সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি আলামিননগর এলাকায় নিজ জমিতে বালু ভরাট করে কাজ করার সময় দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সংঘবদ্ধ একটি চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো: মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা চাঁদার অভিযোগ দায়ের করেন। বিবাদীরা হলো- সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি মজিববাগ এলাকার মৃত আমির হোসেনের ছেলে মো: মানিক (৩৫), মালেক (৩৮) ও মো: রবিউল (৪২) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন চাঁদাবাজ চক্র।

স্থানীয়রা জানান, এই চাঁদাবাজ চক্রটি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলেও প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন নিরহ মানুষদের কাছে চাঁদা চেয়ে হয়রানি করতো। কিছুদিন তারা লুকিয়ে থাকলেও আবার মাথা নাড়া দিয়ে উঠছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার দাাব জানান বসবাসরত নিরহ ব্যক্তিরা।

অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেছেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মিজমিজি আলামিননগর সাকিনস্থ জনৈক কবির মিয়ার বাড়ী সংলগ্ন আমি (মোজাম্মেল হক) সহ আমার পার্টনার মো.

রাসেল হোসেন (৩২) পিতা মৃত আইয়ুব আলী, মো. শেখ ফরিদ ভূঁইয়া (৫০) পিতা মৃত হাজী নান্নু ভূঁইয়ার মালিকানাধীন ৫.৭৫ শতাং জমি রয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট তারিখে আনুমানিক দুপুর আড়াইটার দিকে ঘটিকার সময় উক্ত জমিতে লেবার দ্বারা বালু ভরাট করিতে থাকিলে উপরোক্ত বিবাদীরা সংঙ্গবদ্ধ চাঁদাবাজ বাহীনি নিয়ে কর্মরত লেবারদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কাজ করতে বাঁধা প্রদান করে। 

এমন ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমার জমির কাছে গেলে বিবাদীরা আমাদের নিকট পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিবাদীরা আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে আমাদেরকে মারপিট করিতে উদ্যত হয়।

আমরা তাদের দাবিকৃত চাঁদা পাঁচ লাখ টাকা না দিলে আমাদের জমিতে বালু ভরাটসহ কোন কাজকর্ম করতে দিবে না মর্মে হুমকি দেয়। এবং এ বিষয়ে থানা পুলিশের আশ্রয় নিলে বিবাদীরা আমাদেরকে খুন-জখম করবে বলে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে চলে যায়। 

এঘটনার অভিযোগ তদন্তকারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন বলেন অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক

ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।

চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।

সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ