গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ছাত্র সমাবেশে দেশের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড়ের মূল মঞ্চের সামনে জড়ো হচ্ছেন। ফলে শাহবাগ মোড়ে দিয়ে কোন যান চলাচল করতে পারছে না। এ জন্য  ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যান চলাচল সচল রাখার জন্য বিকল্প রুট ব্যবহার করার ব্যবস্থা করছে।

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকেই শাহবাগে জড়ো হতে থাকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়ছে।

ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে, আজকের ছাত্র সমাবেশ সফল করতে গঠন করা হয়েছে প্রায় ৯০টি সাংগঠনিক টিম। দেশের সব জেলা ও মহানগরের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেবে। সমাবেশে আসার জন্য দুইটা বিশেষ ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে। সমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়। এতে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সমাবেশ স্থলে সরাসরি উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

বরিশাল থেকে আগত ছাত্রদল নেতা আল আমিন বলেন, ছাত্রদল আগামী বাংলাদেশ গড়তে বড় ভূমিকা রাখবে। জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চেতনা ধারণ করে  আমরা আগামীর দেশ গড়বো। আমাদের নেতা তারেক রহমান দেশে আসবে। এবং একটি সুস্থ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে আমরা তাই চাই। এছাড়া এই সমাবেশ থেকে আমরা প্রত্যাশা করি স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে জোড়ালো দাবি তোলা হবে।

ছাত্র সমাবেশে উপলক্ষে যান চলাচলে জন্য যে বিকল্প রুট ব্যবহার করা হচ্ছে:

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়: সোনারগাঁও সিগন্যাল/বাংলামোটর ক্রসিং হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত যানবাহনগুলো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং এ সোজা শাহবাগের দিকে না গিয়ে বামে মোড় নিয়ে হেয়ার রোড/মিন্টু রোড হয়ে যাতায়াত করবে।

কাটাবন মোড়: সায়েন্সল্যাব ক্রসিং হয়ে পশ্চিম দিক থেকে আগত যানবাহনগুলো কাটাবন মোড় থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে ডানে মোড় নিয়ে নীলক্ষেত/পলাশী হয়ে অথবা কাটাবন মোড় থেকে বামে মোড় নিয়ে সোনারগাঁও (হাতিরপুল) রোড হয়ে বাংলামোটর লিংক রোড দিয়ে চলাচল করবে।

মৎস্য ভবন মোড়: হাইকোর্ট/কদম ফোয়ারা ক্রসিং হয়ে আগত যানবাহনগুলো মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে সোজা হেয়ার রোড/শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি (মগবাজার রোড) হয়ে চলাচল করবে।

অপরদিকে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত যানবাহন মৎস্যভবন ক্রসিং থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে সোজা হাইকোর্ট হয়ে গুলিস্তান/ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলাচল করবে।

টিএসসি/রাজু ভাস্কর্য: নীলক্ষেত ক্রসিং/দোয়েল চত্বর ক্রসিং থেকে আসা যানবাহন টিএসটি/রাজু ভাস্কর্য ক্রসিংয়ে এসে শাহবাগের দিকে না গিয়ে দোয়েল চত্বর/নীলক্ষেত ক্রসিং হয়ে চলাচল করবে।

ছাত্রদলের সমাবেশ ঘিরে নেতাকর্মীদের ৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনাগুলো হলো:

১.

সমাবেশে কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন বা প্ল্যাকার্ড বহন করা যাবে না।

২. কেন্দ্রীয়ভাবে নির্ধারিত স্থানে প্রতিটি ইউনিটকে বাধ্যতামূলকভাবে অবস্থান করতে হবে এবং সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সে স্থান না ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

৩. কাঁটাবন মোড় থেকে আজিজ সুপার মার্কেট এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল হাসপাতালের মধ্যবর্তী গলি হয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের চলাচলে সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. সমাবেশের দিন কোনো ইউনিটের কোনো যানবাহন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না।

৫. কোনো ব্যক্তি বা ইউনিট আলাদা শোডাউন বা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে পারবে না।

৬. সমাবেশ শেষে নির্ধারিত স্থানের চারপাশ পরিষ্কার করে একে একে স্থান ত্যাগ করতে হবে।

 

ঢাকা/রায়হান

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ হব গ র দ ক ছ ত রদল র ন ত কর ম ট বন ম ড় কর ম র ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ‍্যুত্থানে সশস্ত্রবাহিনীর অবদানের স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ দাবি এবি পার্টির

গণঅভ‍্যুত্থানে সশস্ত্রবাহিনী এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের অবদানের স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করার দাবি জা‌নি‌য়ে‌ছে আমার বাংলা‌দেশ পা‌র্টি (এবি পার্টি)।

‘গৌরবোজ্জ্বল জুলাই ৩৬’ উদযাপনের অংশ হিসেবে শ‌নিবার (২ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ দা‌বি ক‌রে দল‌টি।

রাজধানীর বিজয় নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলমের সঞ্চালায় সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর মেজর (অব.) ডা. ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা মনিশ দেওয়ান, কর্নেল (অব.) মশিউজ্জামান, সামরিক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান, এজিএম আমিরুল ইসলাম, কর্নেল মোশাররফ, মেজর (অব.) জিয়া, লে. (অব.) খান সোয়েব আমানুল্লাহ, সামরিক কর্মকর্তা ইমরান,সামরিক কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন এবং মেজর আফসারী।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “যখন রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব একীভূত হয়, তখনই মুক্তিযুদ্ধ বা গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়। আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে বিবেকের দায় থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছিল।সাধারণত অবসরপ্রাপ্ত সেনারা রাজনৈতিক দাবিতে রাজপথে নামেন না, কিন্তু সেদিন ডিওএইচএসগুলোতে সেই রীতির ব্যত্যয় ঘটিয়েছিল বলেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনী গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পেরেছিল। তাদের মাঠে নামার কারণেই গণঅভ্যুত্থান সহজ হয়েছে।”

তিনি অভিযোগ করেন,“ফ‍্যসিবাদের অন্তিম সময়ে র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি, মূলধারার কিছু মিডিয়া, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী ও সাংবাদিক জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তবে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সেদিন জনগণের বিরুদ্ধে যায়নি। সেটাই সেদিন আমাদের মাঝে আশার আলো সঞ্চারিত করেছিল।”

মনিশ দেওয়ান বলেন, “সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। জগদ্দল পাথরকে সরানো গেলেও, তা সম্পূর্ণরূপে সরানো যায়নি। ফুটো বল দিয়ে খেলা চলে না।”

মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, “২/১ জনের অপকর্মে পুরো বাহিনী কলুষিত হতে পারে না। জুলাইয়ের যুদ্ধ এখনো চলমান। সংস্কার দরকার মিডিয়া ও সশস্ত্র বাহিনী উভয় ক্ষেত্রেই। সংস্কার থাকলে হয়তো হিলি বা কাউল পালাতে হতো না। সংস্কারবিহীন নির্বাচন মানেই স্বৈরতন্ত্রের পুনর্বাসন।”

মোশাররফ বলেন, “হাজারো শহীদের রক্তে রঞ্জিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ থেকে পিছু হটা যাবে না। সেদিন আমরা সামরিক কর্মকর্তারা আমাদের সন্তানদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলাম, বিবেকের তাড়নায় আমরা আর সেদিন ঘরে থাকতে পারিনি। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের বিচার আমরা দেখতে পারি নাই।” 

জামাল উদ্দিন বলেন, “হাসিনার ফ্যাসিবাদকে না করে দেওয়ার জন্য ৩৬ জুলাই আমরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসি এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে বলি। সেদিন আমরা নেমে আসায় জনগণ আরো বেশি সাহসী হয়ে সামনে এগিয়ে যায়। তখন পর্যন্ত আমরা কিন্তু জানতাম না আজকে হাসিনার শেষ দিন।”

মেজর (অব.) ডা. ওহাব মিনার বলেন, “দেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ছোটখাটো মতপার্থক্য ভুলে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের উচিত অবিলম্বে ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ‍্যুত্থানে সশস্ত্রবাহিনীর অবদানের স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ দাবি এবি পার্টির
  • ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান: আমানউল্লাহ 
  • জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হতে হবে: নাহিদ
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শক্তির ঐক্য অটুট রাখতে হবে:  সংস্কৃতি উপদেষ্টা
  • ঢাকাবাসীর কাছে ছাত্রদলের অগ্রীম দুঃখ প্রকাশ
  • বাঁধন-সাবার ভার্চুয়াল দ্বন্দ্বে যোগ দিলেন অরুণা বিশ্বাস
  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • তিতুমীর কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী