বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানকে থামতে বললেন বিএনপি নেতা
Published: 9th, July 2025 GMT
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ফজলুর রহমানকে থামতে বললেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিঞা। আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট দিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
এর আগে ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি নুসরাত জাহান।
ইসরাইল মিঞা ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘প্লিজ! ভাই এবার থামুন। অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আপনাকে অনুরোধ করে বলছি, আপনি এবার থামুন। আপনি ভালো বলতে পারেন, সেটা কিশোরগঞ্জসহ দেশবাসী ভালো করেই জানে। এটা আপনার গুণ। আপনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, এর জন্য আপনাকে সহস্রবার স্যালুট করি। কিন্তু আপনার সাবেক দলের নেতার প্রতি দেওয়া অতিভক্তিপূর্ণ বক্তব্য এখন মানুষের সহ্যসীমা লঙ্ঘন করছে।’
দীর্ঘ পোস্টে ইসরাইল মিঞা লেখেন, ‘আপনি যাকে দেবতুল্য বানাবার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, তিনিই সর্বপ্রথম জাতির সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে চরম দুঃসময়ে সমগ্র নিরস্ত্র জাতিকে অস্ত্রের মুখে ঠেলে দিয়ে নিজের এবং পরিবারের সবাইকে সুরক্ষা করেছিলেন। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত, দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমে কেনা স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের কবর রচনা করে একদলীয় বাকশাল গঠন করেছিলেন। মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার হরণ করেছিলেন।’
জেলা বিএনপির এই নেতা আরও লেখেন, ‘চব্বিশের ছাত্র-গণ-আন্দোলনের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়ে এর নেতৃত্বকে চরমভাবে ঠাট্টা-বিদ্রূপ অকথ্য গালাগাল করছেন এবং দলের অবস্থানের সাথে দূরত্ব তৈরির পথ সুগম করছেন। আমার জানামতে, আমার দলের স্ট্যান্ডের বাইরে গিয়ে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে যারা জন্মের পর থেকে বিএনপি এবং এর প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে আসছেন, সেই ভোট ব্যাংকে চরম আঘাত এবং ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন।’ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের অবিলম্বে ফজলুর রহমানের বিষয়ে একটা সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তে আসা উচিত বলে অভিমত দেন ইসরাইল মিঞা।
জানতে চাইলে হাজী ইসরাইল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান সম্প্রতি আলেম-ওলামা, চব্বিশের আন্দোলনকারী ও শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, সেগুলো তাঁর দলের অবস্থান না। ওনার এসব বক্তব্যের কারণে দলের ক্ষতি হচ্ছে। এসব বক্তব্য না দিতে আগেও তাঁকে কয়েকবার অনুরোধ করা হয়েছে। এরপরও তিনি থামছেন না। তাই মনের কষ্ট থেকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এ জন্য দল থেকে কেউ তাঁকে কিছু বলেনি।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘ফেসবুকে কে কী স্ট্যাটাস দিল, এসব দেখার আমার কোনো টাইম নাই। এ সম্পর্কে আমি কিছু বলতে চাই না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফজল র রহম ন ব এনপ র ফ সব ক করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ