আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে এক দফা ঘোষণার বর্ষপূর্তির দিনে সেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সমূলে উৎপাটনের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। গত বছর ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদই শেখ হাসিনার সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন।

আজ রোববার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে দাঁড়িয়ে তিনি অভ্যুত্থানের পরে তরুণদের নেতৃত্বাধীন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গড়ে তোলার পেছনে যে আকাঙক্ষা কাজ করেছে, সেটি তুলে ধরেছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি ছিল, আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে চাই। কেবল এক ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা হটিয়ে, আরেক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উত্থানের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখে আমরা নিশ্চিন্তে ঘরে ফিরতে পারি নাই। বরং রাষ্ট্র ও সমাজে দীর্ঘদিন জেঁকে বসা এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সমূলে উটপাটনে আপনাদের তীব্র আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে আমরা আপনাদের ছাত্র–শ্রমিক–জনতা ও রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করেছি।’

সমাবেশ থেকে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ শিরোনামে ২৪ দফা ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম। এতে সংবিধান সংশোধনসহ রাষ্ট্র ও জনগণের উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন দাবি, এনসিপির ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের রূপরেখা তুলে ধরা হয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরে বাংলাদেশে এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরা আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের দ্বিতীয় রিপাবলিকের ২৪ দফা ইশতিহার ঘোষণা করছি।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির এই ২৪ দফার মধ্যে রয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার; নতুন সংবিধান ও সেকেন্ড রিপাবলিক; গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার; ন্যায়ভিত্তিক বিচারব্যবস্থা ও আইন সংস্কার; সেবামুখী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার; টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষানীতি; সার্বজনীন স্বাস্থ্য; ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্ত্বার মর্যাদা; কল্যাণমুখী অর্থনীতি; জনবান্ধব পুলিশ; নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন; গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব; তারুণ্য ও কর্মসংস্থান; বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি; টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব; স্বাধীন গণমাধ্যম ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ; শ্রমিক-কৃষকের অধিকার; জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা, নগরায়ন, পরিবহন ও আবাসন পরিকল্পনা; জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা; প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার; বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

খেলাফত মজলিসের দেশব্যাপী "বিজয় র‌্যালি’ ৫ আগস্ট

৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী "বিজয় র‌্যালি’ কর্মসূচি পালন কর‌বে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

রবিবার (৩ আগস্ট) দ‌লের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ ‘বিজয় র‌্যালি’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে ছিল এক অবিস্মরণীয় দিন। বছরের পর বছর ধরে চলা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে জনতার ক্ষোভ সে দিন রূপ নেয় ভয়াবহ গণ-অভ্যুত্থানে। লাখো ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে আসে এবং গণভবন অভিমুখে শান্তিপূর্ণ মিছিল করে। এই মিছিল ছিল ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত জবাব। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগে বাধ্য হন এবং পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন।

তি‌নি ব‌লেন, এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনীতিকে নতুন গতি দিয়েছে এবং গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এক যুগান্তকারী মাইলফলকে পরিণত হয়েছে। এই বিপ্লবের চেতনাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহ ইতিমধ্যে জুলাই মাসজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। এই ধারাবাহিকতায় আগামী ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) দেশব্যাপী ‘বিজয় র‌্যালি’ পালিত হবে।

বিবৃতিতে তিনি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলা শাখার প্রতি সাংগঠনিক প্রস্তুতির মাধ্যমে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে এই র‌্যালি পালন করার আহ্বান জানান।

তিনি দেশের সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষ করে আলেম-উলামা, ছাত্র, যুবক ও সমাজ সচেতন নাগরিকদের বিজয় র‌্যালিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণেরও আহ্বান জানান।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ