সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 28th, July 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা, সহিংসতা ও ‘মব জাস্টিসের’ বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও ‘মব জাস্টিস’ বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে ‘সাধারণ সনাতনী শিক্ষার্থীবৃন্দ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
সমাবেশে অংশ নিয়ে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌহার্দ্য দেব বলেন, ‘দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমানভাবে বসবাসের অধিকার রয়েছে। তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বারবার আক্রমণ চালানো হচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ বিষয়ে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান বলেন, ‘গত ১৭ বছরে আমরা বারবার সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা দেখেছি। মনে রাখতে হবে—ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। সবার নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব। তিনি বলেন, সনাতনী ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর বারবার পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। সরকার যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ–মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে বের হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদ, কলা অনুষদ ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রাঙ্গণ ঘুরে একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমি কে তুমি কে, বাংলাদেশি বাংলাদেশি’, ‘ধর্মের নামে হানাহানি, বন্ধ করো বন্ধ করো’, ‘প্রটেক্ট মাইনোরিটি, প্রটেক্ট ডেমোক্রেসি’, ‘রংপুরে হামলা কেন ইন্টেরিম জবাব দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
)–কে কটূক্তির অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার, ১৪টি বসতঘর ভাঙচুর২৭ জুলাই ২০২৫
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ