৭ মাস পর উৎপাদনে ফিরল সাফকো স্পিনিং
Published: 2nd, September 2025 GMT
পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাফকো স্পিনিংয়ের কারখানা তিন দফা সাত মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে উৎপাদনে ফিরেছে। গত রবিবার (৩১ আগস্ট) কোম্পানিটির উৎপাদন শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে চলতি বছরের গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাফকো স্পিনিংয়ের কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে বন্ধ পায় ডিএসইর তদন্ত দল, যা ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি সাফকো স্পিনিং কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কোম্পানির লোকসান কমানোর জন্য গত ১ ফেব্রুয়ারি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে, যা দুই মাস বা মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এরপরে পরিস্থিতির উন্নতি হলে পুনরায় উৎপাদন শুরু করা হবে। তবে ওই মেয়াদ শেষ হলেও উৎপাদন শুরু হয়নি সাফকো স্পিনিংয়ের।
এরপরে প্রথম দফায় ২ মাস বা মে মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপরেও উৎপাদন শুরু করতে পারেনি সাফকো স্পিনিং কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় আড়াই মাস বাড়িয়ে বা ১৬ আগস্ট পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে করেও উৎপাদনে ফিরতে পারেনি সাফকো স্পিনিং।
পরবর্তীতে তৃতীয় দফায় ২ সপ্তাহ বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট উৎপাদনে ফেরার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে এবার উৎপাদনে ফিরতে পেরেছে বলে জানিয়েছে সাফকো স্পিনিং কর্তৃপক্ষ।
সাফকো স্পিনিং মিলসের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৬ মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪) ব্যবসায় ১১৬ শতাংশ পতন হয়েছে। কোম্পানিটির ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৬ মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (৩.
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের গৃহকর এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। এ কারণে চলতি অর্থবছরে সিটি করপোরেশনকে গৃহকর পরিশোধ করেনি সংস্থাটি। এতে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এবার প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি গৃহকর পরিশোধ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) দিয়েছিল ১৪৫ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরগুলোতে পরিশোধ করত ৪৫ কোটি টাকা করে। কিন্তু সিটি করপোরেশন এবার ১৬০ কোটি টাকা দাবি করলেও বন্দরের মতে, বার্ষিক গৃহকর হচ্ছে ৪৫ কোটি টাকা। যা তারা একসঙ্গে আগেই পরিশোধ করেছে। এ নিয়ে দুই সংস্থার মধ্যে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে গৃহকর জটিলতা নিষ্পত্তির জন্য গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ সদস্যের কমিটি যৌথ জরিপ করে গৃহকর চূড়ান্ত করার কথা। তবে আড়াই মাস পার হয়ে গেলেও গৃহকর চূড়ান্ত করা হয়নি। এ অবস্থায় আজ রোববার উভয় পক্ষ আবার গৃহকর নির্ধারণের বিষয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গৃহকর আদায় হয়েছে ৭১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আদায়ের হার ২১ শতাংশ। গত অর্থবছরে আয়ের পরিমাণ ছিল ১০২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে গত বছরই সবচেয়ে বেশি গৃহকর আদায় হয়েছিল, যার পরিমাণ ছিল ৩০৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
যৌথ জরিপ কমিটি গঠন করা হলেও এখনো বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হয়নি। কীভাবে চূড়ান্ত করা হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। রোববার আবার বসবে। এর মধ্যে কিসের ভিত্তিতে বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হবে, তা নির্ধারণ করার কথা রয়েছে।এস এম সরওয়ার কামাল, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনচট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিজস্ব রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস গৃহকর। আদায় কমে যাওয়ায় মোট রাজস্ব আয়েও তার প্রভাব পড়েছে। গত বছর যেখানে এই সময়ে গৃহকরসহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এবার তার পরিমাণ মাত্র ১১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
গত অর্থবছরে সিটি করপোরেশন বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে বার্ষিক গৃহকর দাবি করে ১৬০ কোটি টাকা। ছাড় পাওয়ার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ দুই দফায় ১৪৫ কোটি টাকা পরিশোধ করে। এবারও বন্দরের কাছে বার্ষিক ১৬০ কোটি টাকা দাবি করে চিঠি দেওয়া দিয়েছিল সিটি করপোরেশন।
এরপর গৃহকর নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি আবার সামনে আসে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সিটি করপোরেশনের দাবি অনুযায়ী গৃহকর পরিশোধ করেনি। উল্টো চিঠি দিয়ে জানায়, বন্দরের জন্য নির্ধারিত বার্ষিক গৃহকর ৪৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) ১৪৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নির্ধারিত গৃহকর পরিশোধের পরেও অতিরিক্ত থাকবে ৫৫ কোটি টাকা। গৃহকর নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে দুই সংস্থা পাঁচ সদস্যের যৌথ জরিপ কমিটি গঠন করে গত আগস্টে। এই কমিটি বন্দরের গৃহকর হার নির্ধারণ করবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিজস্ব রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস গৃহকর। আদায় কমে যাওয়ায় মোট রাজস্ব আয়েও তার প্রভাব পড়েছে। গত বছর যেখানে এই সময়ে গৃহকরসহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এবার তার পরিমাণ মাত্র ১১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এস এম সরওয়ার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, যৌথ জরিপ কমিটি গঠন করা হলেও এখনো বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হয়নি। কীভাবে চূড়ান্ত করা হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। রোববার আবার বসবে। এর মধ্যে কিসের ভিত্তিতে বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হবে, তা নির্ধারণ করার কথা রয়েছে।
সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সময় বন্দরের বার্ষিক গৃহকর নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬০ কোটি টাকা। কিন্তু অপসারিত মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী বন্দরের আবেদনের পর গৃহকর ধার্য করেন ৪৫ কোটি টাকা। এই হারে গৃহকর পরিশোধ করে আসছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ।
তবে বর্তমান মেয়র শাহাদাত হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৬০ কোটি টাকা করে গৃহকর আদায়ের জন্য তৎপর হন। এ জন্য গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশন বন্দর কর্তৃপক্ষকে বকেয়া ১১৫ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য চিঠি দেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ এপ্রিল ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করে বন্দর।