মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পুরো দেশ শোকে মুহ‌্যমান। কঠিন এই সময়টা ভুলতে পারছে না কেউ। বুকের ভেতরে তোলপাড় করেছে ক্রিকেটারদেরও। দুয়েকজন নির্ঘুম রাতও কাটিয়েছেন। 

পেশাদারিত্বে কারণে তাদের ২৪ ঘণ্টার ভেতরেই মাঠে নামতে হয়েছে, দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে হয়েছে। তবে মাঠে নামার কাজটা মোটেও সহজ ছিল না লিটন, জাকের, মোস্তাফিজ, শরীফুলদের জন‌্য। বুকে এক আকাশ কষ্ট, পাহাড় সমান ব্যথা নিয়েই ২২ গজে মঙ্গলবার পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। যে ম‌্যাচে স্বাগতিকরা ৮ রানে জয় পায়। তাতে নিশ্চিত হয়ে যায় শিরোপা। 

শোককে শক্তিতে রূপ দিয়ে বাংলাদেশ ম‌্যাচ জিতলেও মনটা উথাল পাতাল করেছে বারবার। ৪৮ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে এই ম‌্যাচের নায়ক ছিলেন জাকের আলী। ম‌্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল জানাতে গিয়ে গলা ভারী হয়ে আসে জাকেরের, “জিনিসটা কঠিন ছিল। গতকাল (পড়ুন পরশু) একটা খুবই.

.. মানে বুক ভারী হয়েই কাটাতে হয়েছে। আসলে এরকম মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কারোই কাম্য নয়। সবার জন্যই দোয়া। ওই সময়েই দোয়া করেছি। যারা নিহত হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আর যারা বেঁচে আছেন, তারা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান।”
শুধু বাংলাদেশ নয় পাকিস্তানের ক্রিকেটারদেরও মন ছুঁয়ে গেছে এই ঘটনা। তাদের দলের একাধিক ক্রিকেটার সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে শোক জানিয়েছেন। গতকাল মাঠে নামার আগে ক্রিকেটার, ম‌্যাচ অফিসিয়ালরা এক মিনিট নিরাবতা পালন করেছেন। কালো আর্মব্রান্ড ধারণ করেছেন সবাই। ম‌্যাচে বাজানো হয়নি কোনো গান।

জাকের যোগ করেন, ‘‘আসলে দল হিসেবে কঠিন ছিল। সবারই মন খারাপ ছিল। কিন্তু যেটা আপনি বললেন, আমরা পেশাদার, তাই মাঠে নামতে হবে। তাই সব কিছু ভুলে মাঠে নেমে আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”

এক ম‌্যাচ হাতে রেখে বাংলাদেশ জিতেছে সিরিজ। আগামীকাল তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে। কয়েকমাস আগেই পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এবার বাংলাদেশ বদলা নিতে পারে কিনা সেটাই দেখার।

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় যুক্তরাজ্যপ্রবাসীসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ১৭ জনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের (প্রথম) ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতে রায় ঘোষণার সময় ৩১ জন আসামি উপস্থিত ছিলেন। মামুনুর রশীদ নামের এক আসামি পলাতক। তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন বিশ্বনাথ উপজেলার সাইফুল আলম, নজরুল আলম, সদরুল আলম, সিরাজ উদ্দিন, জামাল মিয়া, শাহিন উদ্দিন, আবদুল জলিল ও আনোয়ার হোসাইন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ইলিয়াছ আলী, আবদুন নুর, জয়নাল আবেদীন, আশিক উদ্দিন, আশকির আলী, অলিদ মিয়া ওরফে ফরিদ মিয়া ও আকবর মিয়া। তাঁদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে লুৎফুর রহমান, ময়ূর মিয়া, মামুনুর রশিদ, কাউসার রশিদ, দিলাফর আলী, পারভেজ মিয়া, ওয়াহিদ মিয়া, দিলোয়ার হোসেন, আজাদ মিয়া, মুক্তার আলী, আবদুর রকিব, আঙ্গুর আলী, জাবেদ ইসলাম, শফিক উদ্দিন, মখলিস মিয়া, ফিরোজ আলী ও ফখর উদ্দিনকে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়,  ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথের চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিনের জমি থেকে জোর করে রাস্তায় মাটি তুলতে যান যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সাইফুল আলমসহ তাঁর লোকজন। এতে বাধা দেন নজির উদ্দিন, তাঁর চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা সুমেল মিয়া। এ সময় বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সাইফুল আলমের বন্দুক দিয়ে গুলি করলে শাহজালাল উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সুমেল মিয়া নিহত হয়। এ ঘটনায় সুমেলের বাবা ও চাচাসহ চারজন আহত হন।

ওই ঘটনায় নিহত সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ