ফোঁড়া অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু, গাফিলতির অভিযোগ পরিবারের
Published: 27th, July 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জে নুবহা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় কাদ্দিহান খন্দকার সাদ্দান (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
স্বজনরা জানান, ফোঁড়া অপারেশনের ঘণ্টাখানেক পরই তার রক্তবমি শুরু হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় ঢাকায় নেওয়ার পর শিশুটির মৃত্যু হয়।
সাদ্দান কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের যুবদল নেতা ও প্রকৌশলী খন্দকার ইমনের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
শিশুটির পরিবার জানায়, গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় শিশুটি নিতম্বে ব্যথা অনুভব করলে তাকে নুবহা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তার ফোঁড়া হয়েছে, অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।
ওই রাতেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.
অপারেশনের কিছুক্ষণ পরই শিশুর রক্তবমি শুরু হয় এবং দ্রুত অবনতি ঘটে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। পরে উত্তরার জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হলে ওইদিন রাত ৩টার দিকে মারা যায় শিশুটি।
স্থানীয়রা বলছেন, কালীগঞ্জে একাধিক প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সে চলছে। সেগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে তেমন কোনো নজরদারি নেই। এতে চিকিৎসায় অবহেলা ও মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে।
শিশু সাদ্দানের নানা সৈয়দ আজহারুল আলম বুলবুল বলেন, “নুবহা হাসপাতালের দায়িত্বে অবহেলা ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার নাতি মারা গেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
শিশুটির বাবা খন্দকার ইমন বলেন, “অপারেশনের পরপরই আমার ছেলের রক্তবমি শুরু হয়। দ্রুত চিকিৎসা না দেওয়ার কারণেই আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
নুবহা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মো. মিলন মিয়া এ বিষয়ে বলেন, “শিশুটি আমাদের হাসপাতালে মারা যায়নি। মারা গেছে উত্তরায়।” চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনি হাসপাতালে আসেন, কথা হবে।” এ কথা বলে ফোন কেটে দেন।
অপারেশনের দায়িত্বে থাকা সার্জন ডা. মাইনুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “এখন আমি ব্যস্ত আছি, পরে ফোন দিব।” তবে তিনি পরে ফোন না দিয়ে এসএমএস করে জানান, “অ্যানাস্থেসিস্টকে কল করে বিস্তারিত জানুন।”
অপারেশনে অ্যানাস্থেসিয়া দেওয়া কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. এমরান হোসেন বলেন, “শিশুটিকে শুধু ঘুম পাড়িয়ে ফোঁড়ার অপারেশন করা হয়েছিল। এর দুই ঘণ্টা পর রক্তবমি শুরু হয়। চিকিৎসায় কোনো ভুল বা অবহেলা ছিল না।”
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু লিখিত অভিযোগ না থাকায় আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।”
গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি প্রথম আপনার কাছে শুনলাম। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নুবহা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাইনী চিকিৎসক রাহিমা সুলতানার ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায়ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ চ ক ৎসক অবহ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ফোঁড়া অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু, গাফিলতির অভিযোগ পরিবারের
গাজীপুরের কালীগঞ্জে নুবহা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় কাদ্দিহান খন্দকার সাদ্দান (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
স্বজনরা জানান, ফোঁড়া অপারেশনের ঘণ্টাখানেক পরই তার রক্তবমি শুরু হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় ঢাকায় নেওয়ার পর শিশুটির মৃত্যু হয়।
সাদ্দান কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের যুবদল নেতা ও প্রকৌশলী খন্দকার ইমনের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
শিশুটির পরিবার জানায়, গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় শিশুটি নিতম্বে ব্যথা অনুভব করলে তাকে নুবহা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তার ফোঁড়া হয়েছে, অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।
ওই রাতেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে মাত্র ১৫ মিনিটে ফোঁড়ার অপারেশন করা হয়।
অপারেশনের কিছুক্ষণ পরই শিশুর রক্তবমি শুরু হয় এবং দ্রুত অবনতি ঘটে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। পরে উত্তরার জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হলে ওইদিন রাত ৩টার দিকে মারা যায় শিশুটি।
স্থানীয়রা বলছেন, কালীগঞ্জে একাধিক প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সে চলছে। সেগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে তেমন কোনো নজরদারি নেই। এতে চিকিৎসায় অবহেলা ও মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে।
শিশু সাদ্দানের নানা সৈয়দ আজহারুল আলম বুলবুল বলেন, “নুবহা হাসপাতালের দায়িত্বে অবহেলা ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার নাতি মারা গেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
শিশুটির বাবা খন্দকার ইমন বলেন, “অপারেশনের পরপরই আমার ছেলের রক্তবমি শুরু হয়। দ্রুত চিকিৎসা না দেওয়ার কারণেই আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
নুবহা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মো. মিলন মিয়া এ বিষয়ে বলেন, “শিশুটি আমাদের হাসপাতালে মারা যায়নি। মারা গেছে উত্তরায়।” চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনি হাসপাতালে আসেন, কথা হবে।” এ কথা বলে ফোন কেটে দেন।
অপারেশনের দায়িত্বে থাকা সার্জন ডা. মাইনুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “এখন আমি ব্যস্ত আছি, পরে ফোন দিব।” তবে তিনি পরে ফোন না দিয়ে এসএমএস করে জানান, “অ্যানাস্থেসিস্টকে কল করে বিস্তারিত জানুন।”
অপারেশনে অ্যানাস্থেসিয়া দেওয়া কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. এমরান হোসেন বলেন, “শিশুটিকে শুধু ঘুম পাড়িয়ে ফোঁড়ার অপারেশন করা হয়েছিল। এর দুই ঘণ্টা পর রক্তবমি শুরু হয়। চিকিৎসায় কোনো ভুল বা অবহেলা ছিল না।”
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু লিখিত অভিযোগ না থাকায় আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।”
গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি প্রথম আপনার কাছে শুনলাম। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নুবহা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাইনী চিকিৎসক রাহিমা সুলতানার ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায়ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/রফিক/এস