আল্লাহর গজব পড়ুক : খায়রুল বাসারের আবেগঘন পোস্ট
Published: 12th, July 2025 GMT
পুরোনো ঢাকার মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা সারাদেশে তীব্র চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। জনসমক্ষে ঘটনার ভয়াবহতা, এবং তা ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও হৃদয় কাঁপিয়েছে সবার। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিল্পী, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষও মুখ খুলছেন— ব্যক্ত করেছেন ক্ষোভ, হতাশা আর প্রতিবাদ।
এই বর্বরতার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন খায়রুল বাসার। এই অভিনেতার ভাষায়, যারা এমন পাশবিকতা চালিয়েছে, তারা মানুষ তো নয়ই, জীবজন্তুকেও হার মানিয়েছে।
যদিও তিনি কোথাও সোহাগ হত্যার কথা সরাসরি লেখেননি, তবে তার পোস্টের ভাষা এবং সময়কাল দেখে নেটিজেনরা ধরে নিয়েছেন, এই ঘটনার প্রতিক্রিয়াতেই এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
পোস্টে খায়রুল বাসার লেখেন, “আল্লাহর গজব পড়ুক তাদের ওপর, যারা মানুষ হতে পারল না। যারা জীবজন্তুর বৈশিষ্ট্যকেও হার মানিয়েছে। আল্লাহ এ দেশকে হেফাজত করুন কিছু ভালো মানুষের ওছিলায়। এ দেশের মানুষ যেন অন্যের ও নিজের শান্তি নিয়ে ঘুমাতে পারে।”
পোস্টের শেষাংশে সবাইকে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি লেখেন, “যেখানেই অন্যায়, প্লিজ! আপনারা কথা বলুন, প্লিজ! মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকুন, সাহসী হোন, সাহস দেখান, মানবতা দেখান, আইনের দ্বারস্থ হোন। বারবার ব্যর্থ হলেও আইনের ওপর ভরসা রাখুন। পরিবর্তন আসবেই।”
খায়রুল বাসারের এই পোস্টে ইতোমধ্যেই অনেকেই মন্তব্য করছেন এবং একাত্মতা প্রকাশ করছেন। তবে খায়রুল ছাড়াও এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নির্মাতা আশফাক নিপুণ ও অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
ঢাকা/রাহাত//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিআর নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন, সমর্থন জামায়াতের
সংবিধান এবং সংস্কারের ‘সুরক্ষায়’ ভোটের অনুপাতে আসন বন্টন (পিআর) পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন নির্বাচন চায় চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন। এতে সমর্থন জানিয়ে জামায়াতে ইসলামী বলছে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না। সংস্কারে ঐকমত্যে না এসে বিএনপিই নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে এনসিপি, নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টিসহ কয়েকটি দল বলছে- সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের আসন বন্টন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইসলামী আন্দোলনের গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেছেন দলগুলোর নেতারা। ‘গণ–অভ্যুত্থানের পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি’ শীর্ষক এ আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, পিআর পদ্ধতি হচ্ছে ‘মাদার অব অল রিফর্ম’।
পিআর পদ্ধতির সমালোচনার জবাব
পিআর পদ্ধতিতে স্থিতিশীল সরকার গঠিত হবে না- বিএনপির এ সমালোচনার জবাবে চরমোনাই পীর বলেছেন, ঘন ঘন সরকার বদল আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীল হওয়া এক কথা নয়। ইতালিতে ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন হলেও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ। আবার বাংলাদেশে ১৯৮১ সাল থেকেই একই সরকার দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলেও স্থিতিশীলতা আসেনি। জোটের রাজনীতির কারণে বাংলাদেশেও সরকারের স্থিতিশীল নিয়ে দুঃশ্চিন্তা নেই।
পিআর পদ্ধতিতে আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে না- এ সমালোচনার জবাবে ইসলামী আন্দোলনে আমির বলেছেন, জাতিগত, ভাষাগত বিবেচনায় বাংলাদেশ একক ধারার দেশ। স্থানীয় প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি মুখ্য, যেসব ভাষা, নৃতত্ত্ব, সংস্কৃতি ও ধর্মের বিভাজন রয়েছে। তারপরও পিআর পদ্ধতিতেও ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব, তুরস্কের মতো বিভাগভিত্তিক নির্বাচনের মাধ্যমে।
পিআর পদ্ধতিতে সংসদীয় আসন থেকে এমপি নির্বাচিত না হওয়া, জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হবে- এ সমালোচনার জবাবে রেজাউল করীম বলেছেন, এলাকার উন্নয়ন সংসদ সদস্যদের কাজ নয়। এমপিরা বৈষম্যহীন নীতি প্রণয়ন করলে, দেশে সর্বত্র উন্নয়ন হবে। আর উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। পিআরে এমপি প্রার্থী না থাকায়, কেউ ভোট ডাকাতির জন্য মরিয়া হবে না। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
পিআর পদ্ধতিকে সংস্কারের সুরক্ষার একমাত্র উপায় আখ্যা দিয়ে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে চরমোনাই পীর বলেছেন, জুলাই সনদের আইনি মর্যাদা নিয়েও মতানৈক্য রয়েছে। ফলে এখন চাপে পড়ে সংস্কারে রাজি হলেও পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার সংস্কার রাখবে কিনা অনিশ্চয়তা আছে। ৪০ থেকে ৪৯ শতাংশ ভোটে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্টতা পেয়ে একক কর্তৃত্বে সংবিধান কাটাছেঁড়ারও নজির রয়েছে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় আগামী নির্বাচনেও একই পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সংস্কার ভেস্তে যেতে পারে।
সংস্কার না হলে জামায়াত নির্বাচনে যাবে না
বিএনপি নয়, অন্যান্য দলই সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে বলে দাবি করেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, একটি দলের কারণে সংস্কারে ঐকমত্য আটকে যাচ্ছে। ঐকমত্য না হলে কমিশনের উচিত গণভোটে যাওয়া। জনগণ যদি আমাদের অবস্থানকে গ্রহণ করে, তবে পিআর হবে। গ্রহণ না করলে আরেকটি দল যা বলছে, তা হবে।
পিআরে একমত দলগুলোকে নিয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। সংস্কার ছাড়া জামায়াত নির্বাচনে যাবে না জানিয়ে বিএনপির উদ্দেশ্যে গোলাম পরওয়ার বলেছেন. ‘আপনারা বলছেন আমরা নির্বাচন চাচ্ছি না, পিআরের কথা বলে নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা করছি। আমরা বলতে পারি, আপনারা তো সংস্কার চাচ্ছেন না। আর সংস্কার না হলে তো আমরা নির্বাচনে যাব না। ঐকমত্যে না এসে বিএনপিই নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে।
উচ্চকক্ষে পিআর হলে সংবিধানে নয়-ছয় হবে না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমানে যে নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু আছে, তাতে দলবাজি হয়। উচ্চকক্ষে পিআর হলে সংবিধানে নয়-ছয় করে হাত দেওয়া বন্ধ হবে।
গোলটেবিলে আরও বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাদের, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, গণ অধিকার পরিষদের হাবিবুর রহমান, ইসলামি ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন প্রমুখ।