চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন আবাসিক হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আবাসিকদের শিক্ষার্থী বলা হচ্ছে এবং অনাবাসিকদের অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, আবাসিকদের জন্য টাকার পরিমাণ কম ধরলেও অনাবাসিকদের জন্য বেশি ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ফরহাদ হোসেন হলে উন্নত ভোজের টোকেন আবাসিকদের জন্য ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। অপরদিকে, অতিথিদের জন্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা; এই অতিথিরা হলেন হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। শামসুন নাহার হলে আবাসিকদের জন্য ৮০ টাকা, অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা। মিল পদ্ধতি চালু থাকা আমানত হলে আবাসিকদের জন্য ফ্রি হলেও অনাবাসিকদের জন্য ৭০ টাকা। তবে সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্যই ১৫৫ টাকা ধরা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন

চবিতে বিপ্লবী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ

এদিকে, বিজয়-২৪ হলের প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্য ৮০ টাকা উল্লেখ করলেও দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তিতে অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে অন্যান্য হলগুলোতেও একই অবস্থার কথা জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জারিফ মাহমুদ বলেন, “৫ আগস্টের ফিস্ট নিয়ে হলে হলে বিশেষ খাবারের আয়োজন করছে, সেখানে আবাসিক-অনাবাসিক আলাদা করেছে। আমার প্রশ্ন হলো, প্রশাসনদের ছাত্র বা সন্তান কি শুধু আবাসিকরা? আমরা যারা অনাবাসিক, তারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ে এসেছি?”

তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা আমাদের হলে সিট দিতে পারেননি, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। এই আবাসিক-অনাবাসিক পরিচয় বন্ধ করুন। আয়োজন করলে সবার জন্য সমান করে আয়োজন করুন। আর সেটা না পারলে আয়োজন বন্ধ করুন।”

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম শাহ ফেসবুকে লেখেন, “কোনো একটা বিশেষ দিন এলেই দেখা যায়, হল প্রশাসনগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে দাঁড় করানোর ভণ্ডামি। ৫ তারিখে আয়োজনকে ঘিরে তারা আবার সেই অতিথি টার্ম সামনে নিয়ে আসছে। ফরহাদ হলে অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ ভোজের আয়োজনের টোকেন আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা এবং অতিথিদের জন্য ১৭০ টাকা। বাকি হলগুলোতে বোধহয় তাই করেছে। কিন্তু এই অতিথিগুলোও তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।”

তিনি বলেন, “বাহির থেকে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসবে, তাদের থেকে ৭০ টাকা করে বেশি না নিলে তো হল প্রশাসন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে না। আর আপনাদের যদি সামর্থ্য নাই থাকে, কাউকেই খাওয়ায়েন না। কিন্তু ৫ আগস্টের দিনকে কেন্দ্র করে করা অনুষ্ঠানে প্রিভিলেজড-আনপ্রিভিলেজড বিষয়টা জিইয়ে রাখাটা নিতান্ত নোংরামি লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এটা নিয়ে ভাবা উচিত।”

এ বিষয়ে শহিদ মো.

ফরহাদ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “এ সিদ্ধান্তটি শুধু ফরহাদ হলের জন্য নয়, অন্যান্য হলেও এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। মূলত উন্নত ভোজের আয়োজনটি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়েছে। তারপরেও কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী বা কারো বন্ধুবান্ধব অংশ নিতে চাইলে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে সব হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর থ দ র জন য ফরহ দ হ ১৭০ ট ক

এছাড়াও পড়ুন:

এক ওভারে উড়ন্ত ৪৫ রান! ব্যাট হাতে ইতিহাস গড়লেন আফগান ব্যাটসম্যান

ক্রিকেটের বাইবেল যেন নতুন করে লিখলেন আফগান ব্যাটার উসমান গনি। এক ওভারে ৪৫ রান তুলে অনন্য এক রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন এই ওপেনার। আধুনিক ক্রিকেটে যেখানে রান বন্যার মতো বইছে, সেখানে এমন একক ঝড়ে সবার নজর কাড়লেন তিনি।

লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘ইসিএস টি-টেন ইংল্যান্ড’ টুর্নামেন্টের এক ম্যাচে উসমান গনির ব্যাটে যেন আগুন লেগে গিয়েছিল। লন্ডন কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমে গিল্ডফোর্ডের বোলার উইল আর্নিকে এক ওভারে হাঁকিয়ে দিলেন রেকর্ড পরিমাণ রান, ৪৫! এর মধ্যে ৪২ রান ব্যাট থেকে, বাকি ৩ রান অতিরিক্ত (নো বল ও ওয়াইড)। এমন কীর্তি আগে আর কোনো পেশাদার ক্রিকেট ম্যাচে দেখা যায়নি।

ওভারের বলগুলোর পরিসংখ্যান ছিল এমন: ৬+নো বল, ৬, ৪+ওয়াইড, ৬, ৪+নো বল, ৬, ০, ৬, ৪। সব মিলিয়ে ৯টি বল, ৪৫ রান।

আরো পড়ুন:

আরও এক সেঞ্চুরিতে ব্র্যাডম্যান-গাভাস্কারদের পাশে গিল

টেস্টে ৩৮তম সেঞ্চুরিতে সাঙ্গাকারার রেকর্ড ছুঁলেন রুট

ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে খরুচে ওভারের তালিকায় এটি এখন এক নম্বরে।

এই ম্যাচে উসমান গনি ছিলেন দুর্দান্ত ছন্দে। পুরো ইনিংসে মাত্র ৪৩ বলে ১৫৩ রান তুলে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ১৭টি ছক্কা ও ১১টি চার, আর স্ট্রাইক রেট ছিল ৩৫৫.৮১—যা যে কোনো ব্যাটারের স্বপ্ন!

তার ওপেনিং সঙ্গী ইসমাইল বাহরামিও ছন্দে ছিলেন, ১৯ বলে করেন ঝড়ো ৬১ রান। এই জুটির হাত ধরে লন্ডন কাউন্টি মাত্র ১০ ওভারে তোলে ২২৬ রান। যা টি-১০ ফরম্যাটে বিরল এক স্কোর।

এই পাহাড়সম রান তাড়া করতে নেমে গিল্ডফোর্ডের ইনিংস শেষ হয় মাত্র ১৫৫ রানে। কেউই অর্ধশতক ছুঁতে পারেননি। ম্যাচের ফল, ৭১ রানে লন্ডনের জয়।

একসময় আফগান জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ ছিলেন উসমান গনি। ২০১৪ সালে অভিষেকের পর তিনি খেলেছেন ১৭টি ওয়ানডে এবং ৩৫টি টি-২০। কিন্তু ২০২৩ সালে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিরতি নেন। তার ভাষায়, তিনি ফিরবেন তখনই যখন বোর্ডে থাকবে “স্বচ্ছ ম্যানেজমেন্ট ও সৎ নির্বাচনী পদ্ধতি”।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ