জুয়া খেলায় হার-জিত নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বৃদ্ধকে হত্যা
Published: 2nd, September 2025 GMT
গভীর রাতে জুয়া (তাস) খেলায় ৪০০ টাকা করে বাজি ধরে মোট ৮০০ টাকা জুয়ার বোর্ডে রেখেছিলেন এক বৃদ্ধ ও এক তরুণ। একপর্যায়ে খেলায় জিতে বাজির টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন আরমান হোসেন (২৬) নামের এক তরুণ। এতে রেগে গিয়ে সঙ্গে থাকা সুপারি কাটার চাকু দিয়ে আরমানের পিঠে আঘাত করেন বৃদ্ধ রফিকুল ইসলাম (৭০)। এতে আরমান ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর হাত থেকে চাকু কেড়ে নিয়ে রফিকুলের গলায় আঘাত করেন। এরপর তাঁকে হত্যার পর পালিয়ে যান আরমান।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের টুনিরহাট বাজার–সংলগ্ন একটি খড়ি (লাকড়ি) রাখার ঘরে গত ৪ আগস্ট দিবাগত রাতে এভাবেই খুন হন রফিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরমান হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর বরাতে এসব কথা বলেন পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এর আগে ৫ আগস্ট সকালে টুনিরহাট বাজার–সংলগ্ন ওই ঘরের মেঝে থেকে বৃদ্ধ রফিকুল ইসলামের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। নিহত রফিকুল প্রায় ২০ বছর ধরে টুনিরহাট বাজারে টুনিরহাট-কালিয়াগঞ্জ সড়কের পাশে একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীর খড়ি রাখার ঘরে একা একা থাকতেন। বাজারের ব্যবসায়ীসহ অন্যদের ছোটখাটো কাজ করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা পাশের চাকলাহাট ইউনিয়নের কহরুহাট এলাকায় বসবাস করেন।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, ঘটনার দিন রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। তাস খেলার শেষ দিকে নিহত রফিকুল একটা ভুল করেন। এতে আরমান বাজি জিতে টাকা নিয়ে চলে যেতে চান। তখন রফিকুল খেলা শেষ হয়নি বলতে থাকেন। একপর্যায়ে রফিকুল রেগে গিয়ে তাঁর সঙ্গে থাকা সুপারি কাটার চাকু দিয়ে আরমানের পিঠে আঘাত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর কাছ থেকে চাকু কেড়ে নিয়ে রফিকুলকে গলা কেটে হত্যা করেন আরমান।
পুলিশ সুপার বলেন, রফিকুলের লাশ উদ্ধারের দিন তাঁর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেছিলেন। এরপর পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। সর্বশেষ গতকাল সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত আরমানকে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাহেব বাজার এলাকায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরমান সদর উপজেলার টুনিরহাট প্রধানপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
আদালত পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যায় আরমান হোসেনকে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম শফিকুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার
গাজীপুরে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। প্রায়ই রাতে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে ডাকাতের কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এসকল ডাকাত সদস্যদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত এক মাসে কালিয়াকৈর থানা ও মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি অভিযান চালিয়ে ২০ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। একইসঙ্গে ছয়টি পিকআপও জব্দ করেছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সুমন হোসেন ও সোহাগ নামে দুজন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি। এসময় তাদের দখলে থাকা একটি পিকআপ জব্দ করা হয়। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের ডাকাতি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরআগে, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের তিন গ্রেপ্তার করা হয়। উপজেলার মৌচাক ফকিরবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকমাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। বিশেষ করে কালিয়াকৈর-মাওনা আঞ্চলিক সড়ক ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে তাদের উৎপাত বেশি।
সড়কে পুলিশ টহল থাকলেও ডাকাত সদস্যরা বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকে এরপর সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে। এছাড়াও মাওনা কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি করে তারা। পুলিশ এরপর থেকেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে।
মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আব্দুস সেলিম বলেন, “ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। তবে আমরা ডাকাতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। গত ১ মাসে আমাদের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ১৫ জন ডাকাত সদস্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পাঁচটি পিকআপ জব্দ করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান বলেন, “রাতে আমাদের টহল পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা গত এক মাসে ২০ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন তথ্য মিলেছে। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
ঢাকা/রেজাউল/এস