নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কে কত ভোট পেলেন
Published: 29th, August 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক (২০২৫-২০২৬) নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির ও সাধারণ সম্পাদক এইচএম আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বাধীন প্যানেল ১৭ পদের মধ্যে ১৬টি পদেই বিজয়ী হয়েছেন। শুধুমাত্র কার্যকরী সদস্য ১ টি পদে জয়ী হয়েছেন জামায়াতের প্যানেলের নারী প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দিনগত রাত ১২ টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়া এ ফলাফল ঘোষণা করে। এর আগে সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বার ভবনের তৃতীয় তলায় উৎসবমুখর পরিবেশে চলে ভোটগ্রহণ। এতে মোট ১১৭২ জন ভোটারের মধ্যে ১০৫৩ জন ভোট প্রদান করেন।
এদের মধ্যে নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন, সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির (ভোট ৬০০), সিনিয়র সহসভাপতি কাজী আ.
লাইব্রেরি সম্পাদক হাবিবুর রহমান (ভোট ৫৯০), ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল ইসলাম (ভোট ৬৪৫ ), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সারোয়ার জাহান (ভোট ৫৭২), সমাজসেবা সম্পাদক রাজিব মন্ডল (ভোট ৬০০), আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মামুন মাহমুদ (ভোট ৫৮৫)।
সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছেন, ফাতেমা আক্তার সুইটি (ভোট ৬৯৭), দেওয়ান আশরাফুল (ভোট ৭৩৪), তেহসিন হাসান দিপু (ভোট ৫৭৪), আবু রায়হান পেয়েছেন (ভোট ৬৯৪)। জামায়াত সমর্থিত প্যানেল থেকে সদস্য পদে আফরোজা জাহান ৫২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ফলাফল ঘোষণা শেষে বিজয়ীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন নেতাকর্মী ও সমর্থক আইনজীবীরা। এসময় প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত জামায়াতের আইনজীবীরাও জয়ীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
পরাজিত জামায়াত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট হাফিজ মোল্লাহ ৩০৬ ভোট ও বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম খান রেজা পেয়েছেন ১৪১ ভোট। সেক্রেটারি পদে জামায়াত প্যানেলের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন মিয়া ১২৮ ভোট ও বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেলের অ্যাডভোকেট গালিব পেয়েছেন ১৮৬ ভোট।
সিনিয়র সহসভাপতি পদে বিএনপির বিদ্রাহী প্যানেলের অ্যাডভোকেট সামছুজ্জামান খোকা ১৪৯ ভোট ও জামায়াতের প্যানেলের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর দেওয়ান ১৫৭ ভোট পেয়েছেন। সহসভাপতি পদে বিএনপির বিদ্রাহী প্যানেলের অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান ৩৯ ভোট, জামায়াতের অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৩৩ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এডভোকেট মোহাম্মদ আলী পেয়েছে ২৬১ ভোট।
বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মোমেন ১২৪ ভোট, কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আফজাল হোসেন ১৩২ ভোট, আপ্যায়ন সম্পাদক সম্পাদক শাহ আলম শামীম ৫৫ ভোট, লাইব্রেরী সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলী আজম ১২১ ভোট, ক্রীড়া সম্পাদক শহীদ সারোয়ার ১০৪ ভোট,
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নার্গিস পারভীন ২৯৬ ভোট, সমাজসেবা সম্পাদক পদে শাহনাজ পারভীন হীরা ১৬০ ভোট, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনি গাঙ্গুলী ১৫৫ ভোট এবং সদস্য পদে অ্যাডভোকেট আব্দুর রউম মাসুম ৭২ ভোট ও অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল আজীম ১৩৮ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন ।
বাংলাদেশ ল'ইয়ারস কাউন্সিল মনোনীত জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের প্যানেলে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আল আমিন ২১২ ভোট, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট ইসরাফিল ১২৯ ভোট, আপ্যায়ন সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ১৫০ ভোট, লাইব্রেরি সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার ৩০১ ভোট,
ক্রীড়া সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন ২৫৫ ভোট, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান ১৪৩ ভোট, সমাজ সেবা সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট নূরে আলম ২৪৭ ভোট, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান ২৬৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
সেই সাথে সদস্য পদে অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা ২৫৪ ভোট, অ্যাডভোকেট তাওফিকুল ইসলাম ৩৯৩ ভোট, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম ১৯৪ ভোট ও অ্যাডভোকেট রাকিবুল হাসান ২৮১ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। জামায়াতের প্যানেল থেকে কার্যকরী সদস্য পদে অ্যাডভোকেট আফরোজা জাহান ৫২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তিন প্যানেলের সমর্থনে আইনজীবী এবং শীর্ষ নেতারা পৃথক তিনটি প্যান্ডেলের ভেতর বসে তাদের প্রার্থীদের উৎসাহ যুগিয়েছেন। ভোট নিয়ে সাধারণ আইনজীবী ও প্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে মহানগরের সকল নেতাকর্মীরা প্যান্ডেলের ভেতর চেয়ারে বসে ছিলেন। একইভাবে জামায়াতের প্যান্ডেলে জেলা ও মহানগরের শীর্ষনেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেলের পক্ষেও তাদের সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আদালতপাড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন বিপুল সংখ্যক বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র ব দ র হ সদস য পদ ত হয় ছ ন র রহম ন আইনজ ব পর জ ত সমর থ
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত করেছে এডহক কমিটি। সমিতির সদস্য সচিব শেখ নুরুল হাসান রুবা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শেখ নুরুল হাসান রুবা বলেন, ‘‘৯৪ জন আইনজীবী নির্বাচন ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্থগিতের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে দুপুর ২টায় বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়। সভায় নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
আরো পড়ুন:
তৃতীয় খসড়া তালিকা প্রকাশ, বাড়ল ভোটার
যারা সংস্কারের পক্ষে, তাদের সঙ্গে এনসিপির জোট হবে: হাসনাত
নির্বাচন স্থগিতের সংবাদে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ আইনজীবীরা।
আজ রবিবার (২ নভেম্বর) বিকালে খুলনা প্রেস ক্লাবে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান জামায়াত সমর্থিত বাংলাদেশ ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল ও এনসিপি সমর্থিত স্বতন্ত্র আইনজীবী পরিষদের প্রার্থীরা।
ল’ ইয়াস কাউন্সিলের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম পান্না বলেন, ‘‘এর আগেও মনোনয়ন বিক্রির শেষ দিনে কথিত সাধারণ সভার নামে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। আজ একই কায়দায় আবারো এডহক কমিটি নির্বাচন স্থগিত করল। এটা অগণতান্ত্রিক, নব্য ফ্যাসিস্টের বহিঃপ্রকাশ।’’
তিনি বলেন, ‘‘দেশে অনেক আইনজীবী সমিতিতে নির্বাচন হয়েছে এবং হচ্ছে। আইনজীবী সমিতির বর্তমান এডহক কমিটি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে, যা নতুন বিপ্লবের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।’’
স্বতন্ত্র আইনজীবী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আকতার জাহান রুকু বলেন, ‘‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরে জেলা আইনজীবী সমিতিতে যে এডহক কমিটি গঠন করা হয়, তার মেয়াদ ছিল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু এডহক কমিটি টালবাহানা করে সাধারণ সভা দিয়ে মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমরা তা মেনে নিয়েছিলাম।’’
তিনি নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানান।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর ছিল মনোনয়নপত্র জমা ও উত্তোলনের শেষ দিন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল