স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে স্থানীয় জনগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সদস্যরা যোগ দেন। 

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় শাহজাদপুরের বিসিক বাসস্ট্যান্ডে অবরোধ করে তারা এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এ কর্মসূচিতে স্থানীয়রা যুক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের ধন্যবাদ জানান।

এ সময় বক্তারা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

আরো পড়ুন:

কুবিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা

চবি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশায় ছাত্র সংসদ

মহাসড়কে অবস্থান চলাকালে সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াতসিংহ শুভ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি’র অনুমোদন নিয়ে ক্রমাগত অবহেলা ও কালক্ষেপণে হতাশ ও ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আজ আন্দোলনের একাদশতম দিন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ তাদের শ্রেণিকক্ষের বাইরে এসে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সরকারের নিকট ক্রমাগত দাবি জানিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি “

তিনি বলেন, “৯ বছর ধরে ধুঁকতে থাকা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত নগণ্য অঙ্কের ডিপিপি অনুমোদনে সরকারের এই নির্লিপ্ততা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য অশনি সংকেত। আমরা কি ধরে নেব, ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় বলেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না?”

তিনি আরো বলেন, “এখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। কেনো আমাদের ক্যাম্পাসের দাবিতে রাজপথে নামতে হবে? রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। উপদেষ্টাদের প্রতি আমাদের অগাধ বিশ্বাস ও প্রত্যাশা। আপনারা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ প্রত্যক্ষ করুন, তাদের প্রতি সদয় হোন।”

ডিপিপি অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে এই শিক্ষক বলেন, “৪ আগস্ট সকাল ১০টা-১২টা ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি ও পথনাটক, ৬ আগস্ট সকাল ১০টা-১২টা ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি ও শিকলভাঙার গান, ৭ আগস্ট সকাল ১০টা-১২টা ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি ও অর্ধবেলা প্রশাসনিক কর্মবিরতি, ১০ আগস্ট সকাল ১০টা-বিকেল ৫টা ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে অবস্থানসহ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও আলোচনা।”

গত ২৪ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলনে ডিপিপি অনুমোদনের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা গত ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সব কর্মসূচি বয়কট করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেন।

ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ অবস থ ন সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

চবির বিশেষ ভোজের টোকেনে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ‘অতিথি’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন আবাসিক হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আবাসিকদের শিক্ষার্থী বলা হচ্ছে এবং অনাবাসিকদের অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, আবাসিকদের জন্য টাকার পরিমাণ কম ধরলেও অনাবাসিকদের জন্য বেশি ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ফরহাদ হোসেন হলে উন্নত ভোজের টোকেন আবাসিকদের জন্য ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। অপরদিকে, অতিথিদের জন্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা; এই অতিথিরা হলেন হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। শামসুন নাহার হলে আবাসিকদের জন্য ৮০ টাকা, অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা। মিল পদ্ধতি চালু থাকা আমানত হলে আবাসিকদের জন্য ফ্রি হলেও অনাবাসিকদের জন্য ৭০ টাকা। তবে সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্যই ১৫৫ টাকা ধরা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন

চবিতে বিপ্লবী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ

এদিকে, বিজয়-২৪ হলের প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্য ৮০ টাকা উল্লেখ করলেও দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তিতে অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে অন্যান্য হলগুলোতেও একই অবস্থার কথা জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জারিফ মাহমুদ বলেন, “৫ আগস্টের ফিস্ট নিয়ে হলে হলে বিশেষ খাবারের আয়োজন করছে, সেখানে আবাসিক-অনাবাসিক আলাদা করেছে। আমার প্রশ্ন হলো, প্রশাসনদের ছাত্র বা সন্তান কি শুধু আবাসিকরা? আমরা যারা অনাবাসিক, তারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ে এসেছি?”

তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা আমাদের হলে সিট দিতে পারেননি, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। এই আবাসিক-অনাবাসিক পরিচয় বন্ধ করুন। আয়োজন করলে সবার জন্য সমান করে আয়োজন করুন। আর সেটা না পারলে আয়োজন বন্ধ করুন।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম শাহ ফেসবুকে লেখেন, “কোনো একটা বিশেষ দিন এলেই দেখা যায়, হল প্রশাসনগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে দাঁড় করানোর ভণ্ডামি। ৫ তারিখে আয়োজনকে ঘিরে তারা আবার সেই অতিথি টার্ম সামনে নিয়ে আসছে। ফরহাদ হলে অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ ভোজের আয়োজনের টোকেন আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা এবং অতিথিদের জন্য ১৭০ টাকা। বাকি হলগুলোতে বোধহয় তাই করেছে। কিন্তু এই অতিথিগুলোও তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।”

তিনি বলেন, “বাহির থেকে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসবে, তাদের থেকে ৭০ টাকা করে বেশি না নিলে তো হল প্রশাসন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে না। আর আপনাদের যদি সামর্থ্য নাই থাকে, কাউকেই খাওয়ায়েন না। কিন্তু ৫ আগস্টের দিনকে কেন্দ্র করে করা অনুষ্ঠানে প্রিভিলেজড-আনপ্রিভিলেজড বিষয়টা জিইয়ে রাখাটা নিতান্ত নোংরামি লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এটা নিয়ে ভাবা উচিত।”

এ বিষয়ে শহিদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “এ সিদ্ধান্তটি শুধু ফরহাদ হলের জন্য নয়, অন্যান্য হলেও এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। মূলত উন্নত ভোজের আয়োজনটি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়েছে। তারপরেও কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী বা কারো বন্ধুবান্ধব অংশ নিতে চাইলে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে সব হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ