খায়রুল হকের বিচার কীভাবে হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছি: জয়নুল আবেদীন
Published: 24th, July 2025 GMT
সরকার ইচ্ছা করলে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে অনেক আগেই গ্রেপ্তার করতে পারত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেছেন, ‘এখন খায়রুল হকের বিচার কীভাবে হয়, সেটা দেখার অপেক্ষায় আমরা আছি। সরকারপ্রধানকে বলব, অনতিবিলম্বে এবং সবকিছুর আগে খায়রুল হকের বিচার এমনভাবে করবেন, যেন মানুষ বুঝতে পারে—এ দেশে অবিচার করলে, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করলে, কী পরিণতি হয়।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে ব্রিফিংয়ে আসেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম ও আইনজীবী আনিসুর রহমান রায়হান।
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা এর মধ্যে একটা সভা করেছিলাম, কেন খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? আমরা তখন বলেছিলাম সরকারের জানা আছে, খায়রুল হক কোথায় আছেন। আজকে ঠিকই দেখলাম যখন একটা বড় রকমের দুর্ঘটনা দেশে ঘটল, যখন পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান দিয়ে…পাইলট ও কোমলমতি শিশু…দেশের মধ্যে একটা অরাজক অবস্থা সৃষ্টি হলো, সে অবস্থায়। ইচ্ছা করলে সরকার এই খায়রুল হককে অনেক আগেই গ্রেপ্তার করতে পারত, আমাদের বিশ্বাস আগেও বলেছি এখনো বলি। তখনো বলেছি খায়রুল হক পালাতে পারেনি এই দেশেই আছে, সরকার ইচ্ছা করলে গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু তারপরে এত দিন গ্রেপ্তার করে নাই। কিন্তু আজকে যে গ্রেপ্তার করেছে—এ জন্য আমরা অবশ্যই বর্তমান সরকারপ্রধানকে ধন্যবাদ জানাব।’
‘খায়রুল হকের কারণে আয়নাঘর হয়েছে’
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন অভিযোগ করে বলেন, ‘এই জাতি এবং দেশ এত দিন পর্যন্ত যে জিনিসগুলো দেখেছে, এই খায়রুল হকের কারণে একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হয় নাই। শুধু তা–ই নয়, এই খায়রুল হকের কারণে আয়নাঘর হয়েছে। এই খায়রুল হকের কারণে হাজার হাজার মায়ের কোল খালি হয়েছে। এই খায়রুল হকের কারণে লাখ লাখ অবৈধ মামলা হয়েছে।.
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘জিয়া পরিবারের ওপরে যারাই হাত দিয়েছে, তাদেরই হাত পুড়ে গেছে। এরশাদ হাত দিয়েছিল, এরশাদের হাত পুড়ে গেছে। মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দীন হাত দিয়েছিল, তাদের এই দেশ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। আর ফ্যাসিস্ট সরকার হাত দিয়েছিল, তাদেরও বিদায় নিতে হয়েছে এবং চরমভাবে বিদায় নিতে হয়েছে। এখন খায়রুল হকের বিচার কীভাবে হয়, সেটা দেখার অপেক্ষায় আমরা আছি। এই খায়রুল হক আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন।…এর জন্য খায়রুল হক দায়ী। কোনো অবস্থাতে দায় খায়রুল হক এড়াতে পারেন না। তাই সরকারপ্রধানকে বলব অনতিবিলম্বে এবং সবকিছুর আগে খায়রুল হকের বিচার এমনভাবে করবেন, যেন জনতা বুঝতে পারে এই দেশের মধ্যে অবিচার করলে, একটা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করলে, কী হয়।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর র ল হকক আইনজ ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মিনহাজ মান্নান
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বর্তমান পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
এ রায়ের ফলে ওই মামলা থেকে মিনহাজ মান্নান অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মঈন ফিরোজী।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ওই মামলায় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান ইমনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পলাতক অপর চার আসামি হলেন সুইডেনপ্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরিপ্রবাসী সামিউল ইসলাম খান ওরফে স্যাম ওরফে জুলকার নাইন, আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী।
দিদারুল ইসলাম ও মিনহাজ মান্নান নারাজি আবেদন দিলে তা নামঞ্জুর হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে মিনহাজ মান্নান একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মিনহাজ মান্নানের ক্ষেত্রে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে মিনহাজ মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৫ মে মামলাটি করা হয়। ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এতে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ইসলামকে আসামি করা হয় এবং আটজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন১০ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর০৪ মার্চ ২০২১এ মামলায় কারাবন্দী মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ কারণে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, অভিযোগ গঠনের সময় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির ছিলেন দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান। তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। সেদিন কার্টুনিস্ট কিশোর আদালতে হাজির না থাকায় তাঁর জামিন বাতিল করা হয়।
আরও পড়ুনআজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত লেখক মুশতাক২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১