গুলশানে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক রাজ্জাক পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য
Published: 27th, July 2025 GMT
রাজধানীর গুলশান এলাকায় গতকাল শনিবার রাতে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজি করার অভিযোগে আটক হওয়া আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার আজ শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানান।
এর আগে গতকাল রাতে গুলশান থেকে আটক হন রাজ্জাকসহ পাঁচজন। পুলিশ জানায়, তাঁরা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
রাতেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
আর পৃথক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের দুই নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কারের কথা জানায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। তাঁরা হলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু ও সদস্য আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান। আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমানের ফেসবুক প্রোফাইলে তাঁর নামের পাশে ব্র্যাকেটে রিয়াদ লেখা দেখা গেছে। পুলিশ আটক যে পাঁচজনের নাম প্রাথমিকভাবে উল্লেখ করেছিল, তাঁদের মধ্যে রিয়াদ নামটি ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের একটি অংশের উদ্যোগে গত ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।
এ ঘটনায় মাহিন সরকারের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
আবদুর রাজ্জাক নামের যে ছেলেটা গ্রেপ্তার হয়েছে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে, সে পুলিশ সংস্কার কমিশনের মেম্বার। অর্থাৎ গুরুত্বের বিচারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের সে লিস্টেড ছাত্র প্রতিনিধি। বাংলাদেশে যে কালচার চলে, তাতে সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে কোনোভাবে যুক্ত, এই পরিচয়েই কেউ অর্থ উপার্জন করতে পারে বলে মনে করি। এখানে তার মতো ব্যক্তিকে কীভাবে স্বরাষ্ট্র বিভাগের পুলিশ সংস্কার কমিশনের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সুপারিশ করল, এটা সামনে আনা প্রয়োজন। এটা খুব করে চাওয়া আমার।
আরও পড়ুনউমামা ফাতেমার ফেসবুক পোস্ট: ঠিকমতো খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে১ ঘণ্টা আগেজানে আলম অপু নামক ছেলেটা আগে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনেক উচ্চবাচ্য করত, অনেকটা ঔদ্ধত্যের পর্যায়ে। তার বিরুদ্ধে নিজ জেলা জয়পুরহাটে অসংখ্য অভিযোগ ইতিপূর্বে কানে এসেছে, যেহেতু রাজশাহী বিভাগীয় দায়িত্বে আমি ছিলাম। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সেসহ আরও কয়েকজন সেই হত্যাকাণ্ডের কারণ তাদের দাবির সাথে না মেলা সত্ত্বেও তারা আন্দোলন করে এবং স্বরাষ্ট্র দপ্তরে যাতায়াত বৃদ্ধি করে। এখানে জানে আলম অপু শুধু নয়, ওর আশপাশে থাকা আরও দু–একজনের নামে এমন অভিযোগ আসলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
সর্বশেষ ইব্রাহিম হোসেন মুন্না নামক ছেলেটা এই চাঁদাবাজিতে অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এই নাম আসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারটির যৌক্তিকতা শতভাগ ফুরিয়ে এসেছে। ইতিপূর্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সে ঢাকা মহানগর কমিটি গোছানোতে ভূমিকা রেখেছে। সবচেয়ে বড় কথা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গত কয়েক দিন আগে হওয়া নির্বাচনে সে টপ অর্গানোগ্রামের একটি পদে ইলেকশন করে এবং পরে তার জায়গায় সে নাকি অন্য কাউকে সিলেক্ট করেছে, এই অজুহাত দিয়ে সে আর দায়িত্ব নেয়নি। এ রকম অদ্ভুতুড়ে ঘটনা ইতিপূর্বে জীবনেও প্রত্যক্ষ করিনি আমি।
আরও পড়ুনচাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাসহ আটক ৫১৩ ঘণ্টা আগেইব্রাহিম হোসেন মুন্নার নামটি একেবারে সেন্ট্রালি কানেক্টেড এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলেম অপুও সেন্ট্রাল নেতা। তাদের সাথে অনেকেরই ভালো খাতির থাকা অস্বাভাবিক নয়। রিমান্ডে নিয়ে প্রকৃত কুশীলবদের বের করে আনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কেননা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার একটি ঐতিহাসিক ব্যানার। আমি ইতিপূর্বেও জানিয়েছি এই ব্যানার আর থাকার প্রয়োজন নেই, যদিও এই ব্যানার প্রতিষ্ঠা করতে আমারও ভূমিকা ছিল।
আরও পড়ুনচাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ জন ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ২ জন বহিষ্কার৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ র র জ জ ক ফ সব ক সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। দোষীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার সিপিজের এক টুইটে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি মিলন ত্রিপুরা ১৭ জুলাই একটি বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন ও ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।