সরকারের অপরিণামদর্শিতা ও অবহেলার কারণে সমস্যাগুলো ঘনীভূত হচ্ছে
Published: 12th, August 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত, অবহেলা, ব্যর্থতা ও স্বজনপ্রীতির কারণে দেশের সমস্যাগুলো আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ফলে বছর পার হলেও দেশের নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনও হুমকির মুখে পড়বে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে আয়োজিত ‘অভ্যুত্থান–উত্তর বাংলাদেশ: সংস্কার প্রস্তাবনার এক বছর’ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় এ কথা উঠে আসে। দলীয় কার্যালয়ে এই পর্যালোচনা সভার আয়োজন করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে চার দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ, সরকারের উপদেষ্টা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ, উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন ও ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করা এবং সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজন নেই এমন গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন শুরু করা।
বিভক্তি তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংস্কারের সুযোগ নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার অতীতের সরকারগুলোর স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের পথ বন্ধ করে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সংবিধান সংস্কারের পথে এগিয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে সরকার এই সুযোগ ব্যর্থ করার পথে হাঁটছে।’
সব সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়নি উল্লেখ করে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, এখনই উদ্যোগ নিলে অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনেকাংশ পূরণ করা সম্ভব। দেশের বর্তমান সমস্যাগুলোকে ভবিষ্যতে ভয়াবহ সংকটে পরিণত হওয়া থেকে ঠেকানো সম্ভব। সরকার এই উদ্যোগ নিলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সহায়তা করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন হাসনাত কাইয়ূম।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোরও উচিত ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে নিজেদের এক বছরের দলীয় কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা।
বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা সত্ত্বেও জনসমর্থন কেন বেশি এবং সংস্কার নীতিতে চলা অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোর জনসমর্থন কেন কম, সেটিও পর্যালোচনার আহ্বান জানান মজিবুর রহমান।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) সোহেল শিকদারের সঞ্চালনায় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া।
সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সমন্বয়ক সাকিব আনোয়ার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইদুল খন্দকার, জাতীয় সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান, শেখ নাসিরউদ্দীন, ফরিদুল ইসলাম এবং রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক লামিয়া ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক র জন ত ক সরক র র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডার রক্ষার দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের অধীনে থাকা বিষয়গুলোতে অন্যান্য বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১০ আগস্ট) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, নেপোটিজম নো মোর’, ‘স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডার, রক্ষা করো রক্ষা করো’, ‘পিএসসির প্রহসন, মানি না মানবো না’, ‘পিএসসির স্বজনপ্রীতি, মানি না মানবো না’, ‘শিক্ষা ক্যাডার শিক্ষা ক্যাডার, রক্ষা করো রক্ষা করো’, ‘উপদেষ্টাদের স্বজনপ্রীতি, মানি না মানবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
গল্লামারী মৎস্য খামার দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ ঘোষণা
জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের অনুমোদন বাতিলে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সামাজিক বিজ্ঞান, কলা এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কয়েকটি বিভাগের প্রস্তাবের ভিত্তিতে পিএসসি শিক্ষা ক্যাডারের আওতাভুক্ত বিদ্যমান বিষয়গুলোর সঙ্গে ওই বিভাগগুলোকে মার্জ করার পায়তারা করেছে। এটা সংশ্লিষ্ট মৌলিক বিভাগগুলোর স্বাতন্ত্র্য, মর্যাদা ও পেশাগত পরিসরে সরাসরি হস্তক্ষেপ।
তারা বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মৌলিক পাঠ্য হিসেবে প্রতিটি বিভাগের শতবর্ষের ঐতিহ্য, সুসংহত পাঠক্রম, নিজস্ব গবেষণা ক্ষেত্র এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মে গড়ে ওঠা অ্যাকাডেমিক কাঠামো রয়েছে। অন্য বিভাগের সঙ্গে মার্জ হলে এই মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে এবং শিক্ষা ক্যাডারের যোগ্যতা ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী স্মৃতি রানী বর্মণ বলেন, “শিক্ষা ক্যাডারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জন্য নির্ধারিত আসনগুলো আমাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের অধিকার। এই অধিকারে অবৈধ ও অন্যায়ভাবে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করতে আসাটা পুরোপুরি বৈষম্য। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা এই বৈষম্য কখনোই মেনে নেবে না। পিএসসির কাছে অনুরোধ থাকবে, শিক্ষার্থীদের শান্তিতে পড়াশোনা করতে দিন। দু’দিন পরপর আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না।”
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সাফাত উল্লাহ বলেন, “ম্যানেজমেন্ট থেকে সময়ে সময়ে অনেক বিভাগ সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিভাগের স্বকীয়তা আছে বলেই সেগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, তাদের ম্যানেজমেন্টের বিপরীতে শিক্ষা ক্যাডারে সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা নিছক দুরভিসন্ধি। যদি তাদের স্বকীয়তা না থাকে, তাহলে এসব বিভাগ বন্ধ করে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মার্জ করে দেওয়া হোক।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী