আন্দোলন, পরীক্ষা, অবরোধে স্থবির রাজধানী, ভোগান্তি
Published: 7th, July 2025 GMT
বিভিন্ন দাবিতে কয়েকটি আন্দোলন এবং চিকিৎসকদের পরীক্ষার কারণে রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। কিছু এলাকায় যানজট সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন অনেক যাত্রী।
মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসে (বিসিপিএস) চিকিৎসকদের এফসিপিএস পরীক্ষা শুরু হয় গতকাল সকালে। সেই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সকালেই মহাখালীতে প্রায় চার হাজার গাড়ির আগমন ঘটে। দুপুরে পরীক্ষা শেষ হলে আবার এই চার হাজার গাড়ির চলাচল শুরু হয়।
দুপুরে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে মহাখালী এলাকার রাস্তা এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। আবার সেনানিবাসে যান রাষ্ট্রপতি মো.
শাহবাগ এলাকা থেকে যমুনা অভিমুখে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পদযাত্রা শুরু করেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। তাঁরা দুপুর ১২টার দিকে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত যান। এ ছাড়া সড়ক দখল করে সোমবার দুপুরে শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারা পরীক্ষার্থীরা।
এসব কারণে সোমবার দিনভর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট ছিল। সড়ক অবরোধ থাকায় এক এলাকার যানজট আরেক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে অনেকে যানজটের ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন। ‘ট্রাফিক অ্যালার্ট’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে শাহিদা আখতার নামের একজন লেখেন, বাসে করে গুলশান থেকে মহাখালী তিনি দেড় ঘণ্টায়ও পৌঁছাতে পারেননি।
সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে কুর্মিটোলা থেকে বনানী যাওয়ার রাস্তায় যানজটে পড়েন মো. আতাউর। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলে করে উড়ালসড়ক থেকে নামতেই কুর্মিটোলার এমইএস বাসস্ট্যান্ডে আধা ঘণ্টার বেশি সময় যানজটে আটকা থাকেন তিনি। সামনে গিয়ে দেখেন, ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বনানীর দিকে যেতে উড়ালসড়কে ওঠার আগে যানবাহন থামিয়ে রাখছেন।
সাহেলা আক্তার নামের একজন প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার দুপুরে মহাখালী থেকে রিকশায় করে কারওয়ান বাজার আসতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। মূল সড়কে যানজট থাকায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের সড়কেও যাত্রীবাহী বাস চলে আসতে দেখেন তিনি।
রাজধানীর বেইলি রোড এলাকায়ও সোমবার যানজট ছিল। বেসরকারি চাকরিজীবী জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বেলা তিনটার দিকে মোটরসাইকেলে করে শাহবাগ থেকে মালিবাগ এলাকায় যাচ্ছিলেন। বেইলি রোডে এসেই তিনি যানজটে পড়েন। এক জায়গায় ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকেন। উপায় না দেখে বেইলি রোডের কেএফসির কাছে মোটরসাইকেল রেখে হেঁটে মালিবাগের দিকে রওনা দেন তিনি।
মহাখালী ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. দেলোয়ার হোসেন সোমবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মহাখালীর বিসিপিএসে চিকিৎসকদের পরীক্ষার কারণে সোমবার সকাল থেকেই যানজট তৈরি হয়। পরে রাষ্ট্রপতির চলাচল এবং তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল। মহাখালীর যানজট শহরের অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে। সকালে শুরু হওয়া এই যানজট রাত পর্যন্ত গড়ায়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র য নজট পর ক ষ এল ক য় স মব র
এছাড়াও পড়ুন:
শাবনূরের সঙ্গে আমার সিনেমার সংলাপ-গান বাদ দেওয়া হয়েছিল: সোনিয়া
নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সোনিয়া ক্যারিয়ারের শীর্ষ সময়েই পাড়ি জমান বিদেশে। সালমান শাহ থেকে শুরু করে সেই সময়ের শীর্ষ নায়কদের বিপরীতে কাজ করলেও একক নায়িকা হিসেবে খুব একটা শক্ত জায়গা তৈরি করতে পারেননি।
তবে এই ব্যর্থতার কারণ হিসেবে সোনিয়া দাবি করেছেন—তিনি ছিলেন ‘ফিল্ম পলিটিকস’-এর শিকার।
আরো পড়ুন:
ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার পেলেন রায়হান রাফি-আলিমুজ্জামান
কলকাতায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, “সে সময়ে আমার বয়স ছিল কম। আমার সঙ্গে অনেক পলিটিকস করা হয়েছে—যা তখন বুঝতে পারিনি। এখন মনে করলে বুঝি, কতটা প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে আমাকে এগোতে হয়েছিল।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে সোনিয়া বলেন, “নায়করাজ রাজ্জাক স্যারের হাত ধরেই আমি নায়িকা হয়েছি। রিয়াজের প্রথম সিনেমা ছিল আমার সঙ্গে, দ্বিতীয় সিনেমা করেছি ওমর সানী ভাইয়ের সঙ্গে। সেই ধারাবাহিকতায় আমার অবস্থান আরো শক্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা হয়নি। কারণ, নানাভাবে বাধা এসেছে।”
ফিল্ম পলিটিকসের কয়েকটি উদাহরণ টেনে সোনিয়া বলেন, “আমার সাইন করা অনেক সিনেমায় অন্য নায়িকা কাজ করেছেন। চুক্তিবদ্ধ হওয়া সিনেমা থেকেও বাদ পড়েছি। একটা সিনেমার কথা বলি— সেখানে ওমর সানী ও মৌসুমী আপা কাজ করছিলেন। দুই দিন পর আমার শুটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের রাতে জানতে পারি, আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকি শাবনূরের সঙ্গে করা একটি সিনেমা থেকে আমার সংলাপ ও গান বাদ দেওয়া হয়েছিল। আরো একটি সিনেমায় আমাকে নেতিবাচক চরিত্রে দেখানো হয়। তখন এসব বুঝিনি—এখন জানি, একে-ই বলে ফিল্ম পলিটিকস।”
মাত্র দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন সিনেমার প্রস্তাব পান সোনিয়া। তার প্রথম সিনেমা ‘মাস্তান রাজা’। এরপর এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছুদিন বিরতি নিয়ে আবার ফিরেন ‘প্রেম শক্তি’ সিনেমায়। ৩০ জনের মধ্যে অডিশনে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
সোনিয়াকে সর্বশেষ দেখা গেছে ‘বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ’ সিনেমায়। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘শত জনমের প্রেম’, ‘প্রেম প্রতিশোধ’, ‘পরান কোকিলা’, ‘মিথ্যার মৃত্যু’, ‘অজান্তে’, ‘ভয়ংকর সাত দিন’ প্রভৃতি।
নিজের ক্যারিয়ার ফিরে দেখে এখন তিনি বলছেন, “সব কিছুর পরও আমি কৃতজ্ঞ দর্শকদের প্রতি। তারা এখনো আমাকে মনে রেখেছেন—সেটাই সবচেয়ে বড় পুরস্কার।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত