পদ্মা সেতু এলাকায় দুর্ঘটনায় দুজন নিহত, লাইভ করলেও উদ্ধারে আসেননি কেউ
Published: 3rd, August 2025 GMT
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে টোল প্লাজার পাশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সেতু থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে নামার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান মোটরসাইকেলের দুই আরোহী।
সড়কে মরদেহ পড়ে থাকার ঘটনাটি অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ও লাইভ করেছেন। কেউ উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। দুর্ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর হাইওয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নিহত দুজন হলেন ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর এলাকার মোহাম্মদ আলী (৩২) ও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের কোয়ালিয়া সন্ন্যাসী এলাকার সুজন (৩৯)। রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিবচর হাইওয়ে থানা-পুলিশ তাঁদের লাশ উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে আজ রোববার ভোরে মরদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুজন একটি মোটরসাইকেলে করে মাওয়া প্রান্ত থেকে জাজিরা প্রান্তে আসছিলেন। সেতু থেকে নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে পড়ে যান তাঁরা। একজন সড়কের ওপরে ও অন্যজন পাশে জমিতে ছিটকে পড়েন। দুর্ঘটনায় তাঁদের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। দুর্ঘটনাস্থলটি টোল প্লাজার কাছে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশের আগে। সেখান থেকে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার দূরত্ব মাত্র ৩০০ মিটার। এ সড়কে নিয়মিত দক্ষিণাঞ্চলমুখী যানবাহন চলাচল করে। তবে পুলিশ, স্থানীয় লোকজন বা টোল প্লাজার কর্মীদের কেউ দুর্ঘটনার শিকার দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেননি।
শিবচর হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক আবদুস সালাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার অনেক পরে আমরা খবর পাই। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। দুর্ঘটনা রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটে এবং আমরা রাত সাড়ে ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করি। ধারণা করা হচ্ছে, দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
জাজিরা প্রান্তের পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নকিব আকরাম হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। পরে হাইওয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।’ দুই ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার হওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের কেউ মামলা করলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন র হ ইওয় ঘটন স ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
দরজায় তালা ভেতরে আগুন, স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পুুড়িয়ে মারার অভিযোগ
গাজীপুরের শ্রীপুরে পেট্রল ঢেলে ঘরে আগুন দিয়ে মারুফা আক্তার (৪৫) নামে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
শনিবার (২ আগস্ট) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ইদ্রবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মারুফা আক্তার পোশাক শ্রমিক এবং একই গ্রামের মো. মিজানুর রহমানের স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে হঠাৎ আগুনের শিখা দেখে এবং চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা দেখতে পান, বসতঘরের মূল ফটকে তালা লাগানো। পরে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যায়, ভেতরের ঘরের দরজাও তালাবদ্ধ। দরজার তালা ভেঙে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হলেও মারুফার শরীর আগুনে পুড়ে যায়।
নিহতের ছোট বোন নাজমা আক্তার বলেন, “রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ‘আগুন-আগুন’ চিৎকার শুনে আমরা ছুটে আসি। তখন দেখি ঘরের তালা ভাঙার চেষ্টা চলছে। তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি আমার বোন আগুনে পুড়ে গেছে।”
নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আবু তাহের জানান, বিয়ের পর থেকেই মারুফা-মিজানুরের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলছিল। গত ১৫ দিন ধরে মারুফাকে বাড়ির বাইরে যেতে দেননি মিজানুর।
আবু তাহের অভিযোগ করে বলেন, “পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে আমার বোনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, “এই দম্পতি প্রায় সময়ই ঝগড়া করত। বহুবার সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু লাভ হয়নি।”
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারিক জানান, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত স্বামী পালিয়ে যান। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান চলছে।”
এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/রফিক//