ট্রাম্পের লবিস্টদের লাখ লাখ ডলার দিচ্ছে দরিদ্র দেশগুলো
Published: 10th, July 2025 GMT
বিশ্বের কিছু দরিদ্র দেশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন লবিস্টদের লাখ লাখ ডলার দিতে শুরু করেছে। এই লবিস্টরা যাতে বিদেশী সাহায্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাটছাঁট বন্ধে ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে পারে সেজন্য এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, সোমালিয়া, হাইতি এবং ইয়েমেন ১১টি দেশের মধ্যে রয়েছে যারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিদেশী মানবিক সহায়তা হ্রাস করার পর সরাসরি তার সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
গ্লোবাল উইটনেসের তদন্তে দেখা গেছে, অনেক দেশ ইতিমধ্যেই মানবিক বা সামরিক সহায়তার বিনিময়ে খনিজসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ বিনিময় শুরু করেছে।
ট্রাম্প জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পরপর মার্কিন ত্রাণ সংস্থা ইউএসএইড বন্ধের ঘোষণা দেন। গত সপ্তাহে সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে তার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে পাঁচ বছরে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
গ্লোবাল উইটনেসের ট্রানজিশন মিনারেলের নীতি প্রধান এমিলি স্টুয়ার্ট বলেছেন, “পরিস্থিতির অর্থ হল ওয়াশিংটনে চুক্তি করা নিম্ন আয়ের দেশগুলোআরো মরিয়া” হয়ে উঠতে পারে, যারা তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের নৃশংস শোষণের জন্য ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
নথিপত্র থেকে দেখা গেছে, গত নভেম্বরে মার্কিন নির্বাচনের ছয় মাসের মধ্যে ট্রাম্প সংশ্লিষ্ট লবি ফার্ম এবং বিশ্বের কিছু স্বল্পোন্নত দেশ, যারা ইউএএসএইডের সর্বোচ্চ প্রাপক ছিল, তাদের মধ্যে ১৭ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
মার্কিন বিদেশী এজেন্ট নিবন্ধন আইনের অধীনে জমা দেওয়া রেকর্ড থেকে জানা গেছে, কিছু দেশ একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো। রুয়ান্ডা-সমর্থিত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সমর্থনের জন্য কঙ্গো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য প্রস্তুত। এই চুক্তির বদৌলতে আমেরিকান কোম্পানিগুলো লিথিয়াম, কোবাল্ট এবং কোল্টান উত্তোলনের সুযোগ পাবে কঙ্গো থেকে। ট্রাম্প প্রশাসনের সহায়তা পেত লবিস্ট ব্যালার্ড পার্টনার্সের সাথে ১২ লাখ ডলার মূল্যের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কঙ্গো।
ব্রায়ান ব্যালার্ডের মালিকানাধীন এই সংস্থাটি ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের অনেক আগে ট্রাম্পের পক্ষে লবিং করেছিল এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক প্রচারণায় শীর্ষস্থানীয় দাতা ছিল।
সোমালিয়া এবং ইয়েমেন বিজিআর গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্সের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যার মূল্য যথাক্রমে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার এবং তিন লাখ ৭২ হাজার ডলার। বিজিআরের সাবেক অংশীদার শন ডাফি এখন ট্রাম্পের পরিবহনমন্ত্রী।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী