১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনলেও রিটার্নের কাগজ দেখাতে হবে না, সুবিধা কী হলো
Published: 23rd, July 2025 GMT
মধ্যবিত্তের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় বিনিয়োগ উপাদান সঞ্চয়পত্র। এখানে টাকা মার খাওয়ার ঝুঁকি নেই। মাস বা বছর শেষে ভালো মুনাফা পাওয়া যায়। তাই অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার সংসার খরচের চাপ কমাতে কিছু টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনে রাখে। আবার চিকিৎসার খরচের মতো হঠাৎ দুর্যোগেও সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ বেশ কাজে লাগে। সন্তানের পড়াশোনার খরচও অনেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় চালান।
মধ্যবিত্তের কথা চিন্তা করে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দিয়েছে সরকার। জুনে ঘোষিত বাজেটে এই সুবিধা দেওয়া হয়। এরপর জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে এ নির্দেশনা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সুবিধা কী
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনলে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। এই ছাড় দেওয়ায় বেশ কিছু সুবিধা পাবেন ক্রেতারা। এগুলো হলো—
১.
২. করের ঝামেলা ছাড়া নিরাপদ সঞ্চয়ের সুযোগ বাড়ল। অনেকেই রিটার্ন না দেওয়ার ভয়ে বিনিয়োগ করতেন না। এখন সেই ভয় দূর হয়েছে, ফলে নিরাপদ ও লাভজনক বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।
৩. নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা হলো। নারীরা পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনেন। অনেক নারী, যাঁদের আয় নিয়মিত নয় বা আয়কর রিটার্ন নেই, তাঁরা এখন সহজে সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।
৪. ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা বাড়বে। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য নির্দিষ্ট আয়ের উৎস হিসেবে সঞ্চয়পত্রের গুরুত্ব আরও বাড়বে। ভবিষ্যতের জরুরি খরচ (শিক্ষা, চিকিৎসা ও অবসরকাল) মেটাতে এই বিনিয়োগ কার্যকর।
৫. কিছুদিন আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমানো হয়েছে। এতে সঞ্চয়পত্র–বিমুখ হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রিটার্ন জমা প্রমাণপত্রে ছাড় দেওয়ায় এখন মধ্যবিত্তরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন। রিটার্ন জমার ন্যূনতম খরচ (আইনজীবীর সম্মানী, কাগজপত্র জোগাড়ের খরচ ইত্যাদি) কমবে।
কত ধরনের সঞ্চয়পত্র আছে
বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে থাকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। এগুলো হলো—পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র। তবে পরিবার সঞ্চয়পত্রের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। শুধু নারীরা এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন।
মুনাফা কত
গত জুলাই থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের জন্য সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফার হার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কিছুটা কমানো হয়েছে। নতুন হার অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।
দেখা যাচ্ছে, কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার তুলনামূলকভাবে বেশি। বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার কম। এ ক্ষেত্রে সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ পরিমাণ বা এর কম হলে সুদহার বেশি হবে। ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার কমে আসবে।
সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো পরিবার সঞ্চয়পত্র। এ সঞ্চয়পত্রে এত দিন সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছর মেয়াদপূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে এ মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ করা হয়েছে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পঞ্চম বছর শেষে অর্থাৎ মেয়াদপূর্তিতে মুনাফা ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মেয়াদপূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এ ছাড়া তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ত ল খ ট ক র কম ব ন য় গ ম ন ফ র হ র ১১ দশম ক ১০ ল খ ট ক পর ব র স র জন য র খরচ
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুর নির্বাচন অফিসে রোহিঙ্গা আটক
শেরপুর ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে গিয়ে এক রোহিঙ্গা আটক হয়েছেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আটকের পর তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।
আটক ব্যক্তির নাম মো. আমিন। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তার বাবার নাম জাহিদ হোসেন।
আরো পড়ুন:
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থায়ী প্রত্যাবাসনে ‘বাস্তব পদক্ষেপ’ চায় ওআইসি
৪০ দেশের প্রতিনিধিদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আলম মিয়া নাম ব্যবহার করে উখিয়ার টাংহালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক ব্যক্তি এনআইডি করতে শেরপুর জেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেন। সেখানে তিনি বাবার নাম আলী হোসেন উল্লেখ করেন এবং শেরপুর পৌরসভার কসবা মোল্লাপাড়া ও শিবুত্তর এলাকার বাসিন্দা হিসেবে দাবি করেন। কথাবার্তা ও নথিপত্র যাচাইয়ের সময় সন্দেহ হলে কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় ওই ব্যক্তি নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন।
শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “তার কাগজপত্র দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। তার ভাষাগত বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন।”
আটক মো. আমিন বলেন, “আমি কক্সবাজারের উখিয়ার টাংহালি ক্যাম্পে থাকি। এ দেশের নাগরিক হওয়ার আশায় ভোটার আইডি কার্ড করতে শেরপুরে এসেছিলাম। কাজের জন্য পরিচয়পত্র পেলে সুবিধা হবে ভেবেই আলম নামে আবেদন করেছি।”
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, “রোহিঙ্গা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে স্থানীয় কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা চলমান।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ