একের পর এক ডাকাতিতে আড়াইহাজারে উৎকণ্ঠা
Published: 10th, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জানালার গ্রিল কেটে ব্যবসায়ীর বাড়িতে প্রবেশ করে লুটপাট চালিয়েছে ডাকাতরা। এ সময় তারা পুলিশ সদস্য হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। মঙ্গলবার মধ্যরাতে উপজেলার পাঁচরুখী এলাকার সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে টানা পাঁচ দিনে পাঁচটি এলাকায় ডাকাতি হয়েছে। এর মধ্যে একটি হয়েছে দিনের বেলায়। এসব কারণে পুরো উপজেলাবাসী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নিরাপত্তা নিয়ে এই উৎকণ্ঠার মধ্যেও পাঁচটি ডাকাতির শিকার ব্যক্তিরা থানায় কোনো মামলা করেননি। তাদের ভাষ্য, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তারা দেখেছেন মামলা-অভিযোগ করে কোনো সুরাহা হয় না। উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়। ডাকাত দলের লোকজন নানাভাবে তাদের হুমকি-ধমকিও দেয়।
মঙ্গলবার রাতের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের ভাষ্য, রাত ৩টার দিকে তাঁর দোতলা ভবনের নিচতলার জানালার গ্রিল কেটে ২০-২৫ জনের মুখোশধারী ডাকাত ভেতরে ঢোকে। তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে তিনি (সিরাজুল), তাঁর স্ত্রী সুরিয়া বেগম, ছেলে মিনহাজুল ইসলামসহ পরিবারের সবাইর হাত-পা গামছা ও গেঞ্জি দিয়ে বেঁধে ফেলে। সবার হাতেই ছিল ছুরি, চাপাতি, শাবলসহ দেশীয় নানারকম অস্ত্র। ডাকাতরা আলমারি ভেঙে ১৭ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও মূল্যবান আসবাব লুটে নেয়। এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ডাকাত দলের সদস্যদের বয়স ২৫-৩০ বছরের মধ্যে। সবার মুখই নানা রঙের কাপড়ে বাঁধা ছিল।
সোমবার রাত ২টার দিকে ডাকাতি হয় উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের চৈতনকান্দা মধ্যপাড়ার আরিফুল ইসলাম ও মানিকপুরের মনির হোসেনের বাড়িতে। আরিফুলের বাড়িতে ১০-১২ জন মুখোশধারী ডাকাত ঢোকে দরজা ভেঙে। পরে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে কিছু স্বর্ণালংকার, নগদ পাঁচ হাজার টাকা, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোনসহ প্রায় দুই লাখ টাকার পণ্য লুটে নেয়। মনির হোসেনের বাড়িতেও একই কায়দায় ঢুকেছিল ১০-১২ জন মুখোশধারী ডাকাত। তারা এক ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়।
রোববার রাতে উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের সত্যবান্দি এলাকার লিয়াকত হোসেনের বাড়িতে হানা দেয় ডাকাতরা। তারা বাড়ির ফটকের তালা কেটে ভেতরে ঢুকেছিল। লিয়াকতের ভাষ্য, ১১-১২ জন ডাকাত মুখোশ পরে ঢুকেই পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরে সবার হাত-পা বেঁধে দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ ৩০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়।
গতকাল বুধবার পর্যন্ত এ চারটি ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা থানায় অভিযোগ দেননি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বলেন, মামলা-অভিযোগ করলেও ডাকাত গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা দেখেন না। উল্টো নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এ কারণেই কেউ থানায় যেতে চান না।
দিনে বাসায় ঢুকেও ডাকাতি
রোববার দুপুরে ডাকাতি হয়েছে হাইজাদী এলাকার ব্যবসায়ী রুবেল মিয়ার বাসায়। তিনি এদিন ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাইরে যান। তিনি বলেন, মা ছিলেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। স্ত্রী ছিলেন বাসায় একা। এ সময় বোরকা পরা তিন নারী ও চারজন পুরুষ বাড়িতে ঢুকে পানি চায়। তাঁর স্ত্রী পানির জন্য ঘরে প্রবেশ করলে ডাকাত দল পিছু পিছু ভেতরে ঢোকে। এ সময় হাত-পা বেঁধে ও মুখে স্কচট্যাপ লাগিয়ে পেটাতে থাকে। আহত অবস্থায় রুবেলের স্ত্রীকে বাথরুমে ফেলে রেখে লুটপাট চালায়। এই ব্যবসায়ীর ভাষ্য, ডাকাতরা তিনটি আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার পণ্য লুট করেছে।
একই রাতে তিন ডাকাতি
এর আগে ৩০ জুন রাতে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের দিঘলদী এলাকার মতিউর রহমান, জুয়েল ও নুর ইসলামের বাড়িতে ডাকাতি হয়। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ডাকাত দল সবার বাড়ির ফটকের তালা কেটে ভেতরে ঢোকে। বাড়ির সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য পণ্য লুটে নেয়।
ভুক্তভোগী পরিবারসহ আড়াইহাজারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা কেউই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। পুলিশের একটি সূত্র এ বিষয়ে জানায়, সম্প্রতি জামিনের ছাড়া পাওয়া ডাকাতদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। পাশাপাশি ডাকাত দলের সদস্যরা নতুন সদস্য যোগ করছে। এসব কারণেই ডাকাতি বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে টানা ডাকাতির ঘটনায় তারা নড়েচড়ে বসেছেন। জামিনে মুক্ত ডাকাতদের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে।
দুই মাস আগে আড়াইহাজার থানার ওসি হিসেবে যোগ দেওয়া খন্দকার নাসির উদ্দিনের কাছে যে বক্তব্য পাওয়া যায়, তা অনেকটা গতানুগতিক। তিনি বলেন, প্রতিটি ডাকাতির সংবাদ পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা পুলিশি টহল বাড়িয়েছেন। ডাকাতিতে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ওসি আরও জানান, কয়েকদিকে সংঘটিত পাঁচটি ডাকাতির ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। মামলা করতে ভুক্তভোগীদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত কেউই আসেননি। গত জুনে ডাকাতির দুটি মামলা হয়েছিল। তারা পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেন। আগের বছরের জুন মাসে কতটি ডাকাতির মামলা হয়েছিল, এসব তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে দিতে পারেননি।
তাদের এসব বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন উপজেলার বিশিষ্টজন। প্রাবন্ধিক ও গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বাবুল বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে প্রশাসনের কাজ করা জরুরি। পুলিশি টহল জোরদার করলেই শুধু হবে না, পাশাপাশি চিহ্নিত ডাকাতদের আইনের আওতায় আনতে চালাতে হবে বিশেষ অভিযান।
উপজেলার বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কাজী আব্দুস সেলিম সমকালকে বলেন, সব এলাকাতেই অপরাধ কম-বেশি হয়ে থাকে। আড়াইহাজারে ডাকাতির বাড়ার ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম ঘটনা বাড়ছে। ডাকাত গ্রেপ্তারের পর যদি ক্ষমতাবানরা তদবির করে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেন, সে ক্ষেত্রে ডাকাতির মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিহ্নিত ডাকাতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পেইন করতে হবে। ডাকাতি বন্ধে প্রশাসন ও সিভিল সোসাইটির সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স বর ণ ল ক র উপজ ল র ব পর ব র র ড ক ত দল ব যবস য় ল ইসল ম এল ক র ড ক তর র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
একের পর এক ডাকাতিতে আড়াইহাজারে উৎকণ্ঠা
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জানালার গ্রিল কেটে ব্যবসায়ীর বাড়িতে প্রবেশ করে লুটপাট চালিয়েছে ডাকাতরা। এ সময় তারা পুলিশ সদস্য হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। মঙ্গলবার মধ্যরাতে উপজেলার পাঁচরুখী এলাকার সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে টানা পাঁচ দিনে পাঁচটি এলাকায় ডাকাতি হয়েছে। এর মধ্যে একটি হয়েছে দিনের বেলায়। এসব কারণে পুরো উপজেলাবাসী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নিরাপত্তা নিয়ে এই উৎকণ্ঠার মধ্যেও পাঁচটি ডাকাতির শিকার ব্যক্তিরা থানায় কোনো মামলা করেননি। তাদের ভাষ্য, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তারা দেখেছেন মামলা-অভিযোগ করে কোনো সুরাহা হয় না। উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়। ডাকাত দলের লোকজন নানাভাবে তাদের হুমকি-ধমকিও দেয়।
মঙ্গলবার রাতের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের ভাষ্য, রাত ৩টার দিকে তাঁর দোতলা ভবনের নিচতলার জানালার গ্রিল কেটে ২০-২৫ জনের মুখোশধারী ডাকাত ভেতরে ঢোকে। তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে তিনি (সিরাজুল), তাঁর স্ত্রী সুরিয়া বেগম, ছেলে মিনহাজুল ইসলামসহ পরিবারের সবাইর হাত-পা গামছা ও গেঞ্জি দিয়ে বেঁধে ফেলে। সবার হাতেই ছিল ছুরি, চাপাতি, শাবলসহ দেশীয় নানারকম অস্ত্র। ডাকাতরা আলমারি ভেঙে ১৭ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও মূল্যবান আসবাব লুটে নেয়। এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ডাকাত দলের সদস্যদের বয়স ২৫-৩০ বছরের মধ্যে। সবার মুখই নানা রঙের কাপড়ে বাঁধা ছিল।
সোমবার রাত ২টার দিকে ডাকাতি হয় উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের চৈতনকান্দা মধ্যপাড়ার আরিফুল ইসলাম ও মানিকপুরের মনির হোসেনের বাড়িতে। আরিফুলের বাড়িতে ১০-১২ জন মুখোশধারী ডাকাত ঢোকে দরজা ভেঙে। পরে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে কিছু স্বর্ণালংকার, নগদ পাঁচ হাজার টাকা, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোনসহ প্রায় দুই লাখ টাকার পণ্য লুটে নেয়। মনির হোসেনের বাড়িতেও একই কায়দায় ঢুকেছিল ১০-১২ জন মুখোশধারী ডাকাত। তারা এক ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়।
রোববার রাতে উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের সত্যবান্দি এলাকার লিয়াকত হোসেনের বাড়িতে হানা দেয় ডাকাতরা। তারা বাড়ির ফটকের তালা কেটে ভেতরে ঢুকেছিল। লিয়াকতের ভাষ্য, ১১-১২ জন ডাকাত মুখোশ পরে ঢুকেই পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরে সবার হাত-পা বেঁধে দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ ৩০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়।
গতকাল বুধবার পর্যন্ত এ চারটি ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা থানায় অভিযোগ দেননি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বলেন, মামলা-অভিযোগ করলেও ডাকাত গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা দেখেন না। উল্টো নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এ কারণেই কেউ থানায় যেতে চান না।
দিনে বাসায় ঢুকেও ডাকাতি
রোববার দুপুরে ডাকাতি হয়েছে হাইজাদী এলাকার ব্যবসায়ী রুবেল মিয়ার বাসায়। তিনি এদিন ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাইরে যান। তিনি বলেন, মা ছিলেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। স্ত্রী ছিলেন বাসায় একা। এ সময় বোরকা পরা তিন নারী ও চারজন পুরুষ বাড়িতে ঢুকে পানি চায়। তাঁর স্ত্রী পানির জন্য ঘরে প্রবেশ করলে ডাকাত দল পিছু পিছু ভেতরে ঢোকে। এ সময় হাত-পা বেঁধে ও মুখে স্কচট্যাপ লাগিয়ে পেটাতে থাকে। আহত অবস্থায় রুবেলের স্ত্রীকে বাথরুমে ফেলে রেখে লুটপাট চালায়। এই ব্যবসায়ীর ভাষ্য, ডাকাতরা তিনটি আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার পণ্য লুট করেছে।
একই রাতে তিন ডাকাতি
এর আগে ৩০ জুন রাতে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের দিঘলদী এলাকার মতিউর রহমান, জুয়েল ও নুর ইসলামের বাড়িতে ডাকাতি হয়। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ডাকাত দল সবার বাড়ির ফটকের তালা কেটে ভেতরে ঢোকে। বাড়ির সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য পণ্য লুটে নেয়।
ভুক্তভোগী পরিবারসহ আড়াইহাজারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তারা কেউই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। পুলিশের একটি সূত্র এ বিষয়ে জানায়, সম্প্রতি জামিনের ছাড়া পাওয়া ডাকাতদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। পাশাপাশি ডাকাত দলের সদস্যরা নতুন সদস্য যোগ করছে। এসব কারণেই ডাকাতি বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে টানা ডাকাতির ঘটনায় তারা নড়েচড়ে বসেছেন। জামিনে মুক্ত ডাকাতদের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে।
দুই মাস আগে আড়াইহাজার থানার ওসি হিসেবে যোগ দেওয়া খন্দকার নাসির উদ্দিনের কাছে যে বক্তব্য পাওয়া যায়, তা অনেকটা গতানুগতিক। তিনি বলেন, প্রতিটি ডাকাতির সংবাদ পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা পুলিশি টহল বাড়িয়েছেন। ডাকাতিতে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ওসি আরও জানান, কয়েকদিকে সংঘটিত পাঁচটি ডাকাতির ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। মামলা করতে ভুক্তভোগীদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত কেউই আসেননি। গত জুনে ডাকাতির দুটি মামলা হয়েছিল। তারা পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেন। আগের বছরের জুন মাসে কতটি ডাকাতির মামলা হয়েছিল, এসব তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে দিতে পারেননি।
তাদের এসব বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন উপজেলার বিশিষ্টজন। প্রাবন্ধিক ও গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বাবুল বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে প্রশাসনের কাজ করা জরুরি। পুলিশি টহল জোরদার করলেই শুধু হবে না, পাশাপাশি চিহ্নিত ডাকাতদের আইনের আওতায় আনতে চালাতে হবে বিশেষ অভিযান।
উপজেলার বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কাজী আব্দুস সেলিম সমকালকে বলেন, সব এলাকাতেই অপরাধ কম-বেশি হয়ে থাকে। আড়াইহাজারে ডাকাতির বাড়ার ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব অপকর্ম ঘটনা বাড়ছে। ডাকাত গ্রেপ্তারের পর যদি ক্ষমতাবানরা তদবির করে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেন, সে ক্ষেত্রে ডাকাতির মতো অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চিহ্নিত ডাকাতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পেইন করতে হবে। ডাকাতি বন্ধে প্রশাসন ও সিভিল সোসাইটির সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি।