জাকসু নির্বাচন: উপাচার্যের বিরুদ্ধেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
Published: 27th, August 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন (জাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের অনুষ্ঠান ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রাক্তন ও বর্তমান নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে।
আরো পড়ুন:
সিন্ডিকেটে জকসু সংবিধি গৃহীত
ডাকসু নির্বাচন: সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তে আপত্তি এজিএস প্রার্থীর
এমনকি নির্বাচনের এ আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তারের বিরুদ্ধে।
প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা নিজেরাই আইন অমান্য করলে অন্যদের অবস্থা অবস্থা কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহল। পাশাপাশি জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য হয়ে নির্বাচনকালীন সময়ে ছাত্রদলের দলীয় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করায় কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে নিহত ছাত্রদল নেতা কবিরের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ-মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্রদল। তবে দলীয় ব্যানারে এ রকম একটি জনসমাগম প্রজ্ঞাপন অনুসারে স্পষ্টত বেআইনি।
গত ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান (মুকুল) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের অনুষ্ঠান সভা-সমাবেশ, কর্মসূচি এবং মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিতির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “মসজিদ তো এবাদতের জায়গা, এখানে দোয়া মাহফিলে হয়েছে, তাই আমি যোগ দিয়েছি। দোয়া মাহফিলে হাজির হলে দোষের কিছু নেই, রাজনীতিও করার কিছু নেই।”
তবে ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ সময়ে ছাত্রদলকে বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “তারা প্রতি বছরই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। তবে আমরা প্রথমে বলেছি না করলে ভালো হয়। তারা জানিয়েছে, শুধু দোয়া করবে। তাই ঊর্ধ্বতনদের মৌখিক অনুমতি নিয়ে তারা দোয়া মাহফিল করেছে। তবে না করলে ভালো হত।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল অন ষ ঠ ন ছ ত রদল
এছাড়াও পড়ুন:
মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) মনোনয়নপত্র নিতে এসে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাঁর নাম সালমান রহমান। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি।
নির্বাচনী আচরণবিধি–২ এর ক অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সালমান রহমান ৮ থেকে ১০ জন সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আসেন। মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর চাকসু ভবনের ভেতরেই সালমানের নাম ধরে স্লোগান দেন সমর্থকেরা। স্লোগান দিতে দিতে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নামেন তাঁরা। এ সময় সালমান রহমান সবার মাঝখানেই ছিলেন। তাঁকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।
আচরণবিধি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করে সালমান রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়বেন। তাঁর সমর্থকেরা না বুঝে স্লোগান দিয়েছেন। এ ধরনের ভুল আর হবে না।
জানতে চাইলে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এসব বিষয় দেখভালের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র বিতরণ। আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার শেষ দিন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র বুধবার পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।