চলতি বছরের প্রথম ছয় মাস জানুয়ারি-জুনে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেও লোকসান গুনতে হয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশকে। এই ছয় মাসে কোম্পানিটির প্রায় ৬৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

সিঙ্গার বাংলাদেশের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে আজ রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় একই সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।

কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সিঙ্গার বাংলাদেশ ১ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রী বিক্রি করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে কোম্পানিটির ইলেকট্রনিক পণ্য বিক্রি ১৮৩ কোটি টাকা বা ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

তবে পণ্য বিক্রি বৃদ্ধির পাশাপাশি কোম্পানিটির উৎপাদন খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটি ১ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে। অন্যদিকে উৎপাদন খরচ হয় ১ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ১ হাজার ১৮৬ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির বিপরীতে উৎপাদন খরচ ছিল ৮৮০ কোটি টাকা। এতে দেখা যায়, এক বছরে কোম্পানিটির উৎপাদন খরচ ১৮৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পায়। একই সময়ে উৎপাদন খরচ বাড়ে প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জানুয়ারি-জুনে সিঙ্গার বাংলাদেশের পরিচালন মুনাফা ছিল ৮৬ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল প্রায় ৯১ কোটি টাকা।

কোম্পানিটির আর্থিক লেনদেনে বড় ধাক্কা লাগে ব্যাংকঋণের সুদের কারণে। এই খাতে কোম্পানিটির ব্যয় গত বছরের চেয়ে বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়েছে। আর্থিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকঋণের সুদসহ অন্যান্য আর্থিক দেনা পরিশোধে কোম্পানিটিকে খরচ করতে হয়েছে ১৪৪ কোটি টাকার বেশি। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৫২ কোটি টাকা। এর মানে চলতি বছরে ব্যাংকঋণসহ অন্যান্য আর্থিক দেনা শোধ করতে গিয়ে কোম্পানিটি লোকসানের মুখে পড়েছে। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে সিঙ্গার যেখানে প্রায় ২৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল, সেখানে এবার একই সময়ে ৬৬ কোটি টাকা লোকসান করেছে।

এদিকে লোকসানের খবরে আজ ঢাকার শেয়ারবাজারে সিঙ্গারের শেয়ারপ্রতি দাম ৮ টাকা বা পৌনে ৭ শতাংশ কমে ১১০ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে যায়। এদিন ডিএসইতে কোম্পানিটির প্রায় ৭৫ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র একই সময গত বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে ঢাকায় শ্রমিকদের ‘ভুখা মিছিল’

গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া উইনটেক্স গ্লোভস কারখানা পুনরায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনের ১৭তম দিনে রাজধানীতে ভুখা মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিজয়নগরের শ্রম ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পল্টন, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর হয়ে পুনরায় শ্রম ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমিন বলেন, ১৫ জুন বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করা হয়। পরদিন ১৬ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক এবং পরে শ্রম উপদেষ্টা ও শ্রমসচিবকে দুইবার লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়। আজ (বুধবার) ১৭তম দিন যাবৎ শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান আন্দোলনের পর অদ্যাবধি তাঁরা কোনো উদ্যোগ নেননি, এমনকি শ্রমিকদের সাথে কথাও বলেননি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

কাজী মো. রুহুল আমিন আরও বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে শ্রমিকদের সুসম্পর্কের পরিবর্তে মুখোমুখি দাঁড়ানো কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।

সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকার যদি মালিক পুষে শ্রমিক মারার পথ অনুসরণ করে, তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উইনটেক্স গ্লোভস শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক মো. তুহিন এবং সঞ্চালনা করেন শ্রমিকনেতা জালাল হাওলাদার। আরও বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সেকেন্দার হায়াত, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ