মাদারীপুরে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ কারায় ৪ বাড়িতে হামলা
Published: 27th, July 2025 GMT
নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় মাদারীপুরের দুর্গম চরাঞ্চলের চারটি বাড়িতে হামলা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ৭০-৮০ জন ব্যক্তি হামলা চালান। তারা বাড়িগুলো ভাঙচুর করার পাশাপাশি জিনিসপত্র লুট করেন এবং হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।
গত শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে ঝাউদি ইউনিয়নের হোগল পাতিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
সচিবালয়ে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার ৪
ঝালকাঠিতে এনজিও কর্মীকে কুপিয়ে পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন
স্থানীয়দের অভিযোগ জানান, নদী এবং কাঁচা রাস্তা পাড় হয়ে হোগল পাতিয়া গ্রামে যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। প্রতিরাতে অন্তত ১০ লাখ টাকার বালু অবৈধভাবে নদী থেকে উত্তোলন করছেন ইউপি চেয়ারম্যান এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সদর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আবুল। বালু উত্তোলনের কারণে আড়িয়াল খাঁ নদে সম্প্রতি ভাঙন দেখা দেয়। যে কারণে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করেন গ্রামের বাসিন্দারা।
ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের নেতৃত্বে গত শুক্রবার রাতে শামিম আকন, মিরাজ আকনসহ ৭০ থেকে ৮০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হোগল পাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা আক্তার বেপারী, গিয়াস বেপারী ও জলিল বেপারীর পরিবারের চারটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। তারা আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য অসংখ্য বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।
ক্ষতিগ্রস্ত আক্তার বেপারী বলেন, “ওরা অতর্কিতে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে সব কিছু লুট করে নিয়ে গেছে। বোমা নিক্ষেপ করেছে। আমাদের কাছে কোনো নিরাপত্তা নেই, প্রশাসনের কাছে আমরা বিচার চাই।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরের এক নারী জানান, ৭০-৮০ জন সন্ত্রাসী এসে প্রথমে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরপর বাড়ির পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। হামলাকারীরা বাড়ি লুট ও ভাঙচুর করে। এরা প্রতিদিন নদী থেকে লাখ লাখ টাকার বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে বিক্রি করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনও বন্ধ রয়েছে।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি আদিল হোসেন জানান, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ