ঘর ও বাহির
তোমাদের ঘর লাগে, বাহিরও, ঘটি ও পুকুর
যে জীবন পাশা খেলা শেষে ধস্ত, ধুলোবিজড়িত
এমন অপার দিনে, পাড়হীন–কিনারাবিহীন
তার আছে কেবলই লাঞ্ছনার গান শোণিতে বাহিত
ও সে কলঙ্কিনী, তৈরি রাখো এক শ চাবুক
নীলরতিজ্বলা পাপ ও লিবিডোতাড়িত পুরুষ
রাধা–রাধা বলে মধুমন্থনের পর ফিরে গেছে
অপত্যস্নেহের কাছে, নিজ রমণীতে
তুমি তোমারই ধ্বংসাবশেষ হাতে
খুঁজেছ তৃষ্ণায় একফোঁটা শিশিরের মন, কাঠফাটা দিনে
পান করেছ নিজেরই অশ্রু, রক্ত, বিবমিষা
সবুজ জলকামান পোড়ে মন খারাপের জ্বরে
যার ঘর নাই, আর বাহিরও, সে যাবে কোথায়
এই সন্ধ্যা তাকে নিয়ে যাবে বলো কোন সরোবরে?
আমার কসাইবলেছি, আমাকে কাটো, সোনার ভোজালি আনো, হানো মুগ্ধ ধার
কাটো তুমুল আহ্লাদে, তুমি কাটলেই জাগে এই শবাধার
খেলা করো শর্বরীর সহস্র আগুনকেন্দ্রে, নাভিমূলে, যাতে
মাংসের বাগানতলে খুঁজে পাও লুপ্ত গান, হারানো ইস্পাতে
আমাকে কর্তিত করো, তুলে আনো আকরিক, আমার অনল
তুলে আনো রক্ত থেকে ডুবোজাহাজের মন, সতত চঞ্চল
ব্যথা দাও, তীব্র ব্যথা, কোষে কোষে মালকোষ বাজছে অবাক
তোমার প্রেমের ঘায়ে অন্তহীন এই অগ্নিরক্তে ভিজে যাক
জল্লাদের মতো মুখে চকচকে খঞ্জরের তীব্র রোশনাই
আমার কসাই, কবে যে আসবে শবাধারে, বাজবে সানাই!
আয়নাআজকাল আর আয়নার দিকে তাকাতে পারি না
তাকালে দেখি
আয়না ফুঁড়ে আমার একুশ বছর উঠে এসেছে
তার গাভর্তি স্মৃতির কুষ্ঠ, রাত্রিজাগার পাপ চোখে
চুলে জট, জীবনে জট
আর সে জটেশ্বরী কী ভীষণ দৌড়াচ্ছে
আয়নার দিকে তাকালেই আয়না ফুঁড়ে উঠে আসে
বিষাক্ত দাম্পত্যের নীল মুখ
কালশিটে দাগ পড়া উরু, ছিন্ন যোনি
সারা রাত ধ্বসে পড়ে আয়নামহল
একটা অপেক্ষমাণ টিপ ঝরে যাওয়ার দিন
একটা এলানো খোঁপা থেকে তার বিমর্ষ কুসুম
খসে পড়ার দিন ছুটে আসে আমার দিকে,
ছুটে আসে প্রথম শাড়ি পরা, তলপেটে ব্যথা, গভীর অসুখ
আজকাল আয়নাকে আর দেখাতে পারি না এই মুখ
পিকনিকবিছানা ঝেড়ে ফেলছি পত্রালি
চৌকো টিনে বন্দী তার গান
কুয়াশা তুই হুড়মুড়িয়ে এলি
সিলমোহরে ভরানো এই পিরান
ঘষটে তাকে তুলছি তবু পেরেক
বাড়ি তো নয়, হাসপাতাল যেন
শিয়রে তার ঝুলছে স্যালাইন এক
ডিনারে তার বিষাদভাজা মেনু
টায়ারপোড়া গন্ধ ছোটে পথে
কেউ এল না জখম এল ঠোঁটে
অতিথিশালা উঠল সেজে রাতে
চেক আউট, ঘুমিয়ে পড়ো মোটেল
একাই জাগে শীতের বুকে রাত
রাতের বুকে নগ্ন একা হাত!
মৃত্যুমরণের বিভীষিকা আমি মুছে দিই পদ্মকুসুমের মন থেকে
বলি, দেখো, সকল মৃত্যুই মৃত্যু নয়
কিছু কিছু মরণ তো রাজসিক, অদ্ভুত লোবান
নরম শান্তির মতো জড়িয়েও রাখে, কান্নাভেজা রুমালে
কাফনের গায়ে জমে থাকে সেই সব মেঘ, সাদা, ঘন
বহুদিন তুমি যাদের তুমুল স্পর্শ চেয়েছিলে
গর্ভরেণু ঝরে যাচ্ছে, শ্বাসরোধ হচ্ছে, মৃত্যুদূত পাহারায়
স্নায়ুর ভেতর বাজছে মাটির মন্দিরের শেষ সান্ধ্য ঘণ্টা
সজনের হুতাশন আর পাখিদের সায়োনারা
মৃত্যুও পুরুষ, তুমি তার ডানার নিচে আরাম খোঁজো মরে যেতে যেতে
তারপর পুনরায় জন্মাও পদ্ম অন্য কোনো পুরুষের বাহুমূলে
তার অজরায়ু জলে, তার করাতের নিচে দীপ্র মহিমায়!
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে ট্রলার চালককে কুপিয়ে
বন্দরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রিফাত (২১) নামে এক ট্রলার চালককে হত্যা উদ্দেশ্য কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে আহত ট্রলার চালকের মা লিপি আক্তার বাদী হয়ে হামলাকারি সন্ত্রাসী তন্ময়কে আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
জখমপ্রাপ্ত ট্রলার চালক রিফাত বন্দর থানার নবীগঞ্জ রসুলবাগ এলাকার গাজী মিয়ার ছেলে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় বন্দর থানার কবিলেরমোড়স্থ চায়ের দোকানের সামনে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। ওই সময় হামলাকারি তন্ময় ট্রলার চালক রিফাতের কাছ থেকে একটি এনড্রয়েট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
জানা গেছে বন্দর থানার নবীগঞ্জ রসুলবাগ এলাকার গাজী মিয়ার ছেলে ট্রলার চালক রিফাতের সাথে একই থানার নবীগঞ্জ বাগবাড়ি এলাকার ডালিম মিয়ার ছেলে তন্ময় সাথে দীর্ঘ দিন ধরে পূর্ব শত্রুতা চলে আসছিল।
এ ঘটনার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় নবীগঞ্জ কবিলেরমোড় এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সামনে ট্রলার চালক রিফাতকে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য বেদম ভাবে কুপিয়ে একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
পরে স্থানীয়রা ট্রলার চালককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করলে কর্তব্যরত উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।