চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শন: ছবি তোলা নিয়ে যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা
Published: 25th, July 2025 GMT
সম্প্রতি চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা কিছু ছবি তুলেছিলেন, যা পরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাইরে পাচার করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা শুক্রবার (২৫ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান’ শিরোনামে একটি লেখা পোস্ট করেন। তিনি লিখেছেন, সফরটি ছিল পুরোপুরি সরকারি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে আয়োজিত। এখানে কোনো ধরনের গোপনীয়তা বা লুকোচুরি ছিল না।
তার পোস্টটি রাইজিংবিডি ডটকমের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা: ১ জনের ৫ বছর কারাদণ্ড
ময়মনসিংহে ব্যবসায়ী হত্যায় ৬ জনের যাবজ্জীবন
“উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান
সম্প্রতি আমি চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শন করি, যেখানে আমার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি প্রিজন ও ডেপুটি জেলার। এ সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ, ধর্মীয় বই পুস্তক এবং নামাজের স্থান নির্ধারণের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ইসলামি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ধর্মীয় শিক্ষার প্রচার এবং নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষাদান করা হতো, যা বন্দি সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।
আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে দেশের ৭০ হাজার বন্দিকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার আওতায় আনার, যা একটি বৃহৎ মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফরের সময় আমি রান্নাঘর, দুপুরের খাবার, হাসপাতাল, পুরুষ, মহিলা, শিশু ওয়ার্ডসহ সব স্থানে পরিদর্শন করেছি। এছাড়া, ভিআইপি বন্দিদের ওয়ার্ড এবং ফাঁসির মঞ্চও পরিদর্শন করি। পরিদর্শনকালে আমার সঙ্গে কোনো ক্যামেরা ছিল না, তবে কারা কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা কিছু ছবি তুলেছিলেন, যা পরবর্তীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাইরে পাচার করা হয়েছে।এটি ছিল একটি অবৈধ প্রচারণা, যা ভুল তথ্য পরিবেশন করেছে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কারা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে, যা প্রশংসনীয়।
এ সফরটি ছিল সম্পূর্ণ সরকারি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে আয়োজিত। পরিদর্শন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আইজি প্রিজন, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের অফিসিয়ালি জানানো হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের গোপনীয়তা বা লুকোচুরি ছিল না। সফরের সময় আমি ভিআইপি ওয়ার্ডে মাত্র দুই বা তিন মিনিট ছিলাম, এবং সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা আমার সঙ্গী ছিলেন। তবুও, এ সংক্ষিপ্ত সময়ে উপস্থিতি থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিকৃত তথ্য রটানো হচ্ছে, যা মূলত একটি কায়েমি সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রের অংশ।
এ প্রচারণা মূলত পরাজিত শক্তির অব্যাহত ষড়যন্ত্রের ফলস্বরূপ। যারা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত, তাদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ আসছে, যা সরকারের শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সমৃদ্ধি অর্জনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য নিয়ে করা হচ্ছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকার এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধতাকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু তারা এতে সফল হবে না। আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় দেশের কল্যাণ এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং সত্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
অতএব, আমি বিনম্রভাবে বলতে চাই, এসব অপপ্রচার অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। এর পেছনে থাকা পরাজিত শক্তির উদ্দেশ্য হল সরকার এবং জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা, কিন্তু আমরা জানি, সত্যের বিজয় অনিবার্য। আমরা আমাদের গঠনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাব, এবং কোনো ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগ দেব না।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট কর মকর ত উপদ ষ ট র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল
দেশের কিছু রাজনৈতিক দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “দেশের কিছু রাজনৈতিক দল এটাকে (পিআর) প্রমোট করে। তারা শপথ করে বসে আছে, পিআর ছাড়া আমরা নির্বাচনে যাব না, কী বলব?”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
আরো পড়ুন:
মানুষের প্রয়োজনে না এলে সেই সংস্কার কাজে আসবে না: ফখরুল
পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি: ফখরুল
স্মরণ সভার আয়োজন করে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।
মির্জা ফখরুল বলেন, “সমস্যা হলো আমাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) নতুন নতুন চিন্তা আসছে, যেগুলো আমাদের দেশে পরিচিত নয়। সংসদে আনুপাতিক হারে নির্বাচন, এটা দেশের মানুষ বোঝেই না। পিআর কী জিনিস? জনগণ এখনো ইভিএমে ভোট দিতে পারে না, বোঝে না। সুতরাং পিআর চিন্তাভাবনা থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”
পার্লামেন্টে জনগণের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা না করলে সমস্যার সমাধান হবে না জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “বাইরে থেকে এসে বসে বা কাউকে নতুন নতুন চিন্তা দিয়ে কিন্তু দেশের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, অবিলম্বে সংস্কারগুলো শেষ করুন। অবিলম্বে জাতীয় সনদ ঘোষণা করুন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “গতকাল (সোমবার) বলেছিলাম, ‘বেদনায় নীল হয়ে যাচ্ছি।’ এটাই বাস্তবতা। কিন্তু এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। আমরা রাজনীতি করতে এসেছিলাম একটা পরিবর্তনের জন্য। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ ১৭০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেল, হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রাণ দিল। জুলাই মাসে প্রায় দুই হাজার প্রাণ দিল তার মূল্যটা কী? দাম কী?”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১২টি বিষয়ে সব দল ঐকমত্য পোষণ করা বিষয়টিকে পজিটিভ হিসেবে দেখেছেন বিএনপি মহাসচিব। এজন্য তিনি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
দেশে সংস্কার বিএনপির হাত ধরে শুরু মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা সংস্কারকে ভয় পাই না, এটাকে সাদরে গ্রহণ করি।”
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) আমাদের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসে জাতীয় নির্বাচনের যে তারিখ নির্ধারণ করেছেন, সে সময়টাতে নির্বাচন দিন। মানুষকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন।”
স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ