কুবিতে ‘হাতে-কলমে’ শিক্ষা নিতে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা মেলা
Published: 23rd, July 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তা উন্নয়ন কোর্সের অংশ হিসেবে একটি বিশেষ উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করেছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাডমিন্টন কোর্টে এ মেলা আয়োজন করা হয়।
এ মেলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে এসে বাস্তব ব্যবসায়িক ধারণা তৈরি, পরিকল্পনা ও উপস্থাপনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। নয়টি দলীয় স্টলে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে তাদের নিজ নিজ ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করেন এবং নিজেদের পণ্য বিক্রি করেন।
আরো পড়ুন:
কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদেরও বৃত্তির সুযোগ চান শিক্ষকেরা
রাকসুর তফসিল ঘোষণার দাবিতে ছাত্রশিবিরের অবস্থান কর্মসূচি
পণ্যের মধ্যে ছিলো- বিভিন্ন ধরনের খাবার, জুয়েলারি, রূপচর্চার পণ্যসহ আরো অনেক কিছু। মেলায় ক্রেতা হিসেবে এসেছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিরাও এসে পণ্য ক্রয় করেছেন।
দলীয় স্টলে অংশ নেওয়া ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তানভীহুল ইসলাম বলেন, “আমাদের উদ্যোক্তা উন্নয়ন কোর্সের অংশ হিসেবে আজ অনুষ্ঠিত হলো উদ্যোক্তা মেলা। যেখানে প্রতিটি দল তাদের নিজস্ব ব্যবসায়িক আইডিয়া নিয়ে কাজ করছে। আমাদের দল এবারে একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করেছে। আমরা চা বিক্রিকে শুধু একটি পণ্য নয়, বরং একটি স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক উদ্যোগ হিসেবে উপস্থাপন করছি।”
তিনি বলেন, “আমরা পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যসম্মত চা (মোরিঙ্গা, গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি, মাসালা চা এবং তুলসি চা) পরিবেশন করছি, যা কেবল স্বাদের জন্য নয়, বরং শরীরের জন্যও উপকারি। আমরা শুধু চা পরিবেশন করিনি, বরং প্রতিটি চায়ের উপকারিতা ব্যাখ্যা করে একটি ইনফরমেটিভ ও ইভল্যুশন-ভিত্তিক প্রেজেন্টেশন দিয়েছি। আমাদের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘ভিন্ন স্বাদের চা, একটাই লক্ষ্য- সুস্থ জীবন!”
আরেক শিক্ষার্থী ট্রপা বড়ুয়া বলেন, “আমরা জুয়েলারি স্টল দিয়েছি। কারণ আমরা মনে করি প্রতিটা মেয়ে সুন্দর। আর সেই সৌন্দর্য আরো বেড়ে যায়, যখন তারা জুয়েলারি পরিধান করেন। সেজন্য আজ আমাদের টার্গেট ক্রেতা হচ্ছে মেয়েরা এবং আমাদের পণ্যের মূল্য আমরা যতটুকু সম্ভব কম রেখেছি। আমরা যাতে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে পারি, আজকের মেলা তারই একটি ছোট অংশ।”
মেলায় পরিদর্শনে এসে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাকসুদ নূর বলেন, “আজ ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এই আয়োজন থেকে আমি আশ্চর্য হয়েছি এবং অনেক বেশি আপ্লুত হয়েছি। কারণ আজ অনেক তরুণ উদ্যোক্তাদের মিলনমেলা হয়েছে। আমি মনে করি, সফলভাবে তারা এ আয়োজনটি সম্পন্ন করতে পেরেছে; আয়োজকদের ধন্যবাদ। তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য এ ধরনের আয়োজন বেশি বেশি হওয়া উচিত।”
উদ্যোক্তা উন্নয়ন কোর্সের শিক্ষক ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তমা সাহা বলেন, “এ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তা বিষয়ে শেখার পাশাপাশি বাস্তব জীবনের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। বাস্তব জীবনের যেকোনো কঠিন বিষয় কিভাবে অতিক্রম করা যায়, তার বাস্তবিক ধারণা দেওয়ার জন্য এই আয়োজন। আমার উদ্দেশ্য ছিল, তারা যেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে মোকাবিলা করতে পারে। তাই পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি বাস্তবিক জ্ঞান দেওয়া, যাতে তারা সেই সময় নিজেদের শক্ত রাখতে পারে। এই বাস্তবিক জ্ঞানগুলো তারা কোনো না কোনো ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চিম্বুকে ভালুকের আক্রমণে একজন আহত, ৫ বছরে ১০ জন হামলার শিকার
বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ায় আজ শুক্রবার সকালে ভালুকের আক্রমণে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০২১ সাল থেকে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। গত পাঁচ বছরে ১০ জন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের অধিকাংশ ম্রো জনগোষ্ঠীর। ভালুকের কারণে আহত হওয়ার ঘটনায় আবেদন না করায় এই পর্যন্ত কেউ ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়ার কাইনপ্রে ম্রো (৩৫) পাড়া থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে জুমখেতে কাজ করতে যান। সেখানে জুমের পাশে কলাবাগানে কাজ করার সময় হঠাৎ কালো রঙের একটি ভালুক তাঁর ওপর আক্রমণ করে। ভালুকটি তাঁর পেটে ও মুখে আঘাত করতে থাকে। তাঁর চিৎকারে আশপাশে জুমের লোকজন এগিয়ে আসেন।
আহত কাইনপ্রে ম্রোর ভাই তনরুই ম্রো জানিয়েছেন, আশপাশের লোকজনের এগিয়ে আসা দেখে ভালুকটি কাইনপ্রে ম্রোকে ছেড়ে দিয়ে বনে পালিয়ে যায়। তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে কাইনপ্রে ম্রোকে উদ্ধার করে দুপুরে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পোড়াবাংলা পটোসিংপাড়া জেলা শহর থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে। পাড়াটি রুমা উপজেলার গালেংগ্যা ইউনিয়নে পড়েছে।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আহত কাইনপ্রে ম্রোর পেটে ও মাথায় গভীর ক্ষত আছে। এ জন্য তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, থানচি তিন্দু ইউনিয়নে মেনপই ম্রো নামের একজন ২০২০ সালের ২৮ এপ্রিল প্রথম ভালুকের আক্রমণের শিকার হন। ওই একজনসহ ২০২১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৫ বছরে ১০ জন ভালুকের আক্রমণে আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে থানচিতে দুজন, রুমাতে তিনজন, আলীকদমে একজন ও বান্দরবান সদর উপজেলা চিম্বুক পাহাড়ে চারজন রয়েছেন। কারও মৃত্যু না হলেও তাঁদের মধ্যে কেউ চোখ হারিয়েছেন, কারও হাত–পা পঙ্গু হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা একজন মারমা ও একজন খুমি ছাড়া অন্যরা সবাই ম্রো।
বন বিভাগের বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আবদুর রহমান জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বনাঞ্চল কেটে উদ্যান বাগান ও জুমচাষ করা এলাকাগুলোতে ভালুকের আক্রমণ বেড়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বাগানের কারণে ভালুক ও অন্যান্য বন্য প্রাণীরা আবাসস্থল ও বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যসংস্থান হারাচ্ছে। জীবনের তাগিদে তারা মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি হতে বাধ্য হচ্ছে। বন নির্ভর মানুষকে অন্যভাবে আয়ের সংস্থানের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সংরক্ষণ না হলে বন্য প্রাণীর সঙ্গে সহাবস্থান গড়ে উঠবে না। এভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা না হলে বন্য প্রাণী ও মানুষ কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না।