বাংলাদেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশটিতে নারী ক্ষমতায়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ক্ষুদ্র কৃষকদের সহায়তা এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর পরিবর্তনের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তিমূলক লক্ষ্য অর্জন ও টেকসই উন্নয়নের মূলধন গঠনের লক্ষ্যে ‘অরেঞ্জ বন্ড’ ও এর শরীয়া সম্মত অংশীদার ‘অরেঞ্জ সুকুক’ বন্ড চালু করার একটি বিশেষ সুযোগ রয়েছে।

‘অরেঞ্জ বন্ড’ এবং ‘অরেঞ্জ সুকুক’ এর এই দ্বৈত পদ্ধতি বাংলাদেশকে এই উদ্ভাবনী আর্থিক প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ অরেঞ্জ বন্ড: অন্তর্ভুক্তিমূলক স্থানীয় প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বিশ্বব্যাপী মূলধন সংগ্রহ’ শীর্ষক এক গণমাধ্যম অবহিতকরণ সভায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইআইএক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক দুরৃরীন শাহনাজ। আরও বক্তব্য রাখেন আইআইএক্স বাংলাদেশের পরিচালক দেবাশিস রায় এবং আইআইএক্স বাংলাদেশের বিশ্লেষক বাশার রহমান।

বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগে ভূমিকা রাখা ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট এক্সচেঞ্জ (আইআইএক্স) এই সভার আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশের উন্নয়নে অরেঞ্জ বন্ড এবং অরেঞ্জ সুকুক কীভাবে আরও লিঙ্গ-সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে তা তুলে ধরা হয়।

স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক দুরৃরীন শাহনাজ বলেন, “অর্থনৈতিক অগ্রগতি যদি ন্যায়বিচার, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বা জলবায়ু কর্মের সঙ্গে সংযুক্ত না হয়, তাহলে তা টেকসই হয় না। আর এখানেই ‘অরেঞ্জ বন্ড’ এর ভূমিকা। এর মূল লক্ষ্য- বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তিতে সমতা, অন্তর্ভুক্তি ও জলবায়ু সহনশীলতা তৈরি করা। এই কারণেই IDCOL–এর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রথম অরেঞ্জ বন্ড সিরিজ গঠনের জন্য ইতিমধ্যে একটি ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রোগ্রাম চালু করার কাজ চলছে, যা আগামী কয়েক বছরে বাস্তবায়িত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এটি কেবল মূলধন সংগ্রহের বিষয় নয়, বরং পোশাক শিল্প, কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই) এবং আর্থিক পরিষেবার মতো ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে। এমনকি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় নারী, তরুণ এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে সহায়তা করবে। তিনি যোগ করেন, আইআইএক্স-এর এরকম জনকল্যাণমূলক কাজে এগিয়ে এসেছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বেসরকারি খাতে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে আইআইএক্স এখন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে অরেঞ্জ বন্ড এবং অরেঞ্জ সুকুক ইস্যুর লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি ব্র্যাক‑ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক এবং প্রাণ‑আরএফএল গ্রুপের সঙ্গে একটি লেটার অব ইন্টেন্ট স্বাক্ষর করেছে এবং আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা চলছে।

অনুষ্ঠানে আইআইএক্স এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অরেঞ্জ ক্যাপিটাল মার্কেট উন্নয়নে সংস্থাটির দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিশ্বব্যাপী এর ইতিবাচক প্রভাব কী হতে পারে তা তুলে ধরা হয়।

ঢাকা/হাসান/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অর ঞ জ স ক ক লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান

জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, “দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।”

আরো পড়ুন:

বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন 

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির 

রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন।”

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, “দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।”

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।”

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান জানান, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তার দল।

তারেক রহমান বলেন, “দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।”

দেশে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক উদাসীনতা প্রকট হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, “নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তাহীন সমাজ নিশ্চয়ই সভ্য সমাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।”

সেজন্য তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলসহ বাংলাদেশের সচেতন নারী সমাজকে তাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করা যাবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জে ড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ