নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত
Published: 26th, July 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ এবং অমাবস্যার প্রভাবে ভোলার মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় এই নদীর পানি বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। পানি বাড়ায় সদর, মনপুরা, তজুমদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলার অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, পানিতে বসতঘর, বাড়ির আঙিনা, রাস্তাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর সমান পানিতে তলিয়ে রয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে অনেক স্থানে। অতি জোয়ারের ফলে পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে গেছে।
আরো পড়ুন:
চবির আলাওল হলে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ, ভোগান্তি
চিকিৎসক সংকটে ধুঁকছে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পানিতে চারপাশ ডুবে থাকায় অনেকের ঘরে রান্নার চুলাও জ্বলেনি। মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দুর্গত এলাকায়। পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
ভোলা সদরের ইলিশা এলাকার পানিবন্দি মনোয়ারা রহিমা বেগম বলেন, “দুইদিন ধরে জোয়ারের পানিতে ভাসছি। অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।”
মনপুরা এলাকার বাসিন্দা রিতা রাণী বলেন, “আমাদের এখানে বর্তমানে মাঝা (কোমর) পরিমাণে পানি উঠেছে। অনেক সময় গলা পর্যন্তও পানি ওঠে। আমাদের ঘর পানিতে ডুবে রয়েছে। রান্না করতে না পারায় কষ্টের মধ্যে আছি।”
শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটসহ অভ্যন্তরীণ ১০ রুটের লঞ্চ চলাচল। তবে, ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেককেই ছোট ট্রলারে ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুরসহ অন্যান্য রুটে নদী পারাপার হতে দেখা গেছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো.
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, “মেঘনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বাঁধের বাইরের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি নেমে গেলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
ঢাকা/হোসাইন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জামালপুর শহরে সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরে ঢোকে পানি, দুই শতাধিক পরিবারের ভোগান্তি
জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রার পলাশতলা এলাকায় দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবারবেলা দুইটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, জলাবদ্ধতায় দুই শতাধিক পরিবার চরম দুর্ভোগে আছেন।
‘পলাশতলার সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রা রেলক্রসিংয়ের সামনে পলাশতলা এলাকাটির অবস্থান। জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক থেকে একটি সংযোগ সড়ক এলাকাটির দিকে ঢুকেছে। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে তাঁদের বানভাসির মতো বসবাস করতে হয়। এলাকার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনপ্রতিনিধি ও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান তাঁরা।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এলাকাটিতে সামান্য বৃষ্টি হলে আঙিনা উপচে কয়েকটি ঘরে পানি ঢোকে। পানি মাড়িয়ে যাবতীয় কাজ সারতে হয়। যেকোনো কাজে বাইরে গেলে নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। ফলে তাঁরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় চার বছর ধরে এমন অসহনীয় জলাবদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে তাঁদের বসবাস করতে হচ্ছে।
শহিদুল্লাহ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, গত চার বছর ধরে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বানভাসির মতো বসবাস করছেন। জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে বহুবার পৌরসভাসহ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। দীর্ঘ সময় ধরে পানি থাকায়, অনেকের হাত-পায়ে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে পলাশতলার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক এ কে এম আবদুল্লাহ-বিন-রশিদ। তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় আমি নিজে গিয়ে দেখে আসছি। যেসব স্থানে পানি আটকে আছে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই এলাকার পানি সরাতে ইতিমধ্যে পৌরসভার অন্য কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’