রাজশাহীতে অস্ত্রের সন্ধানে কোচিং সেন্টারে যৌথবাহিনীর অভিযান
Published: 16th, August 2025 GMT
রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি কোচিং সেন্টার ঘিরে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনী। বাড়ির ভেতরে বিস্ফোরক ও অস্ত্র মজুত রয়েছে- এমন খবরে এই অভিযান শুরু হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শুরু হয়ে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চলছিল।
অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা আছেন। এছাড়া রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অংশগ্রহণ রয়েছে বলে ইমেইল বার্তায় জানানো হয়েছে।
তবে অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযানের ওই বাড়ির সামনের সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘ডক্টর ইংলিশ’ কোচিং সেন্টার। বাড়িটির মালিক শফিউল আলম লাট্টু, যিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি। তার ছেলে মুনতাসির আলম অনিন্দ্য এই কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন।
অভিযানে সেনাসদস্যরা মুনতাসির অনিন্দ্যকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভেতরে তল্লাশি চালাচ্ছেন। মুনতাসির অনিন্দ্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পরিবারের সদস্য। কয়েক বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যা মামলায় তাকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলেন। তবে পরে তিনি ওই মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযান শেষ করে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার পর সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে। দুপুর পর্যন্ত কাদিরগঞ্জের ওই সড়ক বন্ধ রয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত আছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজীউর রহমান একই ইমেইল বার্তায় জানিয়েছেন, অভিযান শেষ হলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জেনে জি এম কাদের কাউন্সিল স্থগিত করেন
জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, গত ২০ মে দলের প্রেসিডিয়াম সভায় ২৮ জুন জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেনে জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। পরে আদালতের নির্দেশে সদস্যপদ ফিরে পেয়ে তাঁরা সম্মেলন আয়োজন করেন। তাই জি এম কাদের আর আইনত চেয়ারম্যান নন।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে দাবি করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আদালতে যাই, আদালত আমাদের সদস্যপদ বহাল করেন ও কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। আমরা রায় পেয়েছি ৩০ জুলাই। কাউন্সিল হয় ৯ আগস্ট। এই মধ্যবর্তী সময়ে জি এম কাদের আদালতে যাননি। এখন তিনি বাইরে চিল্লাচিল্লি করছেন। সুতরাং বিষয়টি আপনাদের বুঝতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা কাউন্সিল করেছি।’
সম্মেলন আয়োজনে কোনো তড়িঘড়ি বা লুকোচুরি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, অনৈতিকভাবে জি এম কাদের যে সম্মেলন স্থগিত করেছিলেন, সেই সম্মেলন তাঁরা আবার আয়োজন করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নম্বর–১২ তাঁরা ব্যবহার করবেন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁরা সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন।
জি এম কাদের সম্মেলনের ট্রেন মিস করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন কাদেরবিরোধী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, কাউন্সিল হয়ে গেছে। এখন আর কোনো আকুতির সুযোগ নেই। তাঁরা পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস ব্যবহার করছেন, এটা অন্যায় করছেন। শিগগির এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিলে জি এম কাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৯ আগস্ট কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। তাই আইনত জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান পদের ভিত্তি নেই। তাঁরা মিলেমিশে কাজ করার জন্য জি এম কাদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির কাদেরবিরোধী অংশের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের সর্বাত্মক সংস্কারে কাজ করেছিলেন। বর্তমানে যে ক্রান্তিকাল চলছে, তার উত্তরণে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দরকার।
আরও পড়ুননির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি চেয়ে আনিসুল-হাওলাদার কমিটির চিঠি১৩ আগস্ট ২০২৫সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন, শফিকুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম, মাসরুর মাওলা, সাইদুর রহমান, ইয়াহইয়া চৌধুরী, সরদার শাহজাহান, নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, হারুন আর রশিদ, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, মো. ইয়াকুব হোসেন, শেখ আলমগীর হোসেন, নীগার সুলতানা, মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, নাসির উদ্দিন সরকার, হাফেজ মাহমুদুর রহমান, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, শারমিন পারভীন লিজা, মিজানুর রহমান, তাসলিমা আকবর রুনা, শারমিন আকতার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর আনিসুল, ঠেকাতে সক্রিয় জি এম কাদের১৩ আগস্ট ২০২৫