‘তিনি হেঁটে আমার কয়েক ফুট সামনে আসেন। আর খুব কর্তৃত্বপূর্ণ ভঙ্গিতে দাঁড়ান। আমার দিকে এমনভাবে তাকান, যেন গোপন কিছু জানেন। এটি ছিল অদ্ভুত, তিনি যেন তাচ্ছিল্যের হাসি দিচ্ছিলেন। এটা আমার কাছে হুমকি বলে মনে হচ্ছিল।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে এই কথাগুলো বলছিলেন মারিয়া ফার্মার নামের এক নারী।

মারিয়া ফার্মারের পরিচয়—তিনি মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে প্রথম যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন। এপস্টেইন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কুখ্যাত নারী নিপীড়নকারী। শিশু-কিশোরীদের পাচার ও জোর করে যৌনদাসীর কাজ করানোর মতো অভিযোগে কারাবাসে ছিলেন তিনি। নানা অভিযোগের বিচার চলাকালে ২০১৯ সালে কারাগারে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।

ট্রাম্পকে নিয়ে মারিয়া যেসব কথা বলেছেন, তা এপস্টেইনের সূত্রেই। সেই ১৯৯৫ সালের কথা। তখন মারিয়ার বয়স ২৫ বছর। মারিয়ার ভাষ্যমতে, এক রাতে তাঁকে নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানে নিজের অফিসে ডেকে নেন এপস্টেইন। সেখানেই ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। সেদিন রাতের ঘটনা গত সোমবার সংবাদমাধ্যম সিএনএনের ‘এরিন বার্নেট আউট ফ্রন্ট’ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছেন তিনি।

সিএনএনের ওই অনুষ্ঠানে মারিয়া ফার্মার বলেন, এপস্টেইনের অফিসে গেলে তাঁকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। সে সময় ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। ট্রাম্প আগে থেকেই সেখানে ছিলেন। তিনি যখন মারিয়ার দিকে এগিয়ে যান, তখন এপস্টেইন এসে বলেন, ‘ওহ্‌ না, ও আপনার জন্য এখানে আসেনি। আমার পেছনে আসুন।’ এরপর তিনি ট্রাম্পকে আরেকটি কক্ষে নিয়ে যান।

এ সময় মারিয়ার মনে প্রশ্ন জাগে, ওই কক্ষে কেউ আছেন কি না। মারিয়া বলেন, ট্রাম্প ওই কক্ষে যাওয়ার সময় তাঁকে বলতে শোনেন, ‘আমি মনে করেছিলাম ওর বয়স ১৬।’ ট্রাম্পের মুখে এমন কথা শুনে খুবই অস্বস্তিতে পড়ে যান মারিয়া। তিনি বলেন, ‘তখন আমার ছোট বোনের বয়স ছিল ১৫ বছর। তাই এ কথা আমার মোটেও ভালো লাগেনি।’

আরও পড়ুননারী নিপীড়নকারী এপস্টেইন–ঝড়ে এবার কি সত্যিই বিপদে পড়তে যাচ্ছেন ট্রাম্প১৬ জুলাই ২০২৫

এপস্টেইন–সংক্রান্ত নথিতে নিজের নাম থাকার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প। তবে ওই নথিগুলো প্রকাশও করেননি তিনি। সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে তিনি বলেছিলেন, ‘এগুলো পুরোনো খবর। এগুলো নিয়ে বছরের পর বছর ধরে কথা হচ্ছে। এমনকি এপস্টেইনের আইনজীবীও বলেছিলেন, এই পুরোনো খবরের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’

এরিন বার্নেট আউট ফ্রন্ট অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে নিয়ে মন্তব্যের পর হোয়াইট হাউসের যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক স্টিভেন চেয়াং সিএনএনকে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প কখনোই এপস্টেইনের অফিসে যাননি। বরং তিনি তাঁর ক্লাব থেকে এপস্টেইনকে বের করে দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে মারিয়া বলেন, এ বিবৃতি মিথ্যা। সেদিন রাত ৯টার সময় এপস্টেইনের অফিসে ছিলেন ট্রাম্প। সে সময় তাঁরা খুব ভালো বন্ধুও ছিলেন।

আরও পড়ুনট্রাম্পের বিয়েতে গিয়েছিলেন যৌন নিপীড়ক এপস্টেইন, নতুন ছবি প্রকাশ১৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের

খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। দোষীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার সিপিজের এক টুইটে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি মিলন ত্রিপুরা ১৭ জুলাই একটি বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন ও ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ