বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সময় তো ভালো যাচ্ছে না এখন, অনেকেই অনেক কথা বলছেন। অনেকেই মন খারাপ করছেন। আমি সব সময় আশাবাদী মানুষ। বয়স আমার অনেক, তবে আমি সব সময় আশাবাদী মানুষ। আমি মনে করি, এরপর ভালো সময় আসবে। আরও ভালো সময় আসবে।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস-২০২৫’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ (টিবিডি)।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জেনারেশন গ্যাপ (প্রজন্মের দূরত্ব) অনেক বেশি। ওদের বুঝতে আমার সময় লাগে। আমার মনে হয়, আমাদের বুঝতেও হয়তো সময় লাগে। যে কারণে এখন অনেক রাজনৈতিক সমস্যাও কিছু কিছু দেখা দিচ্ছে। এটিকে অন্তত একখানে আনা যেত, তাহলে বোধ হয় অনেকগুলো সমস্যার সমাধান হতো।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জেন-জিদের সঙ্গে আমাদের পরিচয় খুব কম। পরিচয়টা বাড়ানো দরকার। আবার ঢাকার চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ের চিন্তা-ভাবনা এক নয়। এই দূরত্ব মেটাতে হবে। তা না হলে আমরা যে প্রজন্ম, যে শক্তি, যে আর্মি তৈরি করতে চাচ্ছি, যেই আর্মি আমার বাংলাদেশকে বদলে দেবে, সেই জায়গায় আমরা আসতে পারব না।’

তরুণেরা দেশের জন্য ভবিষ্যতে জোরালো ভূমিকা রাখবেন, এমন আশাবাদ রেখে তিনি বলেন, ‘আমাদের তরুণেরা আমাদের চেয়েও অনেক অনেক বেশি যোগ্য হয়ে উঠছে এবং তারা এ দেশে ভবিষ্যতে আরও বেশি বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। তবে তর্ক আছে, বিতর্ক আছে, মতের অমিল আছে। আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে, তোমারও কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে এবং এটাই হচ্ছে উপযুক্ত গণতন্ত্র।’

বিতর্ক করার সময় ‘মাননীয়’ শব্দ পরিহারের অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার একটা আপত্তি আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর মাননীয় স্পিকার কথাটা কি আমরা বাদ দিতে পারি না? আমার কেন জানি মনে হয়, এই মাননীয় কথাটা থেকেই কিন্তু সমস্ত অটোক্রেসির (স্বৈরাচার) জন্ম হয়।’

বাংলাদেশে কেউ মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মানসিকতা বদলে যায় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের এখানে যে-ই মন্ত্রী হয়ে গেল, সে সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন জগতে চলে গেল। তার স্যালুট, তার বাঁশি, তার গাড়ির সামনে একটা গাড়ি, পেছনে আরেকটা গাড়ি—এই যে মানসিকতাটা তৈরি হয়, এই মানসিকতা আমাকে ধীরে ধীরে ওই ডিক্টেটরের (স্বৈরশাসক) দিকে নিয়ে যায়।’

টিবিডির পরিচালক সাইফ রুবাবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মাদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, আইনজীবী রাশনা ইমাম, অ্যাডকম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম ফারহান চৌধুরী, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির (ডিসিডিএস) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন, ডিসিডিএসের প্রধান মডারেটর অধ্যাপক আকতারুজ্জামান, টিবিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবায়েত মান্নান রাফি প্রমুখ।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ম নন য় আম দ র ব এনপ ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু, রেলপথ অবরোধ

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আমিরপুর রেলগেটে ট্রেনে কাটা পড়ে আইনুল ইসলাম নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রেলগেট না থাকার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে দাবি করে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে খুলনা-চুয়াডাঙ্গা-ঢাকা ও খুলনার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। 

নিহত আইনুল ইসলাম (২৫) আমিরপুর গ্রামের আরমান হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আমিরপুর রেলগেট অতিক্রম করছিল। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী আইনুল ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। এ দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা রেললাইনে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। আন্দোলনকারীরা রেলগেটে গেটম্যান নিয়োগের দাবিতে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে রাখেন। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান চুয়াডাঙ্গা সদর ইউএনও এম সাইফুল্লাহ ও ওসি খালেদুর রহমান। তারা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গেটম্যান বসানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে আটকে থাকা ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে যাত্রা করে।
ইউএনও এম সাইফুল্লাহ জানান, ঘটনার পর তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমিরপুর রেলক্রসিংয়ে দ্রুতই রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছে রেলওয়ে। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ