ঐক্যবদ্ধ নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলার আহ্বান রাজনৈতিক দলগুলোর
Published: 29th, August 2025 GMT
গণসংহতি আন্দোলনের ২৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিকেল ৫ টায়নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে 'গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নারায়ণগঞ্জ গঠনে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা ও বাস্তবতা' শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন এবং সঞ্চালনা করেন অঞ্জন দাস।
মতবিনিময়সভায় এড.
আমি মনে করি নারায়ণগঞ্জ একটা অবহেলিত জেলা। শত বছরে প্রাচ্যের ড্যান্ডির জৌলশ ক্রমাগতভাবে নি:শেষ হচ্ছে। আমরা সেই জৌলুশকে আবার ফিরিয়ে আনতে চাই। সেটার জন্য দরকার গণঅভ্যুত্থানের অংশীদারদের ঐক্যবদ্ধ থাকা।
মাসুম বিল্লাহ বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আজকের এই আয়োজনের জন্য গণসংহতি আন্দোলনকে ধন্যবাদ জানাই। নারায়ণগঞ্জ এর বিভিন্ন সংকট নিয়ে আমাদের ঘন ঘন একসাথে বসা উচিত। গণসংহতি আন্দোলন সেই চেষ্টায় যথেষ্ট উদগ্রীব। নারায়ণগঞ্জের সঙ্কট মোকাবিলায় সম্মিলিত ঐক্যের চেষ্টা গণসংহতি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সভাপতির বক্তব্যে তরিকুল সুজন বলেন, আজ আমাদের দলের ২৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। গত ১৭ বছর আমরা গুম-খুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। গত ৫ আগষ্ট হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে সারাদেশসহ নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা দুর হয়েছে। এখন নারায়ণগঞ্জকে নতুন করে গঠন করার সময়।
পরিকল্পিত, টেকসই নারায়ণগঞ্জ গড়তে এখন দরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যের গুনগত পরিবর্তন এবং নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য মর্যাদা সম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। সেটার জন্য প্রাথমিক অর্জন হিসেবে প্রয়োজন বি ক্যাটাগরির জেলা নয়, নারায়ণগঞ্জকে বিশেষ জেলার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করা। ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জ অবহেলিত হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জকে ডাম্পিং জোনে পরিণত করা হচ্ছে।
হাসিনার সময়ে বহু অপ্রয়োজনীয় এবং লুটপাটের উদ্দেশ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সেগুলোকে বাতিল করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে, নারায়ণগঞ্জের বিশেষ বৈশিষ্ট্যকে প্রাধান্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আর তার জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ নারায়ণগঞ্জ।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড সাখাওয়াত হোসেন খান, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সমন্বয়কারী বিপ্লব খান, নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রাণী সরকার, এবি পার্টির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা কমিটির সভাপতি শাহজাহান ব্যাপারী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, জাসদ (রব) এর নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সভাপতি মোতালেব মাস্টার, জাসদ (আম্বিয়া) জেলা সভাপতি সোলায়মান দেওয়ান, বিএনপি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, গণসংহতি আন্দোলন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান জিয়া, বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাকিব হাসান হৃদয়, জুলাই যোদ্ধা খান মাহমুদ প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল ন র য়ণগঞ জ র সমন বয়ক র র জন য কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।