অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মিচেল স্টার্ক আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন।

মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকালে (অস্ট্রেলিয়া সময়) তিনি এই ঘোষণা দেন। একই দিনে নিউ জিল্যান্ড সিরিজের জন্য অস্ট্রেলিয়া দল ঘোষণা করে। যা হবে আসন্ন ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ।

আরো পড়ুন:

সিরিজ জয়ের পাশাপাশি বেঞ্চ পরীক্ষায় সফল হয়ে উচ্ছ্বসিত লিটন

বিসিবি নির্বাচন অক্টোবরে

বামহাতি এই গতিতারকা ২০১২ সালে অভিষেকের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মোট ৬৫ ম্যাচ খেলেছেন। তার সংগ্রহ ৭৯ উইকেট, গড় ২৩.

৮১ এবং ইকোনমি রেট ৭.৭৪। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টিতে তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার।

অস্ট্রেলিয়ার ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন স্টার্ক। তবে ৩৫ বছর বয়সে এসে তিনি মনোযোগ দিতে চান টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে। নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, “টেস্ট ক্রিকেট সবসময়ই আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ছিল। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রতিটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ উপভোগ করেছি, বিশেষ করে ২০২১ বিশ্বকাপ জয়টা ছিল অসাধারণ অভিজ্ঞতা। সামনে ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ, অ্যাশেজ এবং ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে মনে করছি— এখন টেস্ট ও ওয়ানডেতে মনোযোগ দেওয়া আমার জন্য সেরা পথ।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এতে আমাদের বোলিং ইউনিটও পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যথেষ্ট প্রস্তুতির সময় পাবে।”

অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্টার্কের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে তার ভীষণ গর্বিত হওয়া উচিত। ২০২১ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তার বল হাতে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা সবসময় অসাধারণ ছিল।”

তিনি আরও জানান, স্টার্ককে যথাসময়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানো হবে। তবে সবচেয়ে স্বস্তির বিষয় হলো, স্টার্ক এখনও টেস্ট ও ওয়ানডেতে দীর্ঘ সময় খেলার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

আসন্ন নিউ জিল্যান্ড সিরিজে অস্ট্রেলিয়া পাবে না আরেক তারকা প্যাট কামিন্সকে। পিঠের ইনজুরিতে তিনি মাঠের বাইরে এবং একই কারণে অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজেও থাকবেন না। এছাড়া পিতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় নাথান এলিসও নেই দলে।

নিউ জিল্যান্ড সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দল:
মিচেল মার্শ (অধিনায়ক), ট্রাভিস হেড, ম্যাথু শর্ট, জশ ইংলিস, মিচেল ওভেন, মার্কাস স্টয়নিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, টিম ডেভিড, শন অ্যাবট, বেন ডুয়ারশুইস, জেভিয়ার বার্টলেট, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজলউড ও ম্যাট কুহনেমান।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৫ কোম্পানির শেয়ার কারসাজি: ৩ জনকে দেড় কোটি টাকা অর্থদণ্ড

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি কোম্পানির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অভিযুক্তরা এর আগে শেয়ার ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের হিরুর সহযোগী হিসেবে শেয়ার কারসাজিতে জড়িত ছিলেন এবং তাদেরকে একাধিকবার জরিমানা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

শেয়ার কারসাজির কোম্পানিগুলো হলো- গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স পিএলসি, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেড, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, পিপলস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির কর্মকর্তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তথ্য মতে, ২০২১ সালের ১৯ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত সময়ে তারা একে অপরের সঙ্গে যোগসাজশ করে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়িয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই সময়ে অর্থাৎ ১০ দিনে কোম্পানির শেয়ারের দাম বহুগুণ বেড়ে যায়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে দীর্ঘদিন পর কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।

পুঁজিবাজারে ওই সময়কালে গুঞ্জন ছিল- গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ও রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজি চলছে। কোম্পানিটির ব্যবসা ও আর্থিক অবস্থার উন্নতির কারণে নয়, বরং কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়েছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন যেকোনো ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৯ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত সময়ে ৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কারসাজি করে বাড়ানোর দায়ে ৩ ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে মো. সাইফ উল্লাহকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা, মো. এ.জি. মাহমুদ ও মো. সাইফ উল্লাহকে যৌথভাবে ৪২ লাখ টাকা ও এস. এম. মোতাহারুল জানানকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সে হিসেবে অভিযুক্তদের মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।

কারসাজিতে জড়িতদের পরিচিতি

স্বল্প সময়ের মধ্যে ৫টি কোম্পানির শেয়ার কারসাজি করে মো. সাইফ উল্লাহ, মো. এ.জি. মাহমুদ ও এস. এম. মোতাহারুল জানান বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ শেয়ার কারসাজিতে নেতৃত্ব দেন শেয়ার ব্যবসায়ী মো. সাইফ উল্লাহ। আর তাকে সহযোগিতা করেন শেয়ার ব্যবসায়ী মো. এ.জি. মাহমুদ ও এস. এম. মোতাহারুল জানান। এর মধ্যে মো. সাইফ উল্লাহর শ্যালক মো. এ.জি. মাহমুদ। আর এস. এম. মোতাহারুল জানান তাদের সহযোগী। সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্স লিমিটেডে অভিযুক্ত ৩ ব্যক্তির বিও হিসাব রয়েছে। তারা সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ায়। তারা সবাই সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক ও বিশিষ্ট শেয়ার ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের হিরুর সহযোগী।

এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্ব থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে শেয়ার কারসাজির জন্য মো. সাইফ উল্লাহকে ১৫ লাখ টাকা ও মো. এ.জি. মাহমুদকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজিতেও জড়িত থাকার অভিযোগে হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানকে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, মো. সাইফ উল্লাহকে ৫০ লাখ টাকা ও মো. এ.জি. মাহমুদকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়।

ওই বছরের মে মাসে ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার নিয়ে শেয়ার কারসাজির জন্য মো. সাইফ উল্লাহকে ৩০ লাখ টাকা এবং মো. এ.জি. মাহমুদকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

একই বছরের আগস্টে জনতা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে মো. সাইফ উল্লাহকে ৪০ লাখ টাকা এবং মো. এ.জি. মাহমুদ ও এস. এম. মোতাহারুল জানানকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

বিএসইসির তদন্ত কার্যক্রম

২০২১ সালের ১৯ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত সময়ে যোগসাজশ করে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ২৩.৯২ শতাংশ, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ২৫.২৮ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ৩৪.৬৫ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ৩৭.৩৫ শতাংশ ও রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ১৪.৭৪ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করতে স্বল্প সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ায় কারসাজি চক্র। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির তদন্তে দীর্ঘদিন পর অবশেষে তা প্রমাণিত হয়েছে।

বিএসইসির সিদ্ধান্ত
কমিশন জানায়, অভিযুক্তরা ২০২১ সালের ১৯ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত সময়ে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ও রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে কারসাজি করে অভিযুক্তরা ইচ্ছাকৃতভাবে একটি কৃত্রিম বাজার সৃষ্টি করে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন। উপস্থাপিত অভিযোগসমূহ সঠিক ও ইচ্ছাকৃত এবং এ কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা পুঁজিবাজার উন্নয়নের পরিপন্থি। তাই অভিযুক্তদের ব্যাখ্যা কমিশনের নিকট গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি। আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জরিমানা ধার্য করা হয়।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালচে হয়ে যাচ্ছে মোগল আমলের লালকেল্লা
  • সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
  • কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মেয়র শাহাদাত
  • ৫ কোম্পানির শেয়ার কারসাজি: ৩ জনকে দেড় কোটি টাকা অর্থদণ্ড