার। লিয়ানাগে আর কুশল মেন্ডিস ছাড়া কারো ব্যাট কথা বলেনি। কুশলের ব্যাট থেকে আসে ৫৬ রান। ৩৩ রান করেন কামিন্দু মেন্ডিস। এ ছাড়া আর কেউ বিশের বেশি রান করতে পারেননি।
তানজীম নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজ, মিরাজ ও শামীম হোসেন। ৫ ইনিংস পর উইকেটের দেখা পেলেন মিরাজ।
এর আগে ২৪৯ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। এটাও সম্ভব হতো না যদি শেষে এসে তানজীম হাসান সাকিবের ব্যাট থেকে ৩৩ রান না আসতো। দুটি করে ছক্কা-চারে ২১ বলে ৩৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন এই পেসার।
এতে অবশ্য কিছুটা আক্ষেপ ঘুচতে পারে তাওহীদ হৃদয়ের। এক প্রান্তে হৃদয় আগলে রেখে ফিফটি তুলে নেন। দুই রান নিতে গিয়ে তানজীম সাকিবের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রানআউট হন হৃদয়। তাতেই মেজাজ হারিয়ে ব্যাট ছুঁড়ে ফেলেন এই ব্যাটার। তার ব্যাট থেকে আসে ৬৯ বলে ৫১ রান।
শুরুটা অবশ্য বরাবরের মতো ভালো হয়নি। তানজীদ হাসান তামিম ৭ রানে ফেরেন। সেই ধাক্কা সামলে দেন পারভেজ হোসেন ইমন। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা এই তরুণ ওপেনার সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৪ রানে ফিরলে তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গী হন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাটিং অর্ডারে উপরে আসলেও মিরাজের ব্যাট থেকে ৯ রানের বেশি আসেনি।
এরপর হৃদয়ের সঙ্গী হন শামীম পাটোয়ারী। তার ব্যাট থেকে আসে ২২। সুবিধা করতে পারেননি জাকের আলীও। থিতু হয়ে এই ব্যাটার ফেরেন ২৪ রানে। আসিথা ফার্নান্দো সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। ৩ উইকেট নেন হাসারাঙ্গা।
ঢাকা/রিয়াদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য কাতারে প্রতিনিধি দল পাঠাবে ইসরায়েল
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা করার জন্য রোববার কাতারে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার রাতের শেষদিকে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, তিনি আলোচকদের নির্দেশ দিয়েছেন— তারা যাতে মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে।
তবে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের দেওয়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় হামাস যে পরিবর্তনের শর্ত দিয়েছে, সেটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নেতানিয়াহু।
গত শুক্রবার রাতে হামাস জানায়, তারা ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া’ দেখিয়েছে এবং তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
তবে একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানান, হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে এমন কিছু সংশোধন চেয়েছে যার মধ্যে একটি হলো— স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা ব্যর্থ হলেও নিশ্চিত করতে হবে যে, নতুন করে কোনো হামলা হবে না।
গাজার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার ইসরায়েলি হামলা ও গুলিতে অন্তত ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
খান ইউনিস শহরের একটি হাসপাতালের বরাতে জানানো হয়, আল-মাওয়াসি এলাকায় তাঁবুগুলোর ওপর বোমা হামলায় এক চিকিৎসক ও তাঁর তিন সন্তানসহ সাতজন নিহত হন।
এদিকে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের দুই মার্কিন কর্মী খান ইউনিস এলাকায় একটি গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছেন বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার জন্য হামাসকে দায়ী করেছে। যদিও হামাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে ভয়াবহ হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে সেদিন থেকে গাজায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, তখন থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৫৭ হাজার ৩৩৮ জন নিহত হয়েছেন।