যে ম্যাচের শিরোনাম এমবাপ্পে বনাম পিএসজি
Published: 9th, July 2025 GMT
আজ আবার সেই পথেই দেখা হয়ে গেল/কত সুর কত গান মনে পড়ে গেল...পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গানের এ লাইন দুটির মতো ফুটবলের পথ পেরোতে পেরোতে কিলিয়ান এমবাপ্পে আর পিএসজির আজ আবার দেখা হয়ে যাচ্ছে। যে পথে একদিন এমবাপ্পে আর পিএসজি হাত ধরাধরি করে হেঁটেছে একই গন্তব্যে পৌঁছানো আর একই স্বপ্ন অর্জনের আশায়, আজ সেখানে দুই পক্ষের দেখা বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে। ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এমবাপ্পে আজ রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে দাঁড়িয়ে পিএসজির বিশ্বসেরা হওয়ার স্বপ্নের পথ আগলে!
জীবনের এমন এক বাঁকে দাঁড়িয়ে এমবাপ্পের মনে যেমন অম্ল ও মধুর, নানা রকমের স্মৃতি ভিড় করার কথা, পিএসজি শিবিরেও তা–ই। এমবাপ্পের মনে পড়বে মোনাকো থেকে সেই ২০১৭ সালে ধারের চুক্তিতে পিএসজিতে যাওয়া। এরপর স্থায়ী চুক্তি এবং অল্প দিনেই প্যারিসের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠা। সেখান থেকে ক্লাবটির হয়ে একে একে জেতা ছয়টি লিগসহ ১৫টি শিরোপার কথা। একই সঙ্গে হয়তো মনে পড়বে প্যারিসের শেষ দিনগুলোয় পিএসজির সমর্থক আর কর্মকর্তাদের কাছে নায়ক থেকে ‘খলনায়ক’ হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও।
পিএসজির ক্ষেত্রেও তা–ই। এমবাপ্পের সামনে দাঁড়িয়ে কাতারি মালিকানার পিএসজি শিবিরে হয়তো পুরোনো সেই ব্যথা জেগে উঠবে আবার—যে এমবাপ্পেকে এত ভালোবাসা দিয়েছিলেন তাঁরা, সেই এমবাপ্পেই কিনা কখনো সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাতে পারেননি। তার ওপর তাঁদের ভাষায় ২০২৪ সালে পিএসজির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে রিয়ালে যোগ দিয়েছেন এমবাপ্পে। এমবাপ্পে চলে যাওয়ার পর চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতা পিএসজি আজ তাই চাইবে রিয়ালকে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে ‘বিশ্বাসঘাতক’-এর ওপর প্রতিশোধ নিতে! কারণ? স্মৃতি বড় উচ্ছৃঙ্খল, দুহাজার বছরেও সব মনে রাখে! এ তো মাত্র এক বছরের কিছু বেশি সময়ের কথা!
পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের পর স্মারক জার্সি হাতে এমবাপ্পে। পুরোনো সেই দিনগুলোর কথা কি আজ মনে পড়বে ফরাসি তারকার!.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে দেশটির এল–ফাশের শহরের পতনের পর সেখানকার বাসিন্দারা ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা শহরটিতে আটকা পড়েছেন। গতকাল শনিবার ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের লড়াই চলছে। গত ২৬ অক্টোবর এল-ফাশের দখল করে নেয় আধা সামরিক বাহিনীটি। শহরটির পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুনসুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে২২ ঘণ্টা আগেএল–ফাশের শহর থেকে যাঁরা পালিয়ে কাছের তাউইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা চালানোর কথা বলেছেন। তাঁদের ভাষ্য, এল–ফাশেরে মা–বাবার সামনে সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে। মানুষজন শহরটি থেকে পালানোর সময় তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, ২৬ অক্টোবর থেকে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি থেকে পালিয়েছেন।
শনিবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, এল–ফাশেরের বিপুল মানুষ ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছে। তাদের শহরটি ত্যাগ করতে দিচ্ছে না আরএসএফ ও তাদের সহযোগীরা। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল ওলিভিয়ার লাচেরিটে বলেন, এল–ফাশের থেকে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা কোথায়? সম্ভাব্য উত্তরটা হলো—তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরএসএফের হামলায় এল–ফাশেরে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুই হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, এল–ফাশেরে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
সুদান ‘মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছে বলে শনিবার উল্লেখ করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়েডফুল। বাহরাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আরএসএফ। এরপরও এমন নৃশংসতার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। একই সংবাদ সম্মেলনে সুদানের পরিস্থিতি ‘ভয়ংকর’ বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার।
আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন৭ ঘণ্টা আগে