বলিউডের আলোচিত প্রাক্তন তারকা দম্পতি আরবাজ খান ও মালাইকা আরোরা। ২০১৭ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন এই যুগল। তাদের বিয়েবিচ্ছেদ নিয়ে নানারকম জলঘোলা হয়েছে। তবে এই বিচ্ছেদ চাননি মালাইকা। পাশাপাশি দাবি করেন—আরবাজের সঙ্গে সুখী ছিলেন না এই অভিনেত্রী।
  
পিঙ্কভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মালাইকা আরোরা বলেন, “আমি চাইতাম আমার বিয়েটা আজীবন টিকে থাকুক। কিন্তু তা হয়নি। তার মানে এই না যে, আমি ভালোবাসায় বিশ্বাস হারিয়েছি বা আমার নেওয়া সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। এর মানে এই না যে, আমি আমার জীবনের গতিপথ বদলাতে পারতাম, না! যা হওয়ার ছিল, সেটাই হয়েছে।”

জীবনের অভিজ্ঞতা মিশিয়ে মালাইকা আরোরা বলেন, “জীবনে অনেক পরিস্থিতি আসে, যখন মানুষ সবকিছু ঠিক করার চেষ্টা করে—যাতে ভালো কিছু বেরিয়ে আসে। কিন্তু এমন একটা সময় এলো যখন আমরা দুজনেই বুঝলাম যে, ‘এটা আর চলবে না।”

আরো পড়ুন:

৩ সন্তানের মা হতে চান জাহ্নবী

ভাঙা প্রেমকে ‘মুছে ফেলা অধ্যায়’ বললেন শমিতা শেঠি

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে মালাইকা আরোরা বলেন, “মানুষ মনে করে, নিজের কথা ভাবা ভুল। ‘তুমি নিজেকে নিয়ে কীভাবে আগে ভাবতে পারো? তোমার তো সন্তান আছে, পরিবার নিয়ে আগে ভাবা উচিত।’ কিন্তু নিজের কথা ভাবার মধ্যে ভুলটা কোথায়?”

আরবাজের সঙ্গে সুখী ছিলেন না মালাইকা। তা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “সবাই বলে, আগে নিজেকে ভালোবাসো, তারপর অন্য কাউকে।’ সেই সময় বুঝেছিলাম, আমাকে আগে সুখী হতে হবে, তারপর অন্যকিছু ঠিক করা সম্ভব। আমি সুখী ছিলাম না।”

মালাইকার ডিভোর্সের সিদ্ধান্তকে মানুষ ‘স্বার্থপর’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তাদের উদ্দেশে মালাইকা বলেন, “আপনার কাছে এটা স্বার্থপর মনে হতে পারে। আমি যা অনুভব করেছি, তাই করেছি। কীভাবে তুমি নিজেকে নিয়ে আগে ভাবতে পারো—এটা মানুষের পক্ষে বোঝা কঠিন। হ্যাঁ, আমি নিজেকে নিয়ে আগে ভেবেছি। সেই সিদ্ধান্তই আজ আমাকে একজন ভালো মানুষ তৈরি করেছে। আমি এখন নিজের সঙ্গে অনেক বেশি শান্তিতে আছি, আমি অনেক সুখী। শুধু তাই নয়, আমার সন্তানও এখন অনেক ভালো এবং সুখী পরিবেশে আছে। আমি মনে করি না, সে এমন একটা পরিবেশে থাকতে চাইত, যেখানে কোনো কিছুই ঠিকঠাক ছিল না।”

২০২২ সালে ফারাহ খান সঞ্চালিত একটি অনুষ্ঠানে আরবাজের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ নিয়ে কথা বলেছিলেন মালাইকা। আরবাজের সঙ্গে সংসার বাঁধার প্রস্তাব প্রথমে মালাইকাই দিয়েছিলেন। তা উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন—“আরবাজকে আমি প্রথম প্রপোজ করি। এ বিষয়টি কেউ-ই জানে না। আরবাজ আমাকে প্রপোজ করেনি। আমিই ওকে বলেছিলাম, বিয়ে করতে চাই। তুমি তৈরি তো? আর খুব মিষ্টিভাবে ও জবাব দিয়েছিল, ‘তুমি দিন আর জায়গা ঠিক করো।”

ব্যক্তি আরবাজের প্রশংসা করে মালাইকা বলেছিলেন, “আরবাজ দারুণ একজন মানুষ। সে আমাকে আজকের মালাইকা হতে দিয়েছে। আজকে আমি যা হয়েছি, তার পেছনে রয়েছে আরবাজ। সে আমাকে একজন ব্যক্তি হিসেবে তৈরি করেছে।”

সংসার ভাঙার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মালাইকা বলেছিলেন, “আমরা ভেসে গিয়েছিলাম। আমরা খুব ছোট ছিলাম। বিশেষ করে আমার বয়স অনেক কম ছিল। আমার মনে হয় আমিও অনেক বদলে গিয়েছি। আমি জীবনে ভিন্ন কিছু চাইছিলাম। আমি অনুভব করছিলাম, আমার স্পেস প্রয়োজন, এজন্য আমার সরে যাওয়া উচিত।”

“এটা করার জন্য একমাত্র উপায় কিছু বন্ধন ছিঁড়ে ফেলা। আমরা খুব বিরক্ত, খিটখিটে এবং রাগান্বিত হয়ে গিয়েছিলাম। আমার মনে হয়, আজকে আমরা ভালো আছি। আমরা পরস্পরকে ভালোবাসি এবং সম্মান করি। আমাদের একটি সন্তান রয়েছে। যার কারণে কিছু বিষয় আমাদের কখনই বদলাবে না। আমরা দূরে থেকে ভালো আছি।” বলেছিলেন মালাইকা।

আরবাজের সঙ্গে বিচ্ছেদের বিষয়ে কথা বলতে বলতে সেদিন কেঁদে ফেলেছিলেন মালাইকা। তারপর অনুষ্ঠানের অতিথি ফারাহ খানকে জড়িয়ে ধরেন এই অভিনেত্রীকে।

আরবাজের সঙ্গে ডিভোর্সের পর অর্জুন কাপুরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়ান মালাইকা। শুরুতে গোপন করলেও তাদের সম্পর্কের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। মাঝে তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিচ্ছেদের গুঞ্জন শোনা যায়। তবে সেসব উড়িয়ে মাঝেমধ্যে একসঙ্গে দেখা দেন এই জুটি। 

অন্যদিকে, নতুন করে সংসার শুরু করেছেন আরবাজ খান। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে হেয়ারস্টাইলিস্ট শুরা খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি। শুরা খান এখন অন্তঃসত্ত্বা। আপাতত সন্তানের আগমনের অপেক্ষায় আরবাজ-শুরা। 

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ল ন সন ত ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে