সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড এলাকায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনা। এতে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, বাড়ছে ছিনতাই ও চুরি। অথচ প্রশাসন রয়েছে নিরব দর্শকের ভূমিকায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আদমজী ইপিজেডের মূল গেটের দক্ষিণ পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে খাবারের হোটেল, কনফেকশনারি, মোটরসাইকেল গ্যারেজ, বাস কাউন্টার ও পেট্রোল-অকটেন বিক্রির দোকান। প্রায় ২৫টিরও বেশি এ ধরনের স্থাপনা এখন পুরোদমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চাষাড়া-আদমজী সড়কের দুই পাশে দূরপাল্লার বাসগুলো দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক চলাচল করেন। যানজটের কারণে পথচারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন, সেইসাথে বাসস্ট্যান্ড ঘিরে গড়ে উঠেছে ছিনতাইকারী চক্র। প্রায়ই ঘটছে মোবাইল ফোন, ব্যাগ ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতনের পর এ এলাকায় দখলদার চক্রটি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতির আশ্রয়ে এসব অবৈধ দোকান ও বাস কাউন্টার পরিচালিত হতো। 

এখন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি অন্তরা বাস কাউন্টার এবং ইপিজেডের অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন। সরকারি জমি উদ্ধারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কিংবা স্থানীয় প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
তাদের প্রশ্ন, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যদি চায়, তবে এসব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে যান চলাচলের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু কারা যেন ছায়া থেকে এসব দখলদারদের রক্ষা করছে। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ