লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ১২টি স্থানে নতুন করে ধস দেখা দিয়েছে। রামগতির ১০টি ও কমলনগরে ২টি স্থানে বাঁধের ব্লক ধসে পড়ে। এতে নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে।

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও প্রবল জোয়ারের তোড়ে গত শুক্রবার থেকে বাঁধের ব্লক ধসে পড়তে শুরু করে। এতে অনেক স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কিছু স্থানে ব্লক ধসে পড়ায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। রামগতি উপজেলায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়খেরী, চরগাজী, মাছঘাট, মালিবাড়ী, উছখালী ও ওয়াপদা অফিসসংলগ্ন এলাকায়। এ ছাড়া কমলনগরের মাতাব্বরহাট ও লুধুয়া বাজার অংশে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি এবং দ্রুত বাঁধ মেরামতের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছি। সময়মতো কাজ শুরু না হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে।সৈয়দ আমজাদ হোসেন, ইউএনও, রামগতি উপজেলা

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের ব্লক ব্যবহার করার কারণে জোয়ারের তোড়ে ব্লক ধসে পড়ার ঘটনা ঘটছে। এর আগে গত বছরও একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। নতুন করে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করার দাবি বাসিন্দাদের।

বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ১৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে ব্লক দিয়ে সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে বাঁধের ব্লক বৃষ্টি-জোয়ারে ধসে পড়ছে। কাজের মান খুবই খারাপ ছিল, তা না হলে এত তাড়াতাড়ি ব্লক ধসে যেত না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার বলে আসছি টেকসই বাঁধ দরকার। এখনই ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসী চরম বিপদের মুখে পড়বে।’

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি এবং দ্রুত বাঁধ মেরামতের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছি। সময়মতো কাজ শুরু না হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে।’

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব স্থানে ধস দেখা দিয়েছে, সেগুলো আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করব।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মেঘনার তীব্র ভাঙনে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ২৪২ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা নদীতে হারিয়ে গেছে। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র র ব লক র মগত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় অপুষ্টি উদ্বেগজনক পর্যায়ে, সতর্ক করল ডব্লিউএইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অপুষ্টির মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা বিপজ্জনক গতিপথে রয়েছে।
দীর্ঘ বিরতির পর গাজায় উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণসামগ্রী ফেলার কার্যক্রম আবার শুরুর পর ডব্লিউএইচওর কাছ থেকে এ সতর্কবার্তা এল।

গতকাল রোববার জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গাজায় উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণসামগ্রী ফেলে। এর আগে ইসরায়েল জানায়, তারা গাজার কিছু অংশে প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে যুদ্ধ বন্ধ রাখবে। যাকে তারা বলছে, ‘কৌশলগত বিরতি’। এ বিরতির আওতায় জাতিসংঘের ত্রাণবহরের জন্য করিডর তৈরি করে দেওয়ার কথাও জানায় তারা।

ইসরায়েলের দাবি, গাজাবাসীকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখার যে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ উঠেছে, তা খণ্ডন করতেই এ বিশেষ ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের ভাষ্য, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে এমন অভিযোগ তুলে বিশ্বের সামনে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে।

জর্ডানের সামরিক বাহিনী বলেছে, গাজাবাসীর জন্য ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে কাজ করছে। ইতিমধ্যে তারা উড়োজাহাজ দিয়ে তিন দফায় গাজায় ২৫ টন ত্রাণসামগ্রী ফেলেছে। এ ছাড়া মিসর হয়ে ত্রাণবাহী লরির একটি বহর গাজায় প্রবেশ করেছে। আরেকটি বহর ঢোকার কথা রয়েছে জর্ডান থেকে।

তবে গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি ত্রাণবহর যে পথে অগ্রসর হচ্ছিল, তার পাশেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৯ জন নিহত ও ৫৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এমনকি গত শনিবার যুদ্ধ সাময়িক বন্ধের বিষয়টি কার্যকরের এক ঘণ্টার মাথায় গাজার একটি আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।

ফিলিস্তিনের গাজায় আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলা হচ্ছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘে সম্মেলন শুরু আজ
  • লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, মানুষের দুর্ভোগ
  • গাজায় অপুষ্টি উদ্বেগজনক পর্যায়ে, সতর্ক করল ডব্লিউএইচও