মাত্র চার বছর বয়সে সিনেমার সেটে পা রাখা মীনার জীবনের শুরুটিই ছিল এক দীর্ঘ বঞ্চনার যাত্রা। তাঁর বাবা আলী বক্স, যিনি ছিলেন একসময়ের সংগীতশিল্পী, মুম্বাইয়ের (তৎকালীন বোম্বে) দাদারে একটি চাওল ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী ও তিন সন্তানকে পাকিস্তানে রেখে ভারতে এসে তিনি বিয়ে করেন ইকবাল বেগমকে, যিনি আগে ছিলেন হিন্দু, নাম ছিল প্রভাবতী। এই দম্পতির তিন মেয়ে—খুরশীদ, মীনা ও মধু।
খুরশীদ যখন শিশুশিল্পী হিসেবে আয় করছেন, তখন আলী বক্স আরও দুই মেয়েকেও সিনেমায় কাজে লাগানোর লক্ষ্যে স্টুডিও থেকে স্টুডিওতে নিয়ে যেতে থাকেন। মীনা যখন জন্মান, তখন তাঁর জন্মে বাবার অনাগ্রহ এতটাই ছিল যে কথিত আছে, তিনি তাঁকে এতিমখানার সামনে ফেলে দিয়ে এসেছিলেন, যদিও সে তথ্য প্রমাণিত হয়নি। তবে তাঁদের বাসা ছিল এক এতিমখানার পাশেই, হয়তো সেখান থেকেই গুজবের উৎপত্তি।

‘শৈশবকে বিদায়’
বিনোদ মেহতার লেখা ‘মীনা কুমারী: দ্য ক্ল্যাসিক বায়োগ্রাফি’ বইয়ে মীনা কুমারীর একটি উক্তি উদ্ধৃত করা হয়, যেখানে তিনি বলেন, ‘যেদিন প্রথম কাজে গিয়েছিলাম, ভাবতেও পারিনি আমি শৈশবকে বিদায় জানাচ্ছি। মনে করেছিলাম, কয়েক দিন শুটিং করে স্কুলে যাব, পড়াশোনা করব, বন্ধুদের সঙ্গে খেলব। কিন্তু তা আর হয়নি।’

মীনা কুমারী। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ