প্রধানমন্ত্রীর দলীয় প্রধান হওয়া না–হওয়া দলের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত: সালাহউদ্দিন
Published: 22nd, July 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর রাজনৈতিক দলের প্রধান হতে পারবেন কি পারবেন না, বিষয়টি দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের বিষয় হওয়া উচিত। এখানে বিধিনিষেধ আরোপ করা ব্যক্তির অধিকারের সঙ্গে জড়িত।
আজ মঙ্গলবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৭তম দিনের আলোচনা শেষে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে সংসদীয় নেতা হবেন, এ বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত। কিন্তু পার্টির প্রধানকেই যে প্রধানমন্ত্রী করা হবে, এমন তো কোনো কথা নেই। বিষয়টি ব্যক্তির অধিকারের সঙ্গেও জড়িত। গণতান্ত্রিক চর্চায় যিনি প্রধানমন্ত্রী হলেন, তিনি কয়েক দিন পরে পার্টি প্রধান না-ও থাকতে পারেন। বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেবে দল অথবা জোট।
এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই নেতা বলেন, বিষয়টি উন্মুক্ত থাকা ভালো। শুধু পার্টির প্রধান হওয়ার কারণে কোনো ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বিরত রাখা ঠিক হবে না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কমিশন র্যাঙ্কড চয়েসের (পছন্দের ক্রমানুসারে ভোট) প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এখানে যেহেতু সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে, সেটা নিরসনের জন্য শেষ পদ্ধতি হিসেবে আমরা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুসরণের কথা বলেছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি বা নিয়োগ কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হলে ভালো। কিন্তু হয়তো কমিটি একমত হতে পারবে না। সে জন্যই বিএনপি ত্রয়োদশ সংশোধনীর কথা বলেছে।
দিনের সর্বশেষ আলোচ্যসূচির মধ্যে ছিল সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়টি। এ আলোচনায় বিএনপি আজ অংশ নেয়নি। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিএনপি পরবর্তী আলোচনায় মতামত জানাবে।
বিএনপি ছাড়াও আজকের আলোচনায় অংশ নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নতুন বই প্রকাশিত
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নতুন বই ‘অ্যা ফ্র্যাকচারড পাথ: চ্যালেঞ্জেস অব ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকাশিত হয়েছে। এ মাসেই দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) বইটি প্রকাশ করেছে।
ইউপিএলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বইটির বিষয়বস্তুও উল্লেখ করা হয়েছে।
গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ কোন পথে যাবে, দেশে গণতন্ত্র আর জবাবদিহি প্রতিষ্ঠিত হবে নাকি দীর্ঘমেয়াদি নৈরাজ্য গ্রাস করবে? পৃথিবীর আরও যেসব রাষ্ট্র নানা সময়ে এমন সংকটের মুখে পড়েছে, তারা কীভাবে উত্তরণ করেছে? কোন কোন রাষ্ট্র উত্তরণে আদৌ সক্ষম হয়নি? বইটিতে লেখক অধ্যাপক আলী রীয়াজ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত অর্ধশতকে যে দেশগুলো এই রূপান্তরে সফল বা ব্যর্থ হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা লেখক এই বইটিতে বিশ্লেষণ করেছেন।
অন্যদিকে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর সংবিধান সংস্কার কমিশন এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব পালনের সুবাদে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বাংলাদেশের রাজনীতির সংকটময় মুহূর্তে অন্যতম কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থেকে বাংলাদেশের বিশেষ বাস্তবতাকেও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছেন।
এই বইটিতে লেখক একদিকে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেছেন। আরেক দিকে বাংলাদেশের বিশেষ বাস্তবতার উপলব্ধি তুলে ধরেছেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক, আটলান্টিক কাউন্সিলের নন-রেসিডেন্ট সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (এআইবিএস)-এর প্রেসিডেন্ট। তিনি বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।