পাঁচ বছর ধরে শীর্ষ টেকসই ব্যাংকের তালিকায় স্থান বজায় রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালে টেকসই ব্যাংকিংয়ের রেটিং চালু করার পর থেকে প্রতিবছর তালিকায় অবস্থান ধরে রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই ব্যাংকিং রেটিং পাঁচটি সূচকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন করে থাকে। এগুলো হলো সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইনডেক্স, করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর), গ্রিন রিফাইন্যান্স, কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি ইনডেক্স এবং ব্যাংকিং সার্ভিস কাভারেজ। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া এই স্বীকৃতি ব্র্যাক ব্যাংকের সুশাসন, দায়িত্বশীল ঋণদান ও ঝুঁকি বিবেচনায় মূলধন ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতার প্রতিফলন।

২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংক টেকসই অর্থায়নে ৯৪ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে, যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারণকৃত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ শতাংশ। সবুজ অর্থায়নে ব্যাংকটি দিয়েছে ১৭ শতাংশ ঋণ, যা রেগুলেটরি লক্ষ্যমাত্রা ৫ শতাংশর তুলনায় অনেক বেশি।

ব্র্যাক ব্যাংকই বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংকগুলোর একটি, যারা পার্টনারশিপ ফর কার্বন অ্যাকাউন্টিং ফাইন্যান্সিয়ালসের (পিসিএএফ) স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে নিজেদের স্কোপ ১, ২ ও ৩ কার্বন নিঃসরণের শতভাগ তথ্য প্রকাশ করেছে। এটিই দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠান, যারা আইএসএসবি স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ইনডিপেনডেন্ট আইএফআরএস এস-১ ও এস-২ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

ব্যাংকটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড সোশ্যাল রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (ইএসআরএম) ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যাংকের সব কার্যক্রমে টেকসইতা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করেছে। এ ছাড়া ব্যাংকটি ইএসজি কমপ্লায়েন্স এবং ঝুঁকি হ্রাস নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ঋণদান প্রক্রিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) পারফরম্যান্স স্ট্যান্ডার্ড যুক্ত করেছে।

ইএসজি-অ্যালাইনড অর্থায়নের পরিসর বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্র্যাক ব্যাংক দেশজুড়ে ৫০টি সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স হেল্প ডেস্ক চালু করেছে, যা ক্লায়েন্টদের টেকসই ঋণসুবিধা এবং গ্রিন রিফাইন্যান্স স্কিম সম্পর্কে পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করে।

ব্র্যাক ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রম সমাজে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব তৈরির লক্ষ্যে পরিচালিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি, জলবায়ু সহনশীলতা এবং প্রান্তিক নারীদের উচ্চশিক্ষার মতো উদ্যোগসমূহ। ২০২৪ সালে ব্যাংকটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা ও শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি আড়াই হাজার কৃষককে জলবায়ু সহনশীল কৃষিপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

এমন সব টেকসই উদ্যোগের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক আন্তর্জাতিক পর্যায়েও স্বীকৃতি পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে ব্লুমবার্গের সাসটেইনেবিলিটি স্কোরে ৪৩.

৩৭ পয়েন্ট অর্জন, মুডি’স কর্তৃক টপ ইএসজি পারফরমারের স্বীকৃতি এবং ইউনাইটেড নেশনস গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ কর্তৃক এসডিজি পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড উল্লেখযোগ্য। উল্লেখ্য, এসডিজি পাইওনিয়ার পুরস্কারটি ব্যাংকটির চিফ সাসটেইনেবিলিটি অফিসারকে দেওয়া হয়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের বৈচিত্র্যময় উদ্যোগ ও অর্জন সম্পর্কে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনার মধ্যেই সাসটেইনেবিলিটি নিহিত। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে, দায়িত্বশীল ব্যাংকিং মানেই টেকসই ব্যাংকিং। টেকসই উন্নয়নের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখতে আমরা পরিবেশবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের প্রসারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন য ন স ট কসই ব য লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা

বয়স ৪৪, শরীরও আর আগের মতো চলছে না। তবু মহেন্দ্র সিং ধোনি আইপিএল ছাড়েননি। সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছেন, শোনা যাচ্ছে, পরের মৌসুমেও খেলবেন। অথচ তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স বলছে, সময় ফুরিয়েছে। তবু তিনি খেলে যাচ্ছেন কেন? ক্রিকেট ছাড়তে পারছেন না তাই? নাকি খ্যাতির মোহ? সত্যিটা এসবের চেয়েও বড়—ধোনি এখন শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একটি বিশাল অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেমের মূল স্তম্ভ, যাঁর বিদায় মানে অনেক কিছুর ধস।

চলুন দেখা যাক, কীভাবে ধোনির একটুখানি মাঠে থাকা বদলে দেয় বিশাল অঙ্কের হিসাব।২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ব্র্যান্ড ভ্যালু

২০২৫ আইপিএল ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ইতিহাসেই সবচেয়ে বাজে মৌসুম। পয়েন্ট তালিকায় একেবারে তলানিতে থেকে মৌসুম শেষ করেছে তারা। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার, এর কোনো প্রভাবই পড়েনি সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে; বরং সামান্য বেড়েছে!
হুলিহ্যান লোকির ‘আইপিএল ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন স্টাডি ২০২৫’ প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা ২০২৪ সালে ছিল ২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যদিও আইপিএলের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজির র‍্যাঙ্কিংয়ে চেন্নাই ১ নম্বর থেকে তিনে নেমে গেছে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে নয়।
তুলনা করে দেখা যাক—রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) প্রথমবার আইপিএল জেতায় তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে, উঠে এসেছে ১ নম্বরে। অথচ সিএসকে কিছু না করেই সেরা তিনে আছে শুধু একজনের জন্য—ঠিক ধরেছেন, এম এস ধোনি!

আরও পড়ুনফিক্সিং, বিদ্রোহ এবং ষড়যন্ত্রে ভরা ড্রেসিংরুম: পাকিস্তান ক্রিকেটের অস্থির অধ্যায়২৭ জুলাই ২০২৫দর্শকসংখ্যায় ‘ধোনি ইফেক্ট’

২০২৩ আইপিএলের একটি মুহূর্তই বলে দেয়, ধোনির উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে মাত্র ৩ বল খেলেছিলেন ধোনি, করেছিলেন ১২ রান। তাতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিউয়ারশিপ পৌঁছায় ১ কোটি ৭০ লাখে, যা ছিল সে মৌসুমের সর্বোচ্চ। এমনকি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের ১ কোটি ৬০ লাখ ভিউয়ারকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ধোনির সেই ৩ বল স্থায়ী ইনিংসটা!
টিএএম মিডিয়া রিসার্চ বলছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরও ধোনি দিনে গড়ে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ১৪ ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম ধরে রেখেছেন। ২০২৪ সালে তিনি ৪২টি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন, যা অমিতাভ বচ্চন (৪১) ও শাহরুখ খানের (৩৪) চেয়েও বেশি।

মহেন্দ্র সিং ধোনি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৭ দিন ক্যাম্পে থেকে ১০–১২ দিন অনুশীলন, হতাশ ক্রিকেটাররা
  • অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ 
  • ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা