খাগড়াছড়িতে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান
Published: 8th, July 2025 GMT
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসের তীব্র আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে। ইতোমধ্যেই জেলা সদরের শালবন, সবুজবাগ ও কুমিল্লা টিলাসহ কয়েকটি স্থানকে ধস প্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। এসব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থান বা আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে আহ্বান জানানো হয়েছে ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে পাহাড় ধসের শঙ্কাপূর্ণ এলাকাগুলো ঘুরে দেখেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন- খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুজন চন্দ্র রায় এবং রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দল।
জেলা প্রশাসক ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, “প্রাণ আগে, পরে সবকিছু। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে থাকা পরিবারগুলোকে অনুরোধ করছি, বৃষ্টির সময় যেন অবশ্যই নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং থাকার যথাযথ ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা বহাল
তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে। এই অবস্থায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানান জেলা প্রশাসক।
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জি এম কাদেরের আদেশ মানবেন না বিরোধীরা
জি এম কাদেরের আদেশ মানবেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের বিরোধীরা। দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মুজিবুল হক চুন্নু একযোগে বলেছেন– তারা এখনও স্বপদে বহাল।
এই তিন নেতা বলেছেন, মহাসচিব পদে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর নিয়োগ অবৈধ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এই তিন নেতা। আনিসুল ইসলাম বলেন, গত নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রির আড়াই কোটি টাকার হিসাব জি এম কাদের দেননি। দলীয় তহবিলে আসা চাঁদা এবং অনুদানের হিসাবও দেননি। হিসাব চাওয়ায় গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গত চার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে অংশ নেওয়া জাপা গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পায় আগেই। অভ্যুত্থানের নেতারা এখন দলটিকে স্বৈরাচারের দোসর বলছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে চাপে রয়েছে জাপা। নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের পর সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, মহাসচিব মুজিবুল হককে সব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন জি এম কাদের।
আনিসুল ইসলাম বলেছেন, প্রেসিডিয়ামের যে বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা বলে জি এম কাদের মহাসচিবকে অব্যাহতি দিয়েছেন, তা অবৈধ। কোরামও পূরণ হয়নি। গঠনতন্ত্রের ২০/৩(খ) ধারা অনুযায়ী, চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে মহাসচিব প্রেসিডিয়ামের সভা আহ্বান এবং আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করবেন। মহাসচিব চুন্নুর অজ্ঞাতে তথাকথিত সভা হয়েছে। গত মে মাসে জাপার প্রেসিডিয়ামে সিদ্ধান্ত হয়, ২৮ জুন চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র বা কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্মেলন হবে। চেয়ারম্যান পদে আনিসুল ইসলাম এবং মহাসচিব পদে রুহুল আমিন হাওলাদার প্রার্থিতার ঘোষণা দেন। জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতৃত্বের কাছ থেকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা পাওয়া জি এম কাদেরকে সরাতে তৎপর হন জ্যেষ্ঠ নেতারা।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কর্মসূচি থাকায় চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না– এ কারণ দেখিয়ে সম্মেলন স্থগিত করেন জি এম কাদের। কিন্তু ২৮ জুন প্রধান উপদেষ্টার কর্মসূচি ছিল না। ক্ষুব্ধ আনিস ও হাওলাদার ২৮ জুনেই কাকরাইলে সম্মেলন করার ঘোষণা দেন। এটি ঠেকাতে জি এম কাদের একই স্থানে একই দিনে সমাবেশের ডাক দেন। পরে দুই পক্ষই পিছিয়ে যায়।
গঠনতন্ত্রের ২০(ক) ধারা অনুযায়ী, জাপা চেয়ারম্যান দলের যে কাউকে যে কোনো সময়ে বহিষ্কার করতে পারেন, পদও দিতে পারেন। এ ধারা বাতিলের দাবি তুলেছিলেন চুন্নু। আনিসুল ইসলাম বলেছেন, যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই জাপার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু জি এম কাদের মৃত্যুপথযাত্রী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছ থেকে জোর করে সই নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।
গত বছর ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর জি এম কাদেরকে ছেড়ে রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগ দেন জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জাতীয় পার্টি ছোট হতে হতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। জি এম কাদের একে একে সবাইকে বের করে দিয়েছেন।
আক্ষেপ করে চুন্নু বলেন, ‘এমন কী অপরাধ করলাম– প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি দিলেন! মহাসচিব থেকে অব্যাহতি নিয়ে আপত্তি নেই। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে জাপায় আছি।
আনিসুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর কাউকে বাদ দেওয়া, পদ দেওয়ার ক্ষমতা নেই চেয়ারম্যানের। ফলে চুন্নুই মহাসচিব পদে রয়েছেন। ব্যারিস্টার শামীমের নিয়োগ অবৈধ।
সংবাদ সম্মেলনে রওশনের নেতৃত্বাধীন জাপার কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাও ছিলেন। ছিলেন প্রেসিডিয়ামের সাবেক ও বর্তমান সদস্য সাইদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, এটিইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রত্না, নাজমা আক্তার, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা প্রমুখ। এ ছাড়া ছিলেন জাপার ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা পদে থাকা নেতারা।