রাবি শিক্ষক হত্যা ও হোলি আর্টিজানের মামলা থেকে পার পেয়েছিলেন অনিন
Published: 16th, August 2025 GMT
রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া মোস্তাসেরুল আলম অনিন্দ্য (৩৩) রাজধানীর হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলা থেকে রাজনৈতিক প্রভাবে রেহাই পেয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হলেও তিনি পার পেয়ে গিয়েছিলেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অভিযানে দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জে বাড়ির পাশেই তিনি একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন। এদিন ভোর থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কুইক রেসপন্স টিম (সিআরটি) যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
অনিন্দ্যের বাবা শফিউল আলম লাট্টু রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি। তবে অনিন্দ্য সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পরও অনিন্দ্য রেহাই পেয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী পালন, ২ শিক্ষক জেলে
রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
অভিযানে অনিন্দ্যের সঙ্গে গ্রেপ্তার দুজন হলেন- মো.
তবে পুলিশ বলছে, এরা অনিন্দ্যর সহযোগী। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তিনজনকেই কোচিং সেন্টার থেকে থানায় নেওয়া হয়।
এর আগে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অভিযানে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, সামরিক মানের দূরবীন ও স্নাইপার স্কোপ, ছয়টি দেশীয় অস্ত্র, সাতটি বিদেশি ধারালো ডেগার, পাঁচটি উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, একটি সামরিক মানের জিপিএস, একটি টিজার গান, বিপুলসংখ্যক অব্যবহৃত সিমকার্ড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ছয়টি কম্পিউটার, দেশি-বিদেশি মদ এবং ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ জব্দ করা হয়েছে।
অভিযান চলাকালে অনিন্দ্য সেনাবাহিনীকে জানান, একটি অস্ত্র তিনি পাশের পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তল্লাশি চালালেও অস্ত্রটি পাওয়া যায়নি।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এক মাসের গোয়েন্দা নজরদারির পর এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ড ও একই বছরের জুলাইয়ে গুলশানের হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি ওই দুটি মামলা থেকে রেহাই পান।
ওই দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি শরিফুল ইসলামও অনিন্দ্যের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করতেন। গ্রেপ্তারের পর শরিফুল গোয়েন্দাদের জানিয়েছিলেন, তিনি অনিন্দ্যের মাধ্যমেই আনসার-আল-ইসলামে যোগ দিয়েছিলেন। অনিন্দ্য তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, “অভিযানে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করা হবে। আটকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল-সে সম্পর্কিত মামলাতেও তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।”
জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তাদের সাধারণ অপরাধী মনে হচ্ছে না। তাদের পরিকল্পনা কী ছিল এবং আর কারো সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা রিমান্ডে নিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।”
ঢাকা/শিরিন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ন দ য র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবি শিক্ষক হত্যা ও হোলি আর্টিজানের মামলা থেকে পার পেয়েছিলেন অনিন
রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া মোস্তাসেরুল আলম অনিন্দ্য (৩৩) রাজধানীর হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলা থেকে রাজনৈতিক প্রভাবে রেহাই পেয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হলেও তিনি পার পেয়ে গিয়েছিলেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অভিযানে দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। রাজশাহী নগরের কাদিরগঞ্জে বাড়ির পাশেই তিনি একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন। এদিন ভোর থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কুইক রেসপন্স টিম (সিআরটি) যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
অনিন্দ্যের বাবা শফিউল আলম লাট্টু রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি। তবে অনিন্দ্য সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পরও অনিন্দ্য রেহাই পেয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী পালন, ২ শিক্ষক জেলে
রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
অভিযানে অনিন্দ্যের সঙ্গে গ্রেপ্তার দুজন হলেন- মো. রবিন ও মো. ফয়সাল। তারা কোচিং সেন্টারে চাকরি করতেন বলে দাবি করেছে তাদের পরিবার।
তবে পুলিশ বলছে, এরা অনিন্দ্যর সহযোগী। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তিনজনকেই কোচিং সেন্টার থেকে থানায় নেওয়া হয়।
এর আগে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অভিযানে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, সামরিক মানের দূরবীন ও স্নাইপার স্কোপ, ছয়টি দেশীয় অস্ত্র, সাতটি বিদেশি ধারালো ডেগার, পাঁচটি উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, একটি সামরিক মানের জিপিএস, একটি টিজার গান, বিপুলসংখ্যক অব্যবহৃত সিমকার্ড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ছয়টি কম্পিউটার, দেশি-বিদেশি মদ এবং ১১টি নাইট্রোজেন কার্টিজ জব্দ করা হয়েছে।
অভিযান চলাকালে অনিন্দ্য সেনাবাহিনীকে জানান, একটি অস্ত্র তিনি পাশের পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তল্লাশি চালালেও অস্ত্রটি পাওয়া যায়নি।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এক মাসের গোয়েন্দা নজরদারির পর এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ড ও একই বছরের জুলাইয়ে গুলশানের হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি ওই দুটি মামলা থেকে রেহাই পান।
ওই দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি শরিফুল ইসলামও অনিন্দ্যের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করতেন। গ্রেপ্তারের পর শরিফুল গোয়েন্দাদের জানিয়েছিলেন, তিনি অনিন্দ্যের মাধ্যমেই আনসার-আল-ইসলামে যোগ দিয়েছিলেন। অনিন্দ্য তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, “অভিযানে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করা হবে। আটকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল-সে সম্পর্কিত মামলাতেও তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।”
জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তাদের সাধারণ অপরাধী মনে হচ্ছে না। তাদের পরিকল্পনা কী ছিল এবং আর কারো সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা রিমান্ডে নিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।”
ঢাকা/শিরিন/মেহেদী