যে সাত ধরনের খাবার খেলে ৭০ বছর বয়সেও থাকবেন তরুণ
Published: 2nd, August 2025 GMT
গত মার্চ মাসে ‘নেচার মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, উদ্ভিজ্জ খাবার খেলে বয়সজনিত জটিলতার হার কমে। গবেষণাটির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী সুস্থ ব্যক্তিদের। অর্থাৎ যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা নেই। ৩৯–৬৯ বছর বয়সী ১ লাখ ৫ হাজার ব্যক্তিকে ৩০ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন গবেষকেরা। মধ্যবয়সে খাদ্যাভ্যাস কীভাবে তাঁদের পরবর্তী বছরগুলোর সুস্থতাকে প্রভাবিত করেছে, সেটিই দেখা হয়েছে সেই গবেষণায়।
সুস্থ থাকার সম্ভাবনা কতটাগবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট স্কোর দেওয়া হয়েছে। এই স্কোর হার্ভার্ডের উদ্ভাবিত অল্টারনেটিভ হেলদি ইটিং ইনডেক্সের সঙ্গে সম্পর্কিত। ‘হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং’ অনুসারে, যাঁদের এই স্কোর সবচেয়ে বেশি ছিল, ৭০ বছর বয়সে পৌঁছাতে পৌঁছাতে তাঁদের সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে ৮৬ শতাংশ; ৭৫ বছর বয়সে সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে ২ দশমিক ২ গুণ। বুঝতেই পারছেন, এই অল্টারনেটিভ হেলদি ইটিং ইনডেক্সই দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
কী আছে হার্ভার্ডের এই খাদ্যভ্যাসে, যা দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়ক? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর
সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।
একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।
তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।
রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।
সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।
তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’
এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান