গাজা ও সিরিয়ায় গত সপ্তাহে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে বিস্মিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, উভয় ক্ষেত্রেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে বিষয়টি ‘সংশোধনের’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিভিন্ন সূত্রের মতে, বিষয়টি দুই নেতার মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জায় ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় ট্রাম্প তৎক্ষণাৎ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি নেতানিয়াহুকে ফোন করে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং হামলাটি ‘ভুল ছিল’ বলে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী যেন একটি বিবৃতি দেন, তা নিশ্চিত করতে চান।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিবি নেতানিয়াহুর মজবুত পেশাদার সম্পর্ক রয়েছে এবং তিনি নিয়মিত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে সিরিয়ায় বোমাবর্ষণ ও গাজার ক্যাথলিক গির্জায় হামলার ঘটনায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন।

একইভাবে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সরকারি ভবন লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলার খবরে ট্রাম্প বিস্মিত হন। এমন এক সময়ে ইসরায়েল এ হামলা চালায়, যখন ট্রাম্প প্রশাসন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে পুনর্গঠনের জন্য কাজ করছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিবি নেতানিয়াহুর মজবুত পেশাদার সম্পর্ক রয়েছে এবং তিনি নিয়মিত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে সিরিয়ায় বোমাবর্ষণ ও গাজার ক্যাথলিক গির্জায় হামলার ঘটনায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন।

লেভিট আরও বলেন, উভয় ঘটনাতেই প্রেসিডেন্ট দ্রুত প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কথা বলেন।

লেভিট পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সিরিয়ায় উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেন, ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছেন। দেশটির সাবেক বিদ্রোহী নেতা ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।

ট্রাম্প এ মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি এই নেতার সঙ্গে এক জটিল সম্পর্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পরিচিতদের মতে, শক্তিশালী মিত্র হলেও ব্যক্তিগতভাবে তাঁরা খুব একটা ঘনিষ্ঠ নন এবং মাঝেমধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস তাঁদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

তবু চলতি গ্রীষ্মে ট্রাম্প যখন ইরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার পক্ষে অবস্থান নেন তখন মনে হয়েছিল, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আগের চেয়ে আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউসের ব্লুরুমে এক নৈশভোজে নেতানিয়াহু নাটকীয়ভাবে ট্রাম্পের হাতে একটি চিঠি হস্তান্তর করেন, যেখানে তিনি শান্তিতে ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন বলে জানান।

ট্রাম্প আশা করেছিলেন, নেতানিয়াহুর এই চার দিনের ওয়াশিংটন সফরে গাজায় যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি হবে, যাতে হামাসের হাতে আটক বন্দীদের মুক্তি এবং অবরুদ্ধ গাজায় আরও বেশি মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে। সফরের আগে ট্রাম্প বারবার বলেছিলেন, তিনি আশা করছেন ওই সপ্তাহেই একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসবে।

কিন্তু কোনো সমঝোতার ঘোষণা ছাড়াই নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যান। মধ্যস্থতাকারীরা সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি ও বন্দী মুক্তির প্রস্তাব হামাসের কাছে জমা দিয়েছেন প্রায় এক সপ্তাহ হতে চলল। সবাই গাজার হামাস নেতৃত্বের জবাবের অপেক্ষায় আছেন।

সিএনএনকে দুটি সূত্র জানিয়েছে, হামাস জানিয়েছে, তারা ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দী মুক্তির চুক্তিতে পৌঁছাতে দিনরাত নিরলসভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।

গাজায় চলমান যুদ্ধ আরও প্রাণহানি ঘটাচ্ছে। বিশেষ করে গত সপ্তাহে গির্জায় বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা ট্রাম্পকে গভীরভাবে চিন্তিত করেছে।

ট্রাম্পের প্রেস সচিব লেভিট বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে এ সংঘাত বহুদিন ধরে চলছে এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তা আরও নৃশংস হয়ে উঠেছে। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন, প্রতিদিন আরও মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট কখনোই এমন মৃত্যু দেখতে চান না। তিনি চান এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক।’

লেভিট আরও বলেন, প্রশাসন গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে যেভাবে উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। যদিও ২৫টি পশ্চিমা দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসরায়েলকে ‘ফোঁটায় ফোঁটায় ত্রাণ’ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ এনে সমালোচনা করেছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে এক হাজারের বেশি মানুষ ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন।

লেভিট বলেন, এই প্রেসিডেন্টের কারণেই মূলত গাজায় কিছুটা হলেও ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। তিনি চান, বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হোক, যাতে আর কারও মৃত্যু না ঘটে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’

কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।

সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।

নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ