Prothomalo:
2025-11-02@06:24:03 GMT

আরেক জুলাইয়ে দাঁড়িয়ে 

Published: 26th, July 2025 GMT

আজ যখন আরেক জুলাইয়ে দাঁড়িয়ে ফিরে তাকাই, অভ্যুত্থানের কথা মনে করি, তখন অনেক স্মৃতিবিস্মৃতির ভিড়ে কেমন যেন ন্যুব্জ অনুভব করি। সম্ভবত সে কারণেই এক বছরে কী আমাদের সামষ্টিক অর্জন, বস্তুনিষ্ঠ বা নৈর্ব্যক্তিকভাবে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা বেশ কঠিন মনে হয়। খুব কাছ থেকে বড় কোনো কিছুকে দেখলে অনেক সময় তাকে তার সমগ্রতায় দেখতে পাওয়া মুশকিল হয়। যাঁরা জুলাই অভ্যুত্থানকে নেতিবাচকভাবে দেখেন, তাঁরাও স্বীকার করবেন যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ইতিহাসের গতিপথ বদলে দেওয়া এক বিরাট ঘটনা। তাই নিজেদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জুলাইকে বিশ্লেষণ করতে গেলে তা অপূর্ণই থাকবে। সম্ভবত আমরা সবাই অন্ধ হয়ে হাতির বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করছি। মাত্র এক বছরের মাথায় ‘জুলাই আমাদের কী দিল’, এই প্রশ্নের নির্মোহ উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। জুলাই ও তৎপরবর্তী একটা বছর যাদেরকে ক্রমাগত ট্রমা দিয়ে গিয়েছে, তাদের পক্ষে তো আরও নয়। তবু চেষ্টা করা জরুরি, সেই চেষ্টাটাই এই লেখায় করছি।

নানা অভিধায় শেখ হাসিনার শাসনকে অভিহিত করা হয়েছে গত ১৬ বছরে। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, শেখ হাসিনার শাসনামল মূলত ছিল একটা মাফিয়ারাজ। একজন দোর্দণ্ড প্রতাপশালী মাফিয়া তখনই একটা সমাজে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়, যখন প্রথাগত প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। ভীতসন্ত্রস্ত মানুষ নিজেকে বাঁচাতে তখন মাফিয়ার শরণাপন্ন হতে, তাকে শাসক হিসেবে মেনে নিতে একরকম বাধ্য হয়। সে অর্থে শেখ হাসিনার তুলনা যতটা চলে হিটলার, মুসোলিনির সঙ্গে, তার থেকে বেশি চলে নরিয়েগা বা নায়েব বুকেলের সঙ্গে। শেখ হাসিনা যে বারবার বিবিধ রীতি ও আইনকে বুড়ো আঙুল দেখাতে পেরেছেন, তা কিন্তু মধ্যবিত্তের একটা বড় অংশের নীরব সম্মতিতেই। যাঁরা মাফিয়াশাসিত সমাজ ও রাষ্ট্রগুলোর ইতিহাস ঘেঁটে দেখেছেন তাঁদের জানার কথা, মাফিয়ার পতনের পরবর্তী যে সময়টা, তা সাধারণত হয়ে থাকে সবচেয়ে সহিংস। একটা বিশাল মাফিয়া নেটওয়ার্ক রাতারাতি অকেজো হয়ে গেলে ছোট ছোট গুন্ডা–মাস্তানেরা আঁধার থেকে আলোতে আসে। আর তারপর শুরু হয় দখল নেওয়ার প্রতিযোগিতা। এলাকার বাজার থেকে দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়—কিছুই সেই কাড়াকাড়ির প্রক্রিয়ার বাইরে থাকে না। ফলে গত এক বছরে এই দখলের প্রতিযোগিতায় সহিংসতা যে চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে, এটা আমাদের অনুমান করতে পারা উচিত ছিল। মনে রাখা দরকার ছিল, আওয়ামী লীগের বাইরে বাকি সবাই গৌতম বুদ্ধ হলে শেখ হাসিনার আপাদমস্তক অগণতান্ত্রিক শাসনের পক্ষে এত অনায়াসে এত বড় অংশের মানুষের নীরব সম্মতি উৎপাদন করা সম্ভব ছিল না। 

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা।  

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান। তাদের মধ্যে অন্যতম জুহি চাওলা। ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’, ‘রামজানে’, ‘ডর’, ‘ইয়েস বস’, ‘ডুপ্লিকেট’সহ আরো কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই জুটি। একসঙ্গে অভিনয় ছাড়াও, এই দুই তারকা বাস্তব জীবনে খুবই ভালো বন্ধু। কেবল তাই নয়, ব্যবসায়ীক অংশীদারও তারা। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

বন্ধু শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন জুহি। এ আলাপচারিতায় স্মৃতিচারণ তো করেছেনই, পাশাপাশি শাহরুখের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

শাহরুখের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “আমি যখন প্রথম ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হই, তখন সহপ্রযোজক বিবেক ভাসওয়ানি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার নায়ক দেখতে আমির খানের মতো।’ আমি শাহরুখকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। দেখি, শাহরুখের চুল চোখের ওপরে নেমে এসেছে। আর সে একেবারেই আমার কল্পনার সেই ‘চকলেট বয়’ নয়! যখন কাজ শুরু করি, তখন বুঝতে পারি, সে একদম নতুন অভিনেতাদের মতো নয়, সে পরিশ্রমী, দিনে তিন শিফটে কাজ করছে।” 

একটি ঘটনা বর্ণনা করে জুহি চাওলা বলেন, “আমার মনে আছে, ‘ইয়েস বস’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়, কোনো দৃশ্য ঠিকমতো লেখা না থাকলে পরিচালক আজিজজি (আজিজ মির্জা) বলতেন, ‘শাহরুখ আসুক, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ রোমান্স আর মজার মিশেলে থাকা দৃশ্যগুলো আমাদের সবচেয়ে ভালো ছিল। সেই সূত্রেই আমরা অনেকগুলো সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছি।” 

শাহরুখের পাশে অবস্থান করলে সাবধান থাকার কথার কথা বলেছেন জুহি। হাসতে হাসতে এ অভিনেত্রী বলেন, “শাহরুখের আশেপাশে থাকলে সাবধানে থাকবেন। কারণ সে কথা দিয়ে আপনাকে যেকোনো কিছু করাতে রাজি করিয়ে ফেলতে পারে। ওর কথাবলার ভঙ্গি এমন যে, আপনি ‘না’ বলতেই পারবে না। আমি ‘ডুপ্লিকেট’ সিনেমা করতে চাইছিলাম না, কারণ সেখানে আমার তেমন কিছু করার ছিল না। আমরা তখন আরেকটি সিনেমার শুটিং করছিলাম, আর শাহরুখ আমাকে সিঁড়িতে বসিয়ে দুই ঘণ্টা বোঝায় এবং আমি সিনেমাটিতে চুক্তিবদ্ধ হই। সে আপনাকে যেকোনো কিছু করতে রাজি করাতে পারে, তাই সাবধানে থাকবেন।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে জুহি চাওলা বলেন, “অফস্ক্রিনে আমাদের সম্পর্কেও উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনোভাবে আমাদের যুক্ত রেখেছেন, এমনকি আইপিএলের মাধ্যমেও। আমাদের বন্ধন কোনো পরিকল্পনার ফল নয়, এটা একেবারেই ভাগ্যের ব্যাপার।” 

শাহরুখ খানের সঙ্গে আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সহ-মালিক জুহি ও তার স্বামী জয় মেহতা। এই দলের পেছনে জুহি বিনিয়োগ করেছেন ৬২৯ কোটি রুপি। বর্তমানে এই দলটির মূল্য আছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি রুপি। শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘রেড চিলিস গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা করেন জুহি। 

১৯৬৫ সালে ২ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহরুখ খান। তার শৈশবের প্রথম পাঁচ বছর কেটেছে ম্যাঙ্গালুরুতে। শাহরুখের দাদা ইফতিখার আহমেদ স্থানীয় পোর্টের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যার কারণে সেখানে বসবাস করেন তারা। শাহরুখের বাবার নাম তাজ মোহাম্মদ খান, মা লতিফ ফাতিমা। 

দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন শাহরুখ খান। তারপর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়াতে গণযোগাযোগ বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। কিন্তু অভিনয় জীবন শুরু করার কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দেন তিনি। তবে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরুর দিকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-তে ভর্তি হন এই শিল্পী। 

১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। 

একই বছর ‘চমৎকার’, ‘দিল আসনা হে’ ও ‘রাজু বান গায়া জেন্টলম্যান’ সিনেমায় অভিনয় করেন শাহরুখ। তার পরের বছর ‘ডর’ ও ‘বাজিগর’ সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জাত চেনান শাহরুখ। তার অভিনয়ের জাদুতে মুগ্ধ হন কোটি ভক্ত; পৌঁছে যান সাফল্যের চূড়ায়। তার অভিনয়ের খ্যাতি আরো বাড়তে থাকে যশরাজ ফিল্মসের সিনেমায় ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন শাহরুখ। যদিও তার এই সফলতার জার্নির গল্প মোটেও সহজ ছিল। আর সে গল্প সবারই জানা। 

অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন শাহরুখ খান। তার মধ্যে মোট পনেরোবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। এর মধ্যে আটবার সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হিন্দি সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন মোট পাঁচবার। তবে শাহরুখ খানের ৩৩ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অধরা ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলতি বছর ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ