জাতীয় নির্বাচনকালে রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। 

সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে জুলাই মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, দীর্ঘদিন পর এ দেশে সুন্দর একটা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচনে বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন। পুরো পুলিশ বাহিনীর মান-মর্যাদা পুনরুদ্ধারে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে হবে। নির্বাচনকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মহানগর এলাকায় পর্যাপ্ত জনবল মোতায়েন থাকবে। রাজধানীতে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে অপরাধের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে কাগজপত্রবিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরো পড়ুন:

জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যা: অভিযোগপত্রে নেই সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম

বান্দরবানে ঝিরি থেকে এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

তিনি বলেন, শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য ডিএমপির সব সদস্যকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আগাম তথ্য সংগ্রহ করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণ জনগণের সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। পুলিশ সদস্যদের মধ্যে সুসম্পর্ক ও বোঝাপড়া বৃদ্ধি করতে হবে।

সভায় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মো.

ফারুক হোসেন জুলাই মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি  উপস্থাপন করেন। জুলাই মাসে ঢাকা মহানগরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তাসহ ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।

সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলীসহ যুগ্ম কমিশনারগণ, উপ-কমিশনারগণ, ডিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এমআর/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এমপ র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি এতিম হয়ে গেলাম রে’

“আমি এতিম হয়ে গেলাম রে, আমার বাবা আর নেই, আমি এখন কী করবো ফুফু”- এভাবেই হাহাকার করছিলেন পাপিয়া আক্তার। বাবা হারানোর শোকে কণ্ঠ যেন পাথর ভেদ করা আর্তনাদ। পাশে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনরা। সবাই জানে, এই কান্নার আর কোনো সান্ত্বনা নেই।

পাপিয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকায় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চালক পারভেজ খানের (৪৫) মেয়ে। তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন পারভেজ খান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আরো পড়ুন:

স্কুল পরিচালকের বিরুদ্ধে ৮ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ 

শ্রেণিকক্ষে টিকটক বানানোয় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ফলসাটিয়া বাজারের পাশে থেমে থাকা স্কুল বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে ওই সময় ঘুমিয়ে ছিলেন চালক পারভেজ খান। আগুনে বাসটি মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তিনদিন ধরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবন তাকে আর সময় দেয়নি।

নিহত পারভেজ খান সদর উপজেলার বারাইভিকড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার ঘরে রয়েছে স্ত্রী, এক স্কুলপড়ুয়া ছেলে এবং ছোট মেয়ে পাপিয়া আক্তার। 

স্ত্রী চোখে মুখে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম। এখন সন্তানদের কীভাবে মানুষ করবো? কে চালাবে সংসার?”

স্থানীয়রা জানান, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যারা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পারভেজের পরিবার যেন রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়, সন্তানদের পড়াশোনা ও সংসারের ব্যয় চালাতে যেন সরকার ও প্রশাসন এগিয়ে আসে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ