এ বি এম খায়রুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে: মির্জা ফখরুল
Published: 24th, July 2025 GMT
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এ বি এম খায়রুল হকের অপরাধ বিবেচনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকেরা সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি এ দাবি জানান। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বিলম্বে হলেও বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, সে জন্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে তাঁকে তাঁর অপরাধ বিবেচনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন ওই পবিত্র জায়গায় বসে রাষ্ট্র ও জনগণের ক্ষতি করতে না পারে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের একজন বড় শত্রু গ্রেপ্তার হলো। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাতে চাই, বাংলাদেশের একজন বড় শত্রু গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি দেশের বিশাল ক্ষতি করেছেন। তিনি সাংবিধানিক পদে থেকে এবং সেই পদ ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ করার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি সেই জায়গায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ বি এম খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন এবং পরবর্তীকালে যে পূর্ণাঙ্গ রায় দেওয়া হয়, তাতে আকাশপাতাল তফাত ছিল। সংক্ষিপ্ত যে রায়টা দিয়েছিলেন, সেটাও আমরা মনে করি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গেছে।’ তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংকট তৈরিতে এ বি এম খায়রুল হক দায়ী ছিলেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এর জন্য তিনি শতভাগ দায়ী।
এ বি এম খায়রুল হকের কী ধরনের শাস্তি চান, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা (শাস্তির বিষয়) তো আমার বলা ঠিক হবে না। আইনগতভাবে যে বিধানগুলো আছে, সেই বিধানগুলো দেখে তাঁকে প্রসিকিউট করে আইনের বিধান নিশ্চিত করতে হবে। তবে তাঁকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই জায়গায় বসে রাষ্ট্রের ক্ষতি করতে না পারে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আরও যারা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ বি এম খায়রুল হকের রায়ের পরপরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটা বাতিল হলো এবং বাংলাদেশে পরবর্তীকালে যত রকমের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, জাতি তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিচার বিভাগ সবচেয়ে বড় জায়গা, যেখানে মানুষের আস্থা থাকে। সেই আস্থার জায়গাটা তিনি ধ্বংস করেছেন শুধু তাঁর রাজনৈতিক অভিলাষ থেকে। যেটা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে।’
শিশু একাডেমি ভেঙে ফেলার আলোচনা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে হাইকোর্টের পাশে শিশু একাডেমি ভবনটিকে ভেঙে ফেলার জন্য কথাবার্তা চলছে বা এ ধরনের প্রক্রিয়া বা প্রস্তাব নেওয়া হচ্ছে। আমরা এটার বিরোধিতা করি।’ তিনি বলেন, ‘আমি বিরোধিতা করি এ কারণে যে এটা শিশুদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতিষ্ঠান, যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের বিভিন্ন রকমের কার্যক্রম, তাদের (শিশুদের) গঠন, তাদের বেড়ে ওঠা, তাদের মনমানসিকতা তৈরি করা, তাদের এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিজসহ (শিক্ষার বাইরের সৃজনশীল কার্যক্রম) প্রভৃতি ব্যাপারে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং তিনিই প্রথম শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সারা দেশে এর শাখা রয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠাকে এখান থেকে সরানোটা আমি মনে করি একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। এ ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, আমরা চাই না, শিশু একাডেমি ভবনটি সেই জায়গা থেকে স্থানান্তরিত করা হোক বা অন্য জায়গা নেওয়া হোক। এটা আমার মনে হয় জাতি গঠনের ব্যাপারে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম এক ড ম কর ছ ন ব এনপ সরক র ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কোনো শক্তি বা হুংকার দিয়ে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। জনগণ যদি গণতন্ত্রের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, রাজনৈতিক সংস্কার কার্যকর হবে এবং লুণ্ঠিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ ফেরত আসবে।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন
বাগেরহাটে হরতাল প্রত্যাহার, নির্বাচন অফিস ঘেরাওয়ের ঘোষণা
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের পক্ষে জেগে উঠলে কোনো শক্তিই নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঠেকাতে পারবে না। গণতন্ত্র থাকলে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে, রাষ্ট্রের সম্পদ সুরক্ষিত থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে এবং জনগণের আস্থা অর্জন করে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন, হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান, সহ-সভাপতি শাহিনুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এসএম রেজা বিপুল প্রমুখ।
নেতাকর্মীরা এ সময় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলীয় কার্যক্রমকে আরো বেগবান করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সংগঠনকে সক্রিয় করে জনগণের মাঝে বিএনপিকে শক্তিশালীভাবে উপস্থাপনের আহ্বান জানান।
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী