বড় ভাইয়ের বিয়েতে যাওয়া হলো না আরমানের
Published: 3rd, August 2025 GMT
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের বয়রা গ্রামে বড় ভাই নোমান হোসেনের বিয়ে। আগামীকাল সোমবার বিয়ের অনুষ্ঠান। বাড়িতে এর মধ্যেই দূরের স্বজনদের অনেকেই এসে উপস্থিত হয়েছেন। বড় ভাইয়ের বিয়েতে অংশ নিতে চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন আরমান হোসেন (১৮)। তবে বাড়িতে পৌঁছানো হয়নি তাঁর। পথেই ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে আরমানের মৃত্যু হয়। মুহূর্তে বিয়ের উৎসবে শুরু হয় শোকের মাতম।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড রেলস্টেশনের উত্তরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে নিহত আরমান দ্বিতীয়।
আরমানের বড় ভাই নোমান হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কাজ করেন চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী ইপিজেডে একটি কারখানায়। তাঁর ভাই আরমান পতেঙ্গার কাঠগড়ের একটি রেস্তোরাঁয় চাকরি করতেন। বিয়ে উপলক্ষে নোমান আগেই বাড়িতে চলে যান। তাঁর ছোট ভাই আরমান আজ সকালে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়িতে আসছিলেন। ট্রেনটি সীতাকুণ্ড পৌঁছালে অসাবধানতাবশত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যান তিনি। গুরুতর আহত আরমানকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নোমান বলেন, তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে বিয়ের আনন্দ হঠাৎ বিষাদে পরিণত হয়। এখন বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁরা লোক পাঠিয়েছেন। তাঁরা লাশ গ্রহণ করে বাড়িতে নিয়ে আসবেন বলে জানান তিনি।
সীতাকুণ্ড রেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ ছিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি শুনেছেন, সীতাকুণ্ড রেলস্টেশনের উত্তর পাশের কোনো একটি জায়গায় ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। নিহত তরুণের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে বলে জেনেছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সৌদি আরবে ফেরা হলো না তিন বন্ধুর
তিন বন্ধু লোকমান হোসেন, তুহিন হাসান ও সুমন হোসেন। তিনজনই সৌদিপ্রবাসী। ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। ছুটি শেষ করে ১০-১৫ দিনের মধ্যেই বিদেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। রোববার বিকেলে তিন বন্ধু একই মোটরসাইকেলে বেড়াতে বের হন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন তিনজনই। আর প্রবাসে ফেরা হলো না তাঁদের।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রামপুর এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় ওই তিন বন্ধুসহ পাঁচজন নিহত হন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বাড়িউড়া গ্রামের সুমন হোসেন (২৮), সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের মৈন্দ গ্রামের তুহিন হাসান (২৮) ও একই গ্রামের লোকমান হোসেন (২৯) এবং আরেক মোটরসাইকেলের আরোহী বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের সাতগাঁও গ্রামের হোসেন আকরাম এবং আকরামের মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা রংপুরের খামার মোহনা গ্রামের মো. মনিরুজ্জামান (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া থেকে রোববার বিকেলে একটি মোটরসাইকেলে তিন বন্ধু সুমন, লোকমান ও তুহিন ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক দিয়ে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরার উদ্দেশে বেড়াতে বের হন। সুমন মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। অন্যদিকে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা থেকে একটি মোটরসাইকেলে সরাইল বিশ্বরোডের উদ্দেশে রওনা হন আকরাম হোসেন ও মো. মনিরুজ্জামান। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগর উপজেলার রামপুরা এলাকায় তিন বন্ধুর মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা আকরামের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। একই সময় সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে ছেড়ে আসা হবিগঞ্জের মাধবপুরগামী একটি অটোরিকশা পেছন থেকে মোটরসাইকেল দুটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই পাঁচজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় আহত হন দুজন।
খবর পেয়ে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে।
সরাইল বাড়িউড়া গ্রামের লোকজন জানান, লোকমান, সুমন ও তুহিন কয়েক মাস আগে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। ১৭ দিন আগে সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামে লোকমান বিয়ে করেছিলেন। ১০-১৫ দিনের মধ্যে তিনজনেরই সৌদি আরবে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অটোরিকশার চালক ও যাত্রীকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।